প্রেমচন্দের গল্পগুচ্ছ, বাংলা বই পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Sunday, April 18, 2021

প্রেমচন্দের গল্পগুচ্ছ, বাংলা বই পিডিএফ


 প্রেমচন্দের গল্পগুচ্ছ, বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'প্রেমচন্দের গল্পগুচ্ছ'
লেখক- মুন্সী প্রেমচন্দ
অনুবাদক- প্রসূন মিত্র
বইয়ের ধরন- অনুবাদ গল্প
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২৩৮
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১৫এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো (ক্লিকেবল সূচীপত্র), জলছাপ মুক্ত

প্রেমচন্দের গল্পগুচ্ছ

সে একটা সময় ছিল, যখন হিন্দী সাহিত্য যাদুবিদ্যা, আর ভোজবাজি, আর রূপকথা আর হাজার রগড়ের গোলক ধাঁধায় ঘুরপাক খেত, বাস্তবতার মুখোমুখী দাঁড়াবার মত কলজের জোর ছিল না তার। ধুপধুনোর ধোঁয়ায় গড়া মায়াপুরীর প্রাসাদে সে আমলের রাজকুমারী নায়িকারা আদরে সোহগে মানুষ হত, তাদের আশেপাশে কেবল হীরে আর মুক্তোর ছড়াছড়ি; প্রেম আর আর বিরহে যুঁপিয়ে মরা ছাড়া ইহজগতে তাদের আর কোনো কাজ থাকত না। গহীন অরণ্যে তীরধনুক হাতে ঘুরে বেড়াত নায়ক রাজকুমার, আর রাজকন্যের প্রেমে পড়ার দরুণ তাকে অসম্ভব রকমের সব বীরত্বের কাণ্ড-কারখানা করতে হত। নায়কের স্যাঙাত আর নায়িকার সখীর দল যখন—যেমন-খুশি মায়ারূপ ধারণ করে দূর দুর্গমে অহরহ যাত্রা করত আর নায়কনায়িকার প্রেমযজ্ঞে সাহায্য করত। অবিশ্যি তার ফাঁকে ফাঁকে নিজেদের মধ্যেও অল্পবিস্তর প্রেমট্রেম করে নিত। আর থাকত বিশালদেহী কুৎসিতদর্শন শালপ্রাংশু ব্যুঢ়োরস্ক খলনায়ক। নায়িকাকে হারাবার ফিকিরে সে অবিশ্বাস্য ধরণের কুটিল জাল বিছোত, নিদারুণ মুর্খতার পরিচয় দিত, আর থেকে থেকে হায়েনার মতন অট্টহাসি হাসত। এসব কাহিনী পড়লে মনে হত পৌরাণিক উপকথা, কথাসরিৎসাগর বা আলিফ লায়লার উপাখ্যানের পাত্র-পাত্রীরাইনামধাম বদলে নেবে এসেছে আর খামোকা স্বপ্নলোকে পায়চারী করে বেড়াচ্ছে। এইসব গল্প উপন্যাস, হিন্দী সাহিত্যের পাঠককে এমন এক আজগুবী দুনিয়ার আজবললাকে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিত, যেখান থেকে পরিত্রাণ পেয়ে নিজেকে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব ব্যাপার।

এমনই সময়ে হিন্দী সাহিত্যের প্রাঙ্গণে প্রেমচন্দের আবির্ভাব ঘটল। মনে হল তমসার পর থেকে প্রথম প্রভাতের উদয় হল। চোখের সামনে থেকে কল্পনার আজগুবী কুয়াসা কেটে গিয়ে গ্রামের জীবনমুখী ছবি ভেসে উঠল। যেখানে ফসলসবজির ক্ষেতে ইঁদারায় জল তোলা হচ্ছে, কচি সবুজ সতেজ আখের চারা লকলকিয়ে উঠছে। তালি-মারা শাড়ীর আঁচল গায়ে জড়িয়ে কিষান-বৌ মাথায় তরকারির ঝুড়ি নিয়ে গাঁয়ের কাঁচা রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে। তার কোলের ছেলে ক্ষেতভরা কড়াইশুটির হিল্লোলের দিকে কচি কচি আঙুল নাড়াচ্ছে। টাটু ঘোড়ায় ঠকঠকিয়ে চলেছে গাঁয়ের মহাজন। কোথাও দাওয়ায় বসে গ্রামের শেখ জুম্মন আর দামড়ীরাম দুনিয়ার হাল চাল নিয়ে অন্তহীন আলোচনায় ব্যস্ত। ঘরে ঘরে গাই দোওয়ার, চাল কোটার আওয়াজ। চাষবাস আর খাজনা টেক্সো, ঋণ কর্জ আর বন্ধক, চাষী আর মহাজন, জমিদার আর তার পেয়াদা; অনবরত দুঃখভোগ আর তা থেকে উদ্ধারের অনন্ত স্বপ্ন, কোথাও দুর্বল প্রয়াস, কোথাও শক্তিমত্তার আভাসসব নিয়ে পল্লী-জীবনের নিটোল খতিয়ান, যে। জীবনের বাসিন্দারা অটল সংকল্প আর অমিত বিশ্বাস নিয়ে জীবনের সঙ্গে যুঝে চলে আর ভেতরে ভেতরে রক্তাক্ত হয়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে ভেঙে যেতে থাকে। এই অদৃশ্য ভাঙনের, এই অবিরাম ক্ষয় আর ধ্বসের মুখোমুখী নড়বড়ে পল্লী-সমাজের জীবনচরিত—প্রেমচন্দের কাহিনীর আখ্যান-ভাগে ঢেউয়ের পর ঢেউ তুলে চলল। তার গল্প আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরে অভাব আর অনটনের অথৈ সমুদ্রের ছবি, গরীব কিষাণ সে-সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে, সাগর তার সর্বস্ব একটু একটু করে গ্রাস করছে—তবুও ভাঙনের উপকূলে দাঁড়িয়ে তার ব্যাকুল জিজীবিষা, পুরণো বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে তখনো তার সুস্থ, সমৃদ্ধ, সুখী হবার ইচ্ছা। হিন্দী সাহিত্যের পাঠক এই প্রথম অবাক হয়ে ভাবতে শেখেন—তাইতো, বাস্তবের গল্পই তো আসল গল্প!
প্রেমচন্দ পেশায় ছিলেন শিক্ষক। ফলে আদর্শবাদ আর চরিত্রগঠনের প্রতি তাঁর একটা স্বাভাবিক প্রবণতা ছিল। মহাত্মা গান্ধী আর টলস্টয়ের জোরালো প্রভাব ছিল তাঁর ওপর। তাই তার কাহিনীতে এই দুই মনীষীর জীবন দর্শন গভীর রেখাপাত করেছে।


