জাতকের গল্প - কবিশেখর কালিদাস রায় পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Wednesday, October 26, 2022

জাতকের গল্প - কবিশেখর কালিদাস রায় পিডিএফ


 জাতকের গল্প - কবিশেখর কালিদাস রায়, উপদেশমুলক গল্পের বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'জাতকের গল্প'
অনুবাদক - কবিশেখর কালিদাস রায়
বইয়ের ধরন- ছোটদের উপদেশমুলক গল্পের বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১০৮
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৪এমবি
অরিজিনাল আপলোডার- বিদ্যা নস্কর
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত, ক্লিকেবল সূচীপত্র

জাতকের গল্প - কবিশেখর কালিদাস রায়

আড়াই হাজার বৎসর আগে বুদ্ধদেব জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এ দেশে নূতন ধর্মপ্রচার করিয়াছিলেন। নূতন ধর্ম প্রচার করিতে হইলেই নূতন নূতন তত্ত্বকথা বলিতে হয়। তিনি যে সকল তত্ত্বকথা বলিয়াছিলেন, তাহা সাধারণ লোকে বুঝিতে পারে নাই। বোদ্ধ সন্ন্যাসী অর্থাৎ শ্ৰমণ ও ভিক্ষুরা গৃহস্থদের ও শ্রাবকদের বাড়ি বাড়ি গিয়া সে তত্ত্বকথা ব্যাখ্যা করিয়া আসিতেন। কিন্তু তাহাই তো যথেষ্ট হইল না। সর্বদেশ, সর্বকাল ও সব শ্রেণীর লোককে তো বুঝানো চাই। বুদ্ধের ভক্তেরা সেই সকল তত্ত্বকথা সহজ সরল ভাষায় লিখিতে আরম্ভ করিলেন।
বেদ-বেদান্তের কথা, উপনিষদের কথাও দেশের সাধারণ লোক বুঝিত না। আর্য ঋষিরা সাধারণ লোককে বুঝাইবার জন্য গল্পের সৃষ্টি করিয়াছিলেন—সেই গপ্পগুলিই, পুরাণ নামে চলিতেছে। কোনো কঠিন জিনিস সাধারণ লোককে বুঝাইতে হইলেই গল্পচ্ছলে বলিতে হয়। বুদ্ধের ভক্তরাও বুদ্ধের সার কথাগুলি সাধারণ লোককে বুঝাইবার জন্য গল্পের সৃষ্টি করিলেন। এই গল্পগুলির নামই জাতকের গল্প। জাতকের গল্পগুলিই বৌদ্ধ পুরাণ ।
এই গল্পগুলি একই সময়ে একই লোকে রচনা করেন নাই। বহু বৎসর ধরিয়া এই গল্পগুলি রচিত হইয়াছে। এই গল্পগুলি পালি ভাষাতে রচিত। পল্লীর লোকে সে ভাষা বুঝিত, তাই পল্লীভাষাই পালি ভাষা। সে ভাষার রূপ বদল হইয়া এখন বাংলা, হিন্দী, অসমীয়া ইত্যাদি ভাষা হইয়াছে। এখনকার লোকে পালি ভাষা বুঝে না। সেজন্য জাতকের গল্পগুলির পরিচয় এদেশের লোক অনেক দিন পর্যন্ত পায় নাই। জাতকের গল্পগুলির ইংরাজীতে তর্জমা হইয়াছিল। তাহা হইতে শিক্ষাব্রতী ঈশানচন্দ্র ঘোষ মহাশয় বাংলায় অনুবাদ করিয়াছিলেন।

অনেকে বলে, এ দেশের লোক গল্প লিখিতে পারে, কিন্তু গল্পের বিষয়বস্তু অর্থাৎ কাঠাম আবিষ্কার করিতে পারে না। আমাদের প্রাচীন বাংলা সাহিত্য পড়িলে তাহা মনে হয় বটে। পাঁচ শত বৎসর ধরিয়া বাঙ্গালী কবিরা একই শ্ৰীমন্ত সদাগর, চাঁদ সদাগর ও বিদ্যাসুন্দরের গল্পকেই ঘুরাইয়া ফিরাইয়া লিখিয়াছেন। কিন্তু জাতককথা পড়িলে মনে হয়-একদিন এদেশের লোক যেমন অজস্র গল্প লিখিতে পারিত, তেমনি অজস্র গল্পের প্লটও আবিষ্কার করিতে পারিত। জাতকের সব গল্পের প্লট অবশ্য তাহারা আবিষ্কার করে নাই। রামায়ণ, মহাভারত ও দেশবিদেশে প্রচলিত অনেক গল্পের বিষয়বস্তুও তাহারা লইয়াছিল; কিন্তু আবিষ্কারই করিয়াছিল অনেক বেশি। রামায়ণ-মহাভারতের গল্প ও চলিত গল্পগুলিকেও তাহার ভাঙ্গিয়া চুরিয়া নূতন ছাঁচে ঢালিয়া লইয়াছিল। হিন্দু, আদর্শের তথ্যগুলিকে বৌদ্ধ আদর্শে পরিবর্তন করিয়াও লইয়াছিল। তাহাদের এই অজস্র গল্প-আবিষ্কারের শক্তি লক্ষ্য করিলে অবাক হইতে হয়। জাতককথা-গল্পের অফুরন্ত ভান্ডার। জানি না, কতগুলি লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। যাহা পাওয়া গিয়াছে, তাহার সংখ্যাও অনেক বেশি।
আমাদের দেশের রামায়ণ, মহাভারত ও অন্যান্য পুরাণের পরই গল্প হিসাবে এই জাতককথার ঠাঁই।

