অপরূপ রূপকথা - অনুবাদ রূপকথার বই পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Saturday, January 2, 2021

অপরূপ রূপকথা - অনুবাদ রূপকথার বই পিডিএফ


 অপরূপ রূপকথা - অনুবাদ রূপকথার বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'অপরূপ রূপকথা'
লেখক- হ্যান্স অ্যান্ডার্সন
অনুবাদক- বুদ্ধদেব বসু
বইয়ের ধরন- অনুবাদিত রূপকথার বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৩৭৯
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ২৩এমবি
প্রিন্ট বেশ ভালো, জলছাপ মুক্ত

অপরূপ রূপকথা - অনুবাদ রূপকথার বই

হান্স অ্যান্ডারসন সমন্ধে কিছু কথা-

'অপরূপ রূপকথা' এই বইটি হল ডেনীয় লেখক এবং কবি হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের লেখা সবচেয়ে ভালো রূপকথা গুলির বাংলা অনুবাদ বই। এই গল্পগুলি পড়ে বিশ্ববন্দিত রূপকথার লেখক অ্যান্ডারসেনের আশ্চর্য্য প্রতিভার গভীরতা ও বৈচিত্র দু'য়ের পরিচয় পাওয়া যাবে। ছোটদের অসাধারণ সব রূপকথা লেখার জন্য তাঁকে 'রূপকথার জাদুকর' নামে অভিহিত করা হয়।

ডেনমার্কের ওডেন্স শহরে হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যাণ্ডারসনের জন্ম। গরিব মুচির ছেলে। ছোটোবেলা থেকে ভারি কল্পনাপ্রবণ। ১৮১৬ সালে বাপের মৃত্যুর পর থেকে আর কেউ ছেলেটার দেখাশুননা করত না। সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে, বাড়িতে বসে খেলনার থিয়েটার বানাত, পুতুল বানাত, তাদের জন্য নানারকম পোশাক বানাত। আর কেবলই দেশের বিদেশের যেখানকার যত নাটক পেত, সব পড়ত।
বড়োরা বললেন ওকে দরজির কাজ শেখানো যাক। এদিকে অ্যাণ্ডারসনের ইচ্ছা সে পেশাদার অপেরা গায়ক হবে। শেষকালে পালিয়ে কোপেনহাগেনে গিয়ে কিছুকাল থিয়েটারে থিয়েটারে ঘুরে বড়ো কষ্টে দিন কাটাল। সবাই বলত দূর, দূর, ছেলেটা ক্ষ্যাপা। অবশেষে হ্যান্স কয়েকজন নামকরা সঙ্গীতজ্ঞের সাহায্যও পেয়েছিল। কিন্তু গলাটাই গেল খারাপ হয়ে ; তখন সে রয়েল থিয়েটারে নাচ শিখতে লাগল। সেখানকার অধ্যক্ষ ওকে বড়ো স্নেহ করতেন।
কেমন করে রাজা ষষ্ঠ ফ্রেডারিকের নজরে পড়ে যাওয়াতে, তিনি অ্যাণ্ডারসনকে কয়েক বছর বিনি পয়সায় একটা বড়ো বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেখালেন। তার আগেই মাত্র সতেরো বছর বয়সে ত্যাণ্ডারসনের প্রথম বই ‘পালনাটকের কবরের ভূত' প্রকাশিত হয়েছিল। ১৮২৭ সাল পর্যন্ত লেখাপড়া চলল, যদিও একটুও ভালো লাগত না। পড়ার শেষে আবার কোপেনহাগেনে গেলেন ; তখন তার বাইশ বছর বয়স।

