গল্প সংগ্রহ - জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, বাংলা ছোটগল্প সংগ্রহ পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'গল্প সংগ্রহ'
লেখক- জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী
বইয়ের ধরন- ছোটগল্প সংগ্রহ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৩৩৫
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১২এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত,
নির্জনতা জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর বরাবরই প্রিয় ছিল, আবাল্য নিঃসঙ্গ এই শিল্পী অন্তর্মগ্নতায় আবিষ্ট হয়ে দিনরাত্রি চুপ করে বসে-বসে ভাবতে ভালোবাসতেন। শখ ও শৌখিনত বলতে তাঁর প্রায় কিছুই ছিল না। পঞ্চাশ বছর ধরে লিখেছেন কিন্তু কোনো গোষ্ঠীতে তিনি কখনও সংযুক্ত হন নি। তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা সত্তরের ওপর কিন্তু চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে মাত্র একখানি। তাঁর সৃষ্টিকর্ম বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে অথচ আজ পর্যন্ত কোনো বাণিজ্যিক মঞ্চে স্থান পায়নি তাঁর কোন উপন্যাস বা গল্প। কলকাতার সব কয়টি প্রতিষ্ঠিত পত্রপত্রিকায় প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে লিখলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র একবারের বেশি পুরস্কৃত হন নি। তাঁর সাহিত্যের অবয়বে আদ্যন্ত জড়ানো রয়েছে প্রকৃতির আবরণ আর সেই প্রকৃতিকে পটভূমিতে রেখে নর-নারীর পারস্পরিক সম্পর্কের মূল্যায়ন করেছেন তিনি বারবার। অনেকগুলো হত্যার সঙ্গে সুন্দর ফুল ও চমৎকার পাখির সহবাস ঘটিয়ে, কখনও বা অনেকগুলো অপরিণত মৃত্যুর সঙ্গে ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষের সংগ্রামের বিশ্বস্ত দলিল রচনা করে জ্যোতিরিন্দ্র পাঠককে বিস্ময়ে অভিভূত করেন। কাচের পাত্রের মতো স্নেহ-মায়া-মমতা গুড়িয়ে দিয়ে যারা ঈপ্সিত জগৎ গড়ে তোলে, তাদের সামনে প্রতিবাদী মূর্তির মত ভালোবাসার ভেলায় ভাসতে ভাসতে অন্ধকারের অতলে তলিয়ে-যাওয়া অজস্র চরিত্র সৃজনেও তিনি ক্লান্তিহীন।
একদিকে প্রচুর হত্যা, অনেক মৃত্যু, অবিমিশ্র বীভৎসতা, অবিরত ক্রন্দন—অন্যদিকে ফুল-পাখি-সমুদ্র-জ্যোৎস্না ও বৃষ্টির সমারোহ; আদিম মানুষ ও আদিম প্রকৃতির দ্বৈত সমাবেশ।
দ্বিতীয় বিধাতা রূপে আত্মপ্রকাশের আগে নিতান্ত শৈশব থেকে কৈশোরের স্বপ্নরঙিন দিনগুলোর গণ্ডী না পেরোনো পর্যন্ত জ্যোতিরিন্দ্র প্রকৃতির রূপ-রস-সুধা আকণ্ঠ পান করতেন সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে। নিতান্ত শৈশবে ধনু নামক যে-শিশুটি মেঘলা আকাশের মতো মুখভার করে ঘুরে বেড়াত, যাকে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য বা তিতাসের জলে নৌকো-বাইচের সুতীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা আকর্ষণ করত না অথচ যে আকর্ষণ বোধ করত খেজুর আর ডালপালা-ছড়ানো একটা শ্যাওড়া গাছের পিছন থেকে লাল টকটকে আকাশের দিকে তাকিয়ে সূর্যাস্ত দেখতে, তেমনই গভীর-গম্ভীর ধনু ওরফে জ্যোতিরিন্দ্রকে নিয়ে কারও কোনো আগ্রহ ছিল না।