জাতককথাগুলি বুদ্ধদেবের মুখের কথা নহে—বুদ্ধদেবের মুখে কথাগুলিকে বসানো হইয়াছে। বুদ্ধদেবের বাণীর সহিত গাঢ় সম্বন্ধ রাখিয়া এইগুলিকে লেখা হইয়াছে। বুদ্ধদেবেরই জীবনের সঙ্গে এইগুলির যোগ আছে, একথা না বলিলে লোকের শ্রদ্ধা হইবে কেন? লোকে গল্পের ভিতরকার সারমর্ম সন্ধান করিবার ক্লেশ স্বীকারই বা করিবে কেন? গল্পগুলির মহিমা বা মর্যাদাই বা স্বীকার করিবে কেন? সাদরে রক্ষা ও প্রচারই বা করিবে কেন? গল্পের ভিতরকার উপদেশগুলি অবশ্য বুদ্ধদেবেরই বটে!
প্রত্যেক গল্পের গোড়ায় আছে—ব্ৰহ্মদত্ত যখন বারাণসীর রাজা, তখন বুদ্ধদেব অমুক হইয়া জন্মগ্রহণ করেন। এক ব্ৰহ্মদত্তের রাজত্বকালে বুদ্ধদেব বহুবার জন্মাইতে পারেন না। ওটা গল্পের ধরতা মাত্র। বৌদ্ধধর্মের প্রধান কথা এই—জীব বহুবার ইতর প্রাণী হইয়া জন্মায়, তারপর ক্রমে মানুষ হইয়া জন্মায়—তারপর সৎকর্ম করিলে ক্রমে সে সৎলোকের ঘরে জন্মায়, এমনি করিয়া জন্মে জন্মে তাহার উন্নতি হয়। শেষে অনেক জন্মের সৎকর্মের ফলে এবং কামনাজয়ের ফলে সে মহাপুরুষ হইয়া জন্মায়। মহাপুরুয় হইয়া সে সারাজীবন সৎকর্ম করে, সাধনা করে, জীবের কল্যাণ সাধন করে—তপস্যা করিয়া একেবারে নিষ্কাম হইয়া যায়, তখন সে হয় বোধিসত্ত্ব।
বুদ্ধদেব বলিয়াছেন—আমিও একজন্মে বোধিসত্ত্ব হই নাই। ইতর প্রাণী হইতে আরম্ভ করিয়া বহু জন্ম পার হইয়া বহু সৎকর্ম করিয়া তবে এজন্মে বোধিসত্ত্বা হইয়াছি। জাতকের গল্পগুলি বোধিসত্ত্বের সেই জন্মগুলির কাল্পনিক উপাখ্যান। এক এক জন্মে তিনি এক একটি সৎকর্ম করিয়াছেন। তাঁহার ঐ সৎকর্মকে আশ্রয় করিয়া এক একটা গল্প রচিত হইয়াছে। তিনি যে সকল সৎকর্ম করিবার জন্য উপদেশ দিয়াছেন, সেই সকল সৎকর্মের মাহাত্ম্য বুঝাইবার জন্য ঘটনাগুলির কল্পনা করা হইয়াছে।
অতএব দেখা যাইতেছে—জন্মে জন্মে সৎকর্ম করিয়া কেমন করিয়া মুক্তির পথে আগাইতে হয়, বুদ্ধদেবের দোহাই দিয়া সেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য গল্পগুলি রচিত হইয়াছে। যে জন্ম লাভ করে, সে-ই জাতক। বুদ্ধদেবকে বলা হয় মহাজাতক। মহাজাতকের জন্মজন্মান্তরের কথা বলিয়া এইগুলির নাম জাতককথা।
বুদ্ধদেবের উপদেশের সারকথা-প্রচার মূল উদ্দেশ্য হইলেও এগুলি গল্পাংশে নিকৃষ্ট নহে। বেশির ভাগ গল্পে গল্পটাই প্রধান হইয়াছে উপদেশটি গৌণ হইয়া পড়িয়াছে। অনেক গল্পে আবার কোন বিশিষ্ট উপদেশ নাই, কেবল দেখানো হইয়াছে বুদ্ধদেবের কোন একটা জন্মের সহিত ইহার যোগ মাত্র আছে। যাঁহারা খাঁটি কথাশিল্পী, তাঁহারা গল্পের কৌশলের উপরেই জোর দিয়াছেন, একবার শুধু বুদ্ধদেবের নাম করিয়াছেন।
সাহিত্য হিসাবে এইগুলির যথেষ্ট মূল্য আছে। সাহিত্যরস ছাড়া এইগুলি হইতে প্রাচীন ভারতের সামাজিক, পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় ও ধর্মজীবনের বহু তথ্য জানা যায় এবং ভারতের উচ্চ নৈতিক আদর্শ এইগুলির প্রধান উপজীব্য। - কালিদাস রায়

এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা একটি কিশোর উপযোগী উপদেশমুলক গল্প সংগ্রহ বই 'জাতকের গল্প - কবিশেখর কালিদাস রায়' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন

No comments:

Post a Comment