১৮২৯ সালে একটা ভ্রমণকাহিনী, নাটক ও একটা কবিতার বই প্রকাশ করে দেখতে দেখতে লোকের সুনজরে পড়ে গেলেন। ১৮৩৩ সালে রাজার কাছ থেকে বৃত্তি পেয়ে সমস্ত ইউরোপে ঘুরে বেড়ালেন। ১৮৩৫ সালে কোপেনহাগেনে রূপকথার প্রথম খণ্ড প্রকাশ করলেন। কিন্তু সেগুলি যে কী অসাধারণ গল্প সে কথা বুঝতে লোকের একটু সময় লেগেছিল।
রূপকথার চেয়ে বড়োদের উপন্যাস প্রবন্ধের জন্য তার বেশি নাম হয়েছিল। মাঝে কিছুদিন তিনি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কতকগুলো অসাধারণ খামখেয়ালী রচনাও এসময়ে লিখে খুব আদর ও খ্যাতি লাভ করেছিলেন।
১৮০৮ আর ১৮৪৫-এ রূপকথার দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয়েছিল। ইউরোপের সব দেশের লোকদের সে কী আগ্রহ! শুধু ডেনমার্কেই যেন ততখানি নয়।
১৮৪৭ সালে ইংল্যান্ডে গিয়ে খুব আনন্দে কিছুদিন কাটালেন। সেখানে যথেষ্ট আদরও পেলেন। ফিরে আসবার সময় স্বয়ং চার্লস ডিকেন্স জাহাজ-ঘাটে এসে তাকে বিদায় জানিয়েছিলেন।
ভালো ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার বলে খ্যাতিলাভ করবার দিকেই তার ঝোঁক ছিল। রূপকথাগুলো থেকে তেমন কিছু আশা করতেন না। অথচ সেইগুলিই বিশ্বসাহিত্যে অকৃত্রিম ও অদ্বিতীয় বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। রূপকথাকে গুরুত্ব না দিলেও তা লিখে যেতেন। ১৮৪৭, ১৮৪৮ সালে ও তার পরেও আরো অনেকগুলি রূপকথা লেখা হয়েছিল।
১৮৭২-এ শেষ রূপকথাগুলি প্রকাশিত হয়েছিল।


*এছাড়া পাঠকগণ আরো সংগ্রহ করিতে পারেন, লীলা মজুমদার দ্বারা অনুবাদিত হ্যান্স অ্যান্ডার্সন বই
হ্যান্স অ্যান্ডার্সন রচনাবলী

