তান্ত্রিকসাধনা ও তন্ত্রকাহিনী - তারাপ্রণব ব্রহ্মচারী Pdf - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Sunday, December 3, 2023

তান্ত্রিকসাধনা ও তন্ত্রকাহিনী - তারাপ্রণব ব্রহ্মচারী Pdf


 তান্ত্রিকসাধনা ও তন্ত্রকাহিনী - তারাপ্রণব ব্রহ্মচারী, বাংলা বই Pdf
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'তান্ত্রিকসাধনা ও তন্ত্রকাহিনী'
লেখক- তারাপ্রণব ব্রহ্মচারী
বইয়ের ধরন- তন্ত্র-মন্ত্র
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২০৮
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১২এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত, 

তান্ত্রিকসাধনা ও তন্ত্রকাহিনী - তারাপ্রণব ব্রহ্মচারী


ভূমিকা-

সর্বে চ পশবঃ সন্তি তলবদ্ ভূতলে নরাঃ ।
তেষাং জ্ঞান-প্রকাশায়ঃ বীরভাবঃ প্রকাশিতঃ ।
বীরভাবং সদা প্রাপ্য ক্রমেণ দেবতা ভবেৎ ।

আকাশের অন্ধকার নেমেছে মাটির বুক জুড়ে। সেই অন্ধকারে চলছে তাণ্ডব নৃত্য। হিংস্র পশুদের উন্মত্ত-উল্লাসের রাজ্যে। শুরু হয়েছে হানাহানির যন্ত্রণা ৷ কি বীভৎস মূর্তি প্রত্যেক পশুর ।
আরো ঘন অন্ধকার-কালোর দু'টি হাত এগিয়ে আসছে। রক্তজবার আভা দশ আঙুলের পর্বে পর্বে । ভয়ঙ্কর পশুরা অদৃশ্য হয়ে গেল নিমেষে। পশুরাজ্য
শান্ত ।
তিনদিক থেকে তিনটি আলোর রশ্মিরেখা ফুটে উঠল অন্ধকারে। শুচিশুভ্র সুন্দর আলো। এক একটি আলোর শরীরে পরিপূর্ণ রূপ পেল এক একটি রশ্মিরেখা। আলোর তিনটি মানুষ হাসছে ।
মধ্যিখানের মানুষটি বলছে, ননের অন্ধকার রাজ্য প্রবৃত্তির ছায়ায় ঢাকা সেখানে পশুর উৎপাত দিনেরাতে। বাইরের হিংস্র পশু ভেতরেই তো বাসা বেঁধে রয়েছে। নিধনযজ্ঞে বাইরের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়, কিন্তু ভেতরের হাত থেকে উদ্ধার পেতে গেলে দস্তুর মতন শক্তির প্রয়োজন । সংযত শক্তি। বিবেকযুক্ত শক্তি। শক্তি লাভ করতে না পারলে সর্বনাশা কাম-ক্রোধ- লোভের প্রবল পশুপ্রভাব থেকে মুক্তি নেই ।
ডানপাশের আলোর মানুষ বলে উঠল, আছে। সংবুদ্ধি সহায় হলে। বাঁদিক থেকেও ভেসে এলো কথা, সমস্ত কিছু পরাজয় করার বীরভাব মনে জেগে উঠলে, নিশ্চিত অসাধ্য সাধন হবে । তখন বীরভাবের মনই দেবভাবের সিঁড়ির ধাপে পা কেলে ফেলে নির্দ্বিধায় উঠতে থাকবে ওপরে। ওপরে, আরো ওপরে।
কে এরা এই তিনটি আলোর মানুষ ?
প্রথমটি বিবেক, দ্বিতীয়টি সংবুদ্ধি, তৃতীয়টি দেবভাবে ভাবিত মন। পশুভাবের, ভূতগ্রস্ত মানুষের এরাই মুক্তির প্রধান সম্বল। এরাই মানুষের ভেতরে অন্ধকার-রাজ্যে আলো । দেবীর ‘বালার্কমণ্ডলাকারলোচনত্রিতয়ান্বিতাং —ভিনয়ন—উদয় সূর্যের স্নিগ্ধ উজ্জ্বল প্রভা। আর অন্ধকারে এগিয়ে আসা—মহামেঘপ্রভাং শ্যামাং— শ্যামা মায়ের পশুভাব বিনাশের দু'টি হাত-বর-অভয় ৷
