তিনটি এ্যাডভেঞ্চার কাহিনী বাংলা অনুবাদ রোমাঞ্চকর গল্প - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Thursday, September 6, 2018

তিনটি এ্যাডভেঞ্চার কাহিনী বাংলা অনুবাদ রোমাঞ্চকর গল্প


তিনটি এ্যাডভেঞ্চার কাহিনী বাংলা অনুবাদ রোমাঞ্চকর গল্প পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- তিনটি এ্যাডভেঞ্চার কাহিনী
লেখক- জুল ভর্ণ
অনুবাদ - বিরু চট্টোপধ্যায়
বইয়ের ধরন- বাংলা অনুবাদ রোমাঞ্চকর গল্প
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৭৪
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ-  ৪ এমবি
প্রিন্ট ভালো, অবশ্যই জলছাপমুক্ত

উনবিংশ শতাব্দীর অষ্টম দশকে একদিন ফরাসী শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এলেন বিশালকায় লাল দাড়ি গোঁফ সমন্বিত এক ব্যক্তি। তার ভিজিটিং কার্ডের প্রতি দৃষ্টিপাত করার সঙ্গে সঙ্গে অফিস রিসেপসনিস্ট ছেলেটির মুখ উল্লাসে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল।
একটা চেয়ার ভদ্রলোকের দিকে সসম্ভ্রমে ঠেলে দিয়ে ছেলেটি বলে ওঠে, মসিয়ে ভর্ণ অনুগ্রহ করে আসন গ্রহণ করুণ। উঃ এত দেশ দেশান্তর ভ্রমণ করে আপনি নিশ্চয়ই খুবই ক্লান্ত।
লেখক জুল ভর্ণ-এর এতদিনে জীর্ণ শীর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা। তিনি পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছেন বহুবার—একবার তো আশি দিনে মাত্র। তিনি সমুদ্রতলে ষাট হাজার মাইল ঘুরেছেন, গিয়েছেন চন্দ্রে, পৃথিবীর অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়েছেন। তিনি আফ্রিকার নরখাদকদের সঙ্গে আলাপ করেছেন, এবং অরিশকোর রেড ইণ্ডিয়ানদের সঙ্গেও মুলাকাৎ করেছেন, বিশ্বের ভূগোলের হেন স্থান কমই আছে যেখানে না পদার্পণ করেছেন লেখক জুল ভর্ণ।
কিন্তু শুনলে তাজব মনে হয়, মানুষ জুল ভর্ণ চিরদিনই ঘরকুনো। তাকে যদি ক্লান্ত দেখায় তারজন্য দায়ী তার একাসনে বসে দিনের পর দিন লেখন কার্য। টানা চল্লিশ বছর ধরে তিনি লাল ইটওয়ালা টাওয়ার সদৃশ এক ঘরে বসে ছ’মাসে একখানা অর্থাৎ বছরে দু’খানা করে গ্রন্থ রচনা করে গেছেন।
এই মহান লেখকের তদানিন্তন কল্পনা আজ আমরা প্রত্যক্ষ করছি বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের মারফৎ। রেডিও আবিষ্কারের আগেই তিনি টেলিভিসনের কল্পনা করে গিয়েছেন। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন ফোনো-টেলিফটো। রাইট ভ্রাতাদ্বয়ের উড্ডয়নের অর্ধশতাব্দী পূর্বে তিনি হেলিকপ্টারের কল্পনা করে গিয়েছেন। আজ বিংশ শতাব্দীতে যা দেখছি সবই তিনি এক শতাব্দী আগে রচনায় আবিষ্কার বা উদ্ভাবন করে গেছেন। সাবমেরিণ, এরোপ্লেন, নিয়ন আলো, চলন্ত সি ড়ি, শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, আকাশচুম্বী অট্টালিকা, গাইডেড মিসিলি, ট্যাঙ্ক প্রভৃতি কল্পনা করে গিয়েছিলেন এই মহান লেখক, শুধুমাত্র কল্পনা নয় এইসব বস্তুকে এমন নিখুঁতভাবে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন যে জ্ঞানীগুণী বিজ্ঞানীরা কাগজ কলম নিয়ে বসে ওর তথ্যাদি চেক করে কোন ভুল তথ্য বের করতে সমর্থ হয়নি। পরবর্তীকালে যেসব বিজ্ঞানী, আবিষ্কারক ও অভিযানকারী জুল ভর্ণ-এর কল্পনার দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন তারা হলেন নর্থপোল-এর ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া অ্যাডমিরাল বাইর্ড। প্রখ্যাত নৌস্থপতি সাইমন লেক। বেলুনবিদ ও গভীর সমুদ্র অভিযানকারী অগাস্টে পিকার্ড। বেতার উদ্ভাবক মার্কনি।