সেই বছরেই পড়ে গিয়ে এত জখম হয়েছিলেন যে আর কখনো আগেকার স্বাস্থ্য ফিরে পান নি। ১৮৭৫ সালে তার মৃত্যু হয়।
অ্যাণ্ডারসনের রূপকথার বিশেষত্ব হল যে, এগুলি তাঁর নিজস্ব মনগড়া মৌলিক গল্প এবং সেগুলি গ্রিমভাইদের গল্পের মতো পুরনো গল্পের সংগ্রহ নয়। এগুলির সাহিত্যিক মানও অনেক বেশি।
সবচাইতে আশ্চর্যের কথা হল যে অ্যাণ্ডারসনের এই-সব গল্প যে কালে, যে দেশের ছেলেমেয়েদের জন্য লেখা হয়েছিল, তখন ঘরে ঘরে বিজলীবাতি জ্বলত না, এরোপ্লেনের কথা ছেড়েই দেওয়া যাক, মোটরগাড়িও তৈরি হয় নি, তখন দেশ ভ্রমণে বেরুত লোকে বড়ো বড়ো ঘোড়ার গাড়িতে, বেপরোয়া যারা তারা কৌচবাক্সে উঠে বসে, দৃশ্য দেখতে দেখতে যেত। সমস্ত হালচাল তখন আলাদা ছিল, ওদের দেশেই সে-সমস্ত বদলে গেছে আর আমাদের সঙ্গে যে কোনো সাদৃশ্য থাকবে না, সে কথা তো বলাই বাহুল্য। তবু গল্পগুলো পড়ে মন কেমন করে, মনে হয় কত-না আপনজনের কথা হচ্ছে। তাদের সুখে আনন্দ হয়, তাদের দুঃখে কষ্ট হয়। তারা যে ভিন যুগের ভিন দেশের মানুষ, সে কথা একবারও মনে হয় না। তার কারন বাইরের মানুষদের নিয়ে তো আর এ গল্প নয়, এ গল্প হল অন্তরের কথা নিয়ে, সেখানে দেশ নেই, কাল নেই, সবাই এক, সবাই আপন।
ভিন দেশ, ভিন যুগ হয়ে বরং একটা সুবিধাই হয়ে গেছে। গল্পগুলো পড়লে সে দেশের সেকালের হালচালের কথা সব জানা হয়ে যায়। চোখের সামনে যেন ছবির মতো তাদের দেখতে পাওয়া যায়, বড়ো-বড়ো খালে সুন্দর সব নৌকোয় চড়ে বড়োলোকরা বেড়াচ্ছে, বড়োবড়ো গাড়ি করে দেশ ভ্রমণ করছে, দামী দামী পোশাক পরে ভালো ভালো সরাইখানায় থাকছে। আর গরিবরা কর্কশ পশমের জামা গায়ে, বরফের ওপর দিয়ে খালি পায়ে কিম্বা ছেড়া জুতো পরে হেঁটে যাচ্ছে, বড়ো-বড়ো বাড়ির চিলেকোঠা ভাড়া নিয়ে মাথা গুজে থাকছে। তবু তাদের মনেও কত শখ, সেইখানে তারা গোলাপগাছ লাগাচ্ছে, কত ভালোবাসার লোক ছিল তাদের, দুঃখে সুখে জীবন কাটছে, বত ভুল করছে তারা, কত প্রিয়জনকে হারাচ্ছে তাদের সঙ্গে সব দেশের সব কালের সব মানুষের কোনো তফাত নেই।
নিতান্ত বাস্তবে ঘেরা এই জগতেও পরীদের আনাগোনা ছিল ; তারা কেবলই মানুষদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ত, তা সে ভালোর জন্যই হোক কি মন্দর জন্যেই হোক কিন্তু শেষপর্যন্ত দেখা যেত নিজেদের মনের বল আর গায়ের জোর আর প্রিয়জনের ভালোবাসা ছাড়া কোনো মানুষের কোনো অবলম্বন নেই। কেবলই মনে হয় সব ছোটো ছেলেমেয়ের মনের মধ্যে একটা গোপন দেশ আছে, যেখানে সব সুখের বাস। দুঃখও যে সেখানে নেই তা বলা যাবে না, কিন্তু সে দুঃখ ফুলের মতো সুন্দর, মখমলের মতো কোমল। এই দেশকেই পরীদের দেশ বলা যায়। সব কিছু সুন্দর সেখানে। কুৎসিত যা কিছু তাদেরও সুন্দর দেখায়। নিষ্ঠুর সৎমারা সেখানে সাজা পায়। সেখানকার ছোটো-ছোটো ছেলেমেয়েরা সেকালেরও নয়, একালেরও নয়, তারা চিরকালের ; তারা এ-দেশেরও নয়, ওদেশেরও নয়, তারা সব দেশের ; তারা কালোও নয়, গোলাপিও নয়, তারা সব রঙের বাইরে। তার কারণ সব মানুষের ছেলেমেয়েদের বুকের ভিতর যে চিরন্তন মানব শিশু বাস করে, হ্যান্স অ্যাণ্ডারসন তাদের গল্প লিখতেন। ঐ পরীদের দেশ খুজলে পৃথিবীর সব দেশেই পাওয়া যায়। হ্যান্স অ্যাণ্ডারসন সই দেশের কথাই লিখতেন। সেখানে শুধু মানুষরা থাকে না, এদের গেরস্থালীর জিনিসপত্র, জন্তু-জানোয়ার, পাখি, ফুল, সব থাকে। তাদের মনেও সুখ দুঃখ থাকে। মানুষের ছেলেমেয়েরা যে-সব খেলনা নিয়ে খেলে, যে জিনিস ব্যবহার করে, সে-সমস্তও মানুষেরই মতো হয়ে ওঠে।