জ্যোতিরিন্দ্র প্রকৃতিকে প্রথম জীবনে ছবিতে ধরতে চেয়েছিলেন কিন্তু সময়ের হাত ধরে যতই তিনি লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে থাকলেন ততই ধীরে ধীরে তিনি রঙ-তুলির জগৎ থেকে সরে গেলেন। কৈশোরে বাবার কাছে চমৎকার আবৃত্তি শিখেছিলেন ইংরেজি বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায়, কিন্তু পরবর্তীকালে আবৃত্তিচর্চা তাঁর মনোহরণ করেনি। এমন কি, বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রায় তিন শশা ছেলের অভিভাবকদের বিরাট সমাবেশে আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার লাভ করলেও কবিতা তাঁর শিল্পীমনে কোনো গাঢ় বা গৃঢ় ছাপ রাখে না। কবিতা পড়তে পড়তেই কবিতার রসাস্বাদনের সূত্রপাত ঘটল, কাব্যচর্চাও শুরু হল, তাঁর কবিতা পরিচিত মহলে তাকে কবি হিসেবে কিঞ্চিৎ স্বীকৃতিও দিল এবং জনৈক স্কুল শিক্ষকের সস্নেহ পৃষ্ঠপোষণাও তাঁর ভাগ্যে জুটেছিল। সেই শিক্ষক স্নেহার্থী ছাত্রকে অনেক কবিতা লিখতে দেখেছেন কিন্তু তাঁর অনুপ্রেরণা জ্যোতিরিন্দ্রকে কবিতা থেকে ছুটি নিতে আটকাতে পারেনি। ‘এই তাঁর পুরস্কার’ উপন্যাসে কবি ও কবিতার সপক্ষে সন্ধিহীন যুদ্ধ ঘোষণা সত্ত্বেও, স্ব-রচিত ভাষার শরীরে কবিতার স্নিগ্ধ সুষমা মাখিয়েও অদ্যাবধি প্রকাশিত তাঁর পুস্তকাবলীর তালিকায় সংযুক্ত হয়নি কোনো কাব্যগ্রন্থের নাম।
কলকাতার সুবিশাল অট্টালিকাসমূহ তার চোখে কোনো সন্ত্রম জাগায় না অথচ একটা ছোট্ট চারা কীভাবে বিশাল বৃক্ষ হয়ে ওঠে তা তাঁর ভাবনা-চেতনাকে দিনরাত্রি দখল করে থাকে। হাওড়া ব্রিজের নির্মাণশৈলী সঞ্জয় ভট্টাচার্যের সশ্রদ্ধ মনোযোগ আদায় করলেও জ্যোতিরিন্দ্র তা নিয়ে মোটেই অভিভূত হন না। তিনি তাঁর প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের মতোই প্রকৃতির বুকে বারংবার আশ্রয় পেয়ে খুশি হন। অথচ প্রকৃতি তাকে দিয়ে কখনও কবিতা লেখায় না, প্রায়ই তার গদ্যের পোশাক তৈরি করিয়ে নেয়। তিনি কখনও কারো কাছে বিশেষভাবে উৎসাহিত হন নি, প্রবীণতর বা সমকালীন কোনো সাহিত্য-সহযাত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতার কোনো ঋণ নেই তার। যখন তিনি পূর্ব বাংলার একটি প্রাচীন শিক্ষায়তন, অন্নদা উচ্চ ইংরাজি বিদ্যালয়ের ছাত্র, তখন ওই বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক সাহিত্যরসিক হরেন্দ্র ভট্টাচার্যের কাছে মেহরকালীবাড়ির মেলায় ভ্রমণ করা সম্পর্কে এমন মনোজ্ঞ একটি রচনা পরীক্ষার প্রশ্নোত্তরে উপহার দিয়েছিলেন যেটি হরেন্দ্রবাবু ক্লাসে এনে সবাইকে পড়ে
শুনিয়েছিলেন এবং উদ্ভাসিত প্রশংসা করেছিলেন। তখন থেকেই সুনিশ্চিতভাবে তাঁর সাহিত্যসাধনার সূত্রপাত ঘটল।
*এছাড়াও এই লেখকের আরো বই সংগ্রহ করুন-
> জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর নির্বাচিত গল্প
জ্যোতিরিন্দ্রর গল্পে ঘটনার ঘনঘটা নেই, নাটকীয়তার চিত্তচাঞ্চল্যকর চমক নেই। সস্তা রোম্যান্টিক প্যানপ্যানানির জোলো আবেগসর্বস্বতা কিংবা মিলনবিরহের হাসি-কান্নার উচ্চ বোল কখনও শিল্পীর মনোযোগ আকর্ষণ করেনি। তাঁর অন্তলীন চেতনা তার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মানসিকতার বিকাশ ঘটায় নিপুণ শিল্পীর মতো অত্যন্ত বিলম্বিত লয়েগল্প-উপন্যাস যতই পরিণতির দিকে এগোতে থাকে, ততই শিল্পী যেন একটার পর একটা পর্দা সরিয়ে পাঠককে একটা গভীর রহস্যের অন্তরালে নিয়ে যান। সম্ভবত সেই কারণেই তার উৎকৃষ্ট রচনা সহৃদয় পাঠকের হৃদয়ে ছবি হয়ে যায় ।
যেসকল গল্পগুলি এই সংকলনে রয়েছে-
আমার সাহিত্যজীবন
তাঁকে নিয়ে গল্প
এক ঝাঁক দেবশিশু
মহড়া
কেমন হাসি
হার
মাছি
ওয়াং ও খেলাঘরে আমরা
সুখী মানুষ
সংহার
ডলি মলি, বসন্তকাল ও টি মজুমদার
গাছ
মিষ্টি জ্বালা
বাবু
চাওয়া
নিঃশব্দ নায়ক
বন্ধুপত্নী
মঙ্গলগ্রহ
দৃষ্টি
এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা একটি ছোটগল্প সংগ্রহ বই 'গল্প সংগ্রহ - জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
No comments:
Post a Comment