রবীন্দ্রনাথের হাস্য-পরিহাস - গোপালচন্দ্র রায়, মজাদার গল্পের বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'রবীন্দ্রনাথের হাস্য-পরিহাস'
লেখক- গোপালচন্দ্র রায়
বইয়ের ধরন- মজাদার বৈঠকী গল্পের বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১১২
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৫এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ শ্রীপ্রতিমা ঠাকুর তাঁর 'নির্বাণ' গ্রন্থে লিখেছেন— ‘বাবামশায় সকলের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করতে খুব ভালোবাসতেন । মেয়ে, বউ, পরিবারবর্গের সকলের সঙ্গে, এমন কি নীলমণি ভৃত্যের সঙ্গেও হাস্য-পরিহাসে তাঁর ছিল সহজ আনন্দ ।'
নীলমণি শব্দের পাদটীকায় প্রতিমা দেবী লিখেছেন—'কবির ভৃত্য : রহস্যচ্ছলে কবি ডাকতেন নীলমণি বা লীলমণি, প্রকৃত নাম বনমালী ।”
এই বনমালীর সঙ্গে হাসি-ঠাট্টার কথা উল্লেখ করে কবি তাঁর ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী'তে নিজেই এক জায়গায় বলেছেন – 'বনমালী নামধারী উৎকলবাসী সেবক বৌমার আদেশক্রমে এসেছে। ...ওর একটা মস্ত গুণ এই যে, ও ঠাট্টা করলে বুঝতে পারে, ঠিক সময়ে হাসতে জানে । ....আমার আবার স্বভাব এমন যে ঠাট্টা না করলে বাঁচিনে।'
কবির সঙ্গে যারা মিশেছেন, তাঁরাই কবির এই স্বভাবের পরিচয় পেয়েছেন । তাঁর হাসিঠাট্টা বা পরিহাস-রসিকতাগুলি কিরূপ মার্জিত, সুরুচিসম্পন্ন, সূক্ষ্ম ও উচ্চাঙ্গের ছিল, একথাও তাঁরা জানেন ।
কবির এই কৌতুক-পরিহাসগুলিও তাঁর অনন্যসাধারণ প্রতিভার স্পর্শে প্রদীপ্ত হয়ে উঠত।
সাধারণ কথোপকথনের মধ্যেও কবি হাস্য-পরিহাসের সৃষ্টি করতেন । শ্রীসীতা দেবী তাঁর 'পুণ্যস্মৃতি' গ্রন্থে তাই বলেছেন--'সাধারণ কথাবার্তার ভিতর রঙ ও রস ছড়াইবার ক্ষমতা যতখানি ছিল, এমন কখনও কাহারও মধ্যে দেখি নাই ।... কথা যেন আলোক-স্ফুলিঙ্গের মত ঠিকরাইয়া পড়িত। রবীন্দ্রনাথ নিজে গম্ভীরভাবে বলিয়া যাইতেন, শ্রোতারা হাসিয়া আকুল হইত ৷'
সাধারণ কথাবার্তার মধ্যে কবি যেসব পরিহাস-রসিকতা করতেন, তার কিছু কিছু কেউ কেউ কোথাও কোথাও লিখেছেন । যেমন— মৈত্রেয়ী দেবী তাঁর ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ' গ্রন্থে, রাণী চন্দ তাঁর 'আলাপচারী রবীন্দ্রনাথ' গ্রন্থে, নন্দগোপাল সেনগুপ্ত তাঁর 'কাছের মানুষ রবীন্দ্রনাথ' গ্রন্থে, প্রমথ নাথ বিশি তাঁর 'রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন' গ্রন্থে, ডাঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর 'দ্বীপময় ভারত' গ্রন্থে, সুধীরচন্দ্র কর তাঁর 'কবি-কথা'য় সীতাদেবী তাঁর ‘পুণ্যস্মৃতি'তে এবং আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন, পণ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী, সুধাকান্ত রায়চৌধুরী প্রভৃতি তাঁদের কোন কোন প্রবন্ধে। এছাড়া কবির অসংখ্য হাস্য-পরিহাস তাঁর শ্রোতাদের মুখে মুখে এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে ।
আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন, প্রবোধচন্দ্র সেন, ডাঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ কালিদাস নাগ, কবিশেখর কালিদাস রায়, কবি রাধারাণী দেবী, কবি বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়, পরিমল গোস্বামী, প্রভাতকুমার গঙ্গোপাধ্যায়, বনফুল, বনফুলের কনিষ্ঠভ্রাতা অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় প্রভৃতির কাছে কবির অনেক হাস্য-পরিহাস লেখক শুনেছেন।
বিভিন্ন গ্রন্থ ও সাময়িকপত্র থেকে এবং কবির এইসব শ্রোতাদের মুখ থেকে তাঁর এই অতুলনীয় হাস্য-পরিহাসগুলি লেখক সংগ্রহ করেছেন। এই হাস-পরিহাস গুলি থেকে মানুষ রবীন্দ্রনাথের একটি দিকের পরিচয় পাওয়া যায়।
বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন——কবির কবিত্ব বুঝিয়া লাভ আছে সন্দেহ নাই ৷ কিন্তু কবিত্ব অপেক্ষা কবিকে বুঝিতে পারিলে আরও অধিক লাভ ।'
তাই রবীন্দ্রনাথের কাব্য আস্বাদন করে আমরা যেমন আনন্দ পাই, তেমনি আরও অধিক আনন্দ লাভের জন্য তাঁর ঘটনাবহুল বৈচিত্র্যময় জীবনের একটি একটি অধ্যায়ও আমরা বিশেষভাবে বুঝবার চেষ্টা করব ।
কবির অপূর্ব কৌতুক-পরিহাসপ্রিয়তাও তাঁর ব্যক্তি জীবনের একটি দিক। তাঁর ব্যক্তি জীবনের এই দিকটার পরিচয় না পেলে তিনি আমাদের কাছে অনেকখানি অজ্ঞাত থেকে যাবে। পণ্ডিত বিধুশেখর শাস্ত্রী ১৩৫০ সালের শ্রাবণ সংখ্যা প্রবাসীতে ‘রবীন্দ্র সংলাপ কণিকা' নামক প্রবন্ধে ঠিকই বলেছেন—‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের বিপুল রচনা পড়িয়া তাঁহাকে অনেক জানা যায়, কিন্তু সম্পূর্ণ জানা যায় না । যিনি তাঁহার সহিত আলাপ - সালাপের সৌভাগ্য ও সুযোগ লাভ না করিয়াছেন, তাঁহার অনেকই অজানা থাকিয়া গিয়াছে ৷ তিনি যে কত কৌতুক-প্রিয় ও সুরসিক ছিলেন, তাহ৷ তিনি জানিতে পারেন না। বৈষ্ণব সাহিত্যের ভাষায় বল৷ যাইতে পারে, তিনি ছিলেন ‘রসিকেন্দ্রচূড়ামণি।' তাঁহার এক পঙক্তি মাত্রও লেখার মধ্যে যেমন কবিত্ব দেখা যায়, তেমনি তাঁহার এক একটি কথাতেও রস নিস্যন্দ ফুটিয়া উঠিত। শ্রোতারা তাহা পান করিয়া মুগ্ধ হইতেন । তাই কবিকে সম্যকভাবে বুঝতে হ'লে তিনি যে কিরূপ পরিহাসপ্রিয় মানুষ ছিলেন, এ কথাও আমাদের জানার প্রয়োজন আছে ।
এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা একটি মজাদার বৈঠকী গল্পের বই 'রবীন্দ্রনাথের হাস্য-পরিহাস - গোপালচন্দ্র রায়' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন
No comments:
Post a Comment