পূজনীয়া শ্রদেবী মাতা আর শ্রীশক্তি মাতার কাছে তন্ত্রের এই ব্যাখ্যা শুনে তন্ত্র সম্বন্ধে জানার কৌতূহল আমার বেড়ে ওঠে। মাতৃকাশ্রম-প্রণবসংঘের ( কালীঘাট) প্রতিষ্ঠাতা পূজনীয় যোগিশ্রেষ্ঠ শ্রীমৎ স্বামী প্রণবানন্দ পিতাজী মহারাজের মুখে শুনলুম, তনু-মন নিয়েই তন্ত্র । তনু-মনের সাধনা । শরীরকে নীরোগ-সুস্থ করে তোলা । মনকে শুদ্ধ সতেজ করে ।
ব্যক্তির শরীর মন তৈরী হলে, সমাজ-জাতির শরীর-মনও বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে। নিজে সম্পূর্ণ তৈরী হয়ে গেলে, মানুষ নিজের মধ্যেই বিশ্বমনের অনুভূতি অনুভব করে। নিজের মনে সব মনের সুর বেজে ওঠে। নিজের মনের সুরে অন্য মনের বেসুরো তারকে বেঁধে নেয়া যায় অনায়াসে ।
এখানে সমাজের নিম্নস্তর-উন্নতস্তরে ভেদাভেদ নিশ্চিহ্ন। সকলেই এক জাত ৷ এক মন এক প্রাণ এক ধর্মের। তন্ত্র সকল ধর্মকে বুকে টেনে নিয়েছে । ‘পঞ্চায়তন চক্রে’ পুজো তারই প্রমাণ। সৌর, গাণপত্য, শৈব, বৈষ্ণব, শাক্ত- পাচটি প্রধান ধর্মসম্প্রদায়ের দেবত। — সূর্য-গণেশ-শিব-বিষ্ণু আর শক্তির এক সঙ্গে পুজো ।
তন্ত্র মানুষের পরমায়ু বৃদ্ধির পথ দেখিয়েছে নিখুঁতভাবে। দেখিয়েছে বার্দ্ধক্যরোধের— স্থায়ী যৌবন রক্ষার । যোগসাধনার অপূর্ব পরিচয় । কি ন! আছে এই রত্নসমুদ্রে ? ব্যাধিলক্ষণ উপশমের ওষুধ দ্রব্যগুণ রসায়নের ব্যাপার— সব কিছু । জ্যোতিষও বাদ নেই। মানুষের নানা ইচ্ছাশক্তির প্রভাব অন্য মনের ইচ্ছাশক্তিকে কি ভাবে ঘোরাতে ফেরাতে পারে—অদ্ভুত প্রত্যক্ষ প্রক্রিয়: দেখলে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যেতে হয় ।
পরিত্যক্তজনকে সমাজে সম্মানের আসনে বসিয়ে তন্ত্র একটি সুসমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছে । এখানে উচ্ছৃঙ্খল পুরুষ আর বাববিলাসিনী নারী বলে কোন কথা নেই । এরা দেবতার অংশ। এদের সংশোধন করে দেবভাবে গড়ে তুলতে কি না চেষ্টা।
ভারতের উত্তর-পূর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম— প্রত্যেক কেন্দ্রভূমিতে তন্ত্রসাধনার সুবর্ণসুযোগ এসেছিল এক সময় । সেই সুযোগের পর বেশীর ভাগ লোক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ক্রিয়াকলাপের অপব্যবহারে মেতে উঠেছিল। এতে বিপদ ঘটত অনেক ক্ষেত্রে। নিজের যেমন, অন্যের পক্ষেও তেমন ।
সদগুরু-যোগী অর্থাৎ তন্ত্রসাধনায় যাঁরা সিদ্ধ পুরুষ, তাঁরা অসং-মনোবৃত্তির লোকের হাত থেকে তন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য সাধনায় সাংকেতিক ভাষা (মন্ত্র ) প্রতীক চিহ্ন (যন্ত্র—রেখাচিত্র ) ব্যবহার আরম্ভ করে দিলেন।
বৌদ্ধতন্ত্র নিয়ে তন্ত্রের বই প্রায় হাজার তিনেক। কিন্তু এসব বইয়ের অনেক আবার পাওয়া যায় না । যা পাওয়া যায়, পড়ে, সাধনা বা তন্ত্রশাস্ত্রের প্রকৃত অর্থবোধ দুঃসাধ্য, যতক্ষণ না সদগুরু-যোগী সাংকেতিকী আর প্রতীকী ব্যবহারের মর্ম বুঝিয়ে দেন । এই কারণে তন্ত্র এখানে সাধারণের কাছে সত্যিই এক দুজ্ঞেয় রহস্য।