হ্যান্স অ্যাণ্ডারসনের পরীদের দেশে রাগ, হিংসা, ঝগড়াও আছে, মানুষের জগতে যা আছে, তার সবই আছে। তফাত শুধু এই যে
গল্পের শেষে মন্দরা হয় ভালো হয়ে যায়, নয়তো সাজা পায়। চিরকাল দুষ্টুমি করতে তাদের দেওয়া হয় না।
আসলে ঐ পরীদের দেশটা তো আমাদের এই চেনা পৃথিবীটা ছাড়া আর কিছু নয়, শুধু একটা রঙিন তে-কোণা কঁচের মধ্যে দিয়ে দেখা। বলা যেতে পারে একরকম মনের ইচ্ছার দেশ। সেই কাঁচটা হল কল্পনার কাচ, সমবেদনার কাচ। এই কাঁচ দিয়ে যা কিছু দেখা যায়, তাই অমর হয়ে যায়, তাই লোককথা, রূপকথা, উপকথা কখনো সেকেলে হয়ে যায় না। পুরনো উপন্যাস কেউ পড়তে চায় না, পুরনো নাটক কম লোকে পছন্দ করে, কিন্তু পুরনো পরীদের গল্পের নতুন নতুন সংস্করণ বেরোয়।
কেউ কেউ বলে থাকেন আজকালকার ছেলেমেয়েরা বিজ্ঞান 'ভালোবাসে, ওরা রূপকথা চায় না। তাও ঠিক বলা হল না। যারা বিজ্ঞান ভালোবাসে, তারাও রূপকথা ভালোবাসে। যারা বৈজ্ঞানিক জিনিস ছাড়া আর কিছু উপভোগ করতে পারে না, সেই হতভাগ্যরাও বৈজ্ঞানিক রূপকথা ভালোবাসে।
আসল ব্যাপার হল এই দশ দিক দিয়ে ঘেরা সত্যিকার পৃথিবীটা মানুষের ছেলেমেয়েদের পক্ষে যথেষ্ট বড়ো নয়। এমন-কি, মহাকাশযাত্রীদের কাহিনীও দেখতে দেখতে দশ দিকের বেড়ার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে, কাজেই কল্পনার রাজ্য ছাড়া উপায় কি ? নইলে বঞ্চিতদের বুক ভরবে কিসে, ব্যর্থদের কোথায় সার্থকতা মিলবে ? চিন্তা যেখানে বাস্তবের বাধায় ঠেকে ফিরে ফিরে আসে, সে জায়গা ছোটোদের কোন কাজে লাগবে ? আর শুধু ছোটোদেরই-বা কেন, তাদের দলে অনেক বুড়োরাও আছে, তারাই-বা সেই নেই-দেশের হদিশ কোথায় পাবে ?
এ কথাও শোনা যায় যে কাল্পনিক পরীদের গল্প পড়লে ছেলেমেয়েদের মন দুর্বল হয়ে যায়। তাই কখনো হয়, কল্পনার যেখানে প্রসার মনের বলেরও উৎস সেখানে। পৃথিবীর সব নতুন নতুন উদ্ভাবনের পিছনে কারও-না কারও কল্পনাপ্রবণ মন কাজ করে, সব শিল্পের সব সাহিত্যের পিছনেও তাই।  কল্পনাপ্রবণ মনের শক্তি বাড়ানোর জন্য রূপকথা গল্পগুলির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এই বই তারই একটা নমুনা।

সূচীপত্র-
কুৎসিতহাঁস
কোকিল ও কলের কোকিল
রুটি মাড়িয়ে না
আঙুলিনা
ঠাণ্ডা দেশের পণ্ডিত
লাটিম ও বল
রাজার নতুন পোষাক
দেশলাইয়ের বাক্স
লাল জুতো
ছোটো-কালু বড়ো-কালু
এক খোসায় পাঁচজন
রাজকন্যা ও মটরশুটি
ছোট্ট জলকন্যা


এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন

প্রিয় কিশোর/কিশোরী পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে তোমরা বুদ্ধদেব বসু'র অনুবাদিত হ্যান্স অ্যান্ডার্সনের অতিসুন্দর একটি অনুবাদিত রূপকথার বই 'অপরূপ রূপকথা-বুদ্ধদেব বসু' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবে

No comments:

Post a Comment