 * আপনারা আরো সংগ্রহ করিতে পারেন- প্রেমচন্দ গল্পসংগ্রহপিডিএফ


সমকালীন সাহিত্যের ক্ষেত্রে বাংলায় শরৎচন্দ্র আর হিন্দীতে প্রেমচন্দ তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। প্রেমচন্দ তাঁর গল্পের চরিত্রকে উপলক্ষ্য করে তদকালীন সমাজ ও ইতিহাসের সজীব রূপরেখা অঙ্কন করতেন। শরৎচন্দ্র সে-যুগের ইতিহাস আর সমাজের পটভূমি থেকে তার চরিত্রটিকে তুলে নিতেন, এবং তার গল্পে সেই ব্যক্তিমানসের সুখদুঃখ, ঘাতপ্রতিঘাতের নিপুণ চিত্রায়ণ ঘটাতেন। বাংলা সাহিত্যে শরশ্চন্দ্রের আবির্ভাব আকস্মিক। তার আগমন একটি চিহ্নিত ঘটনা। তার আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাভাষী পাঠক তাকে বরণ করে নিয়েছিলেন। হিন্দী সাহিত্যে প্রেমচন্দের প্রবেশ কোনো ঘোষিত পদক্ষেপ নয়। একনিষ্ঠ সাধনা আর দুর্জয় তপস্যায় তিনি প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। শুনতে পাওয়া যায়, প্রেমচন্দের নাকি ইচ্ছে ছিল যে তাঁর প্রথম গল্প-সংগ্রহ ‘সপ্তসররাজের' ভূমিকা শরৎবাবু লিখে দেন। সেই উদ্দেশ্যে তিনি কলকাতায় গিয়ে শরৎবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর গল্প পড়ে শোনান। গল্প শুনে মুগ্ধ হয়ে শরৎবাবু নাকি বলেছিলেন—“বাংলাভাষায় রবিবাবু বৈ আর কেউ এমন লিখতে পারবে না। আপনার গল্প সংগ্রহের ভূমিকা লেখার যোগ্যতা, আর যারই থাক আমার নেই।”
১৮৮০ সালে ৩১শে জুলাই এই মহান উর্দু-হিন্দী সাহিত্যিক জন্মগ্রহন করেছিলেন।
এই পোষ্ট হইতে আপনারা প্রেমচন্দ মুন্সী'র লেখা ২২টি গল্পসংকলন বইয়ের পিডিএফ শেয়ার করা হল। গল্পগুলি বাংলায় অক্ষুন্ন অনুবাদ করেছেন প্রসূন মিত্র।
যেসকল গল্প এই বইতে রয়েছে-

ভেন্ন
বিষয় বিকার
অমাবস্যার রাত
অনল-সমাধি
আত্মারাম
ঈদগাহ
কফিন
দুধের দাম
দুই বলদের কাহিনী
নেমকের দারোগা
পিসনহারীর কুয়ো
পৌষ-নিশীথে
বড় ঘরের মেয়ে
দ্বিতীয় শৈশব
মর্যাদার বেদী
স্বর্গাদপি
রাণী সারন্ধা
রেষারেষি
শেষ কিক্তি
চক্রবৃদ্ধি
যুদ্ধযাত্রা
সুজান ভগত


এই গল্পগুচ্ছে সঙ্কলিত ছোটগল্পগুলি এমনভাবে চয়ন করা হয়েছে, যাতে প্রেমচন্দের সমকালীন দেশকাল-সমাজের ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বলাবাহুল্য প্রেমচন্দ এখন আর কেবল হিন্দী ভাষার লেখক নন, তার ছোটগল্প ও উপন্যাস সব ভাষাতেই অনূদিত হয়ে তাকে প্রকৃত ভারতীয় লেখকের সম্মান এনে দিয়েছে। প্রেমচন্দ যে আদর্শোম্মুখ যথার্থবাদের প্রবক্তা ছিলেন সেই মানসিকতা এবং গ্রামীণ ভারতের আত্মা এই গল্পগুলিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রখ্যাত আনুবাদক প্রসূন মিত্রের সাবলীল অনুবাদে গল্পকার প্রেমচন্দের নানা শৈলীর সামগ্রিকতা এতে সার্থকভাবে উদ্ভাসিত হয়েছে।

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ সংগ্রহ করুন ২২টি বাছাই অনুবাদ গল্প সংগ্রহ বই- 'প্রেমচন্দের গল্পগুচ্ছ' বাংলা অনুবাদ বই পিডিএফ।

No comments:

Post a Comment