এই রহস্যের আবরণ বহু। প্রতিটি আবরণ উন্মোচন করা দুরূহ ব্যাপার । পূজনীয় শ্রীমৎ স্বামী সচ্চিদানন্দ পরমহংসজী ও যোগিশ্রেষ্ঠ শ্রীমৎ স্বামী প্রণবানন্দ পিতাজী মহারাজের সান্নিধ্যে আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্য হয়েছে আমার ।
এঁরা সাধনপদ্ধতি সস্নেহে শিখিয়েছেন। দেশবিদেশে পরিব্রাজক সন্ন্যাসী হিসেবে ঘুরতেও হয়েছে আমায় । অনেক প্রত্যক্ষ ফলপ্রদ প্রক্রিয়া আর ঘটনার আবার সাক্ষী হয়েও আছি।
সর্বসাধারণের চোখে তন্ত্র যাতে সহজসাধ্য হয়ে ওঠে, আমি সেই ভাবে সাংকেতিক-প্রতীকের রহস্য ভেদ করে প্রকৃত ব্যাপার জানিয়েছি আমার সুধী পাঠক-পাঠিকাদের ।
তন্ত্রকে, তার ক্রিয়াকলাপকে পাঠক-পাঠিকারা দেখেছেন — ভীষণ নয়, অতি সুন্দর । ধাপে ধাপে মানুষের ইষ্ট করার নিদর্শন। মানুষ হয়ে উঠুক মঙ্গলময় আনন্দময় ৷ শান্তির রাজ্য গড়ে তুলুক বিশ্বে—সকলে এক পরিবার হিসেবে ।
তাই অহিত ক্রিয়াকলাপের রোমহর্ষক দিকটাও তুলে ধরতে দ্বিধা করিনি আমি। যাতে ভুলেও সে-পথে পা না বাড়ায় কেউ । এই ক্রিয়ায় খারাপের চেয়ে মানুষের কতখানি যে ভালো করা যায়—দুটোই পাশাপাশি দেখিয়েছি । উদ্দেশ্য—সুন্দর চির সুন্দর হয়ে উঠুক, হয়ে উঠুক মৃত্যুহীন মৃতসঞ্জীবনী। অশুভ যা কিছু— মৃত্যুর অতলে তলিয়ে যাক ।
যখন আশ্রমের সুধীর চৌধুরী-র উৎসাহে ও বিকাশ বসু-র তত্ত্বাবধানে উল্টোরথে আমার ‘তন্ত্রকাহিনী' লেখা চলছে, তখন আগ্রহী পাঠক-পাঠিকারাই সে চলার গতি ব্যাহত করতে দেন নি। তাঁদের অসংখ্য অভিনন্দনপত্র দেখা- সাক্ষাৎ কৌতূহল আমাকে আরো লেখার প্রেরণা যুগিয়েছে। মাসের পর মাস বছরের পর বছর লিখে গেছি আমি । আমার পাঠক-পাঠিকাদের আন্তরিক প্রেরণার অমৃতফল সেই তন্ত্রকাহিনীই ‘তান্ত্রিক সাধনা ও তন্ত্রকাহিনী' নামে প্রকাশিত ৷
বইটি দ্রুত প্রকাশের ব্যাপারে দে'জ পাবলিশিংয়ের কর্ণধার শ্রীসুধাংশুশেখর দে ও অন্যান্য কর্মীবৃন্দ যে যত্ন- পরিশ্রম করেছেন, সেজন্য তাঁদের সবাইকে এবং যাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে নানাভাবে সহায়তা করেছেন, তাঁদেরও জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ।- মাতৃকাশ্রম প্রণবসংঘ

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে একটি তন্ত্র সাধনার বই- 'তান্ত্রিকসাধনা ও তন্ত্রকাহিনী - তারাপ্রণব ব্রহ্মচারী'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

* বইটির পিডিএফ পড়ার পর আপনার পছন্দ হলে অবশ্যই আমাজন থেকে হার্ডকভার সংগ্রহ করতে পারেন >এই লিঙ্কটি অনুসরণ করুন

**তারাপ্রণব বাবুর লেখা আরো বই সংগ্রহ করুন-
>আজও যা ঘটে
>তন্ত্রতপস্যা

 

No comments:

Post a Comment