সুখের কথা তার কল্পনাশক্তির ফসল তিনি নিজ চক্ষে দেখে গেছেন। একজন মানুষ যা কল্পনা করতে পারে, অপর কোন মানুষ তা বাস্তবে পরিণত করতে নিশ্চয়ই সমর্থ হয়, এই ছিল তার অভিমত।
১৮২৮ খৃস্টাব্দে জুল ভর্ণ যখন ফরাসী দেশের নান্টে নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন তখন নেপোলিয়ান সবেমাত্র মারা গিয়েছেন, প্রথম রেলপথের বয়েস পাঁচ বছর, অতলান্তিক মহাসাগর পাড়ি দিচ্ছে বাষ্পীয় ইঞ্জিনওয়ালা জাহাজ, যদিও তাদের অঙ্গে তখনও পাল-মাস্তুল প্রভৃতি বিদ্যমান।
বাপের ইচ্ছেয় তিনি প্যারিসে আসেন আইন পড়তে আঠারো বছর বয়সে। কিন্তু আইনের চেয়ে কবিতা ও নাটক লেখার দিকে তাঁর সমধিক ঝোঁক পরিলক্ষিত হয়।
একদা এক সন্ধ্যায় কোন অভিজাত সম্প্রদায়ের এক আনন্দানুষ্ঠানে তরতরিয়ে সিড়ি দিয়ে নেমে ধাক্কা খেলেন বলিষ্ঠ এক ভদ্রলোকে সঙ্গে। থ্রি মাস্কেটিয়ার্স-এর অমর গ্রন্থকারের সঙ্গে এই ভাবেই পরিচয়ের সূত্রপাত। আলেকজাণ্ডার ডুমার সঙ্গে পরিচিত হয়ে জুল ভর্ণ-এর মনে লেখক হওয়ার প্রবল বাসনার জন্মলাভ হয়। দুজনে যুগ্মভাবে একটি নাটকও লেখেন এবং সেটি সাফল্য সহকারে সাধারণ রঙ্গালয়ে অভিনীতও হয়। প্রখ্যাত লেখকের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি স্থির করেন যে ইতিহাস নিয়ে ডুমা যে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন তার উপন্যাসাদিতে জুল ভর্ণ-ও তেমনি ভূগোলের যাদু খেলা দেখাবেন তার বই-এ।
তার প্রথম বই ফাইভ উইকস ইন এ বেলুন পরপর পনের জন পাব্লিশারের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় রেগেমেগে তিনি এর পাণ্ডুলিপি অগ্নিতে নিক্ষেপ করেন। ভাগ্যিস তার স্ত্রী তৎক্ষণাৎ সেটা বাঁচিয়ে দিলেন নয়তো পৃথিবী একটি অপূর্ব গ্রন্থ থেকে বঞ্চিত হত।
এ বই সর্বাধিক বিক্রিত হয়। সভ্য সমাজের যাবতীয় ভাষায় অনুদিত হয়ে প্রশংসা অর্জন করে। চৌত্রিশ বছর বয়সেই এর গ্রন্থকার প্রখ্যাত হয়ে যান। এরপর একটি চুক্তির সৌজন্যে বছরে দু'খানা করে বই টানা চল্লিশ বছর ধরে লিখে যান।
সুয়েজ ক্যানেল স্রষ্টা ফার্ডিনাণ্ড দ্য লেসেপস এত বেশী ভক্ত হয়ে পড়েন ভর্ণ-এর যে তিনি লেখককে লিজিয়ান অফ হনার সম্মানে ভূষিত করবার জন্য উঠে পড়ে লাগেন।
জুল ভর্ণ প্যারিস থেকে আমিয়েন্স-এ চলে এসে এমন একটি বাড়ি করেন যার টাওয়ার-এর উপর জাহাজ ক্যাপ্টেনের কেবিনের মত একটি ঘর তৈরী হয়। এই ঘরের দেওয়াল ও মেঝে পূর্ণ ছিল বিশ্বের তাবৎ দেশের মানচিত্র ও সেই সেই দেশের ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক বিবরণ সহ বিভিন্ন পুস্তকাবলী। এখানেই তিনি জীবনের শেষ চল্লিশটি বছর অতিবাহিত করেন।
রাউণ্ড দি ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেজ বইটি যখন প্যারিসের লে টেম্পস পত্রিকায় ধারাবাহিক বের হচ্ছিল, সারা পৃথিবীর পাঠকদের মধ্যে সেকি চাঞ্চল্য। এ বইয়ের নায়ক কাল্পনিক ফিলিয়াস ফগ-কে পরাজিত করবার জন্য ১৮৮৯ এ নিউ ইয়র্ক-এর এক সংবাদপত্র নেলি ব্লাই নামে এক মেয়ে সাংবাদিককে পৃথিবী প্রদক্ষিণে পাঠায়। মেয়েটি ৭২ দিনে প্রদক্ষিণ করে। পরে অবশ্য ভর্ণ-এর ভবিষ্যৎবানী মত ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলপথ তৈরী হতে একজন ফরাসী ভদ্রলোক ৪৩ দিনে পৃথিবী ঘুরে আসেন।
টোয়েন্টি থাউজ্যাণ্ড লীগ আণ্ডার দি সি-তে নটিলাস নামে যে সাবমেরিনটি তিনি কল্পনা করে গিয়েছিলেন তা শুধু ইলেকট্রিকে যে চালিত হত তা নয় সমুদ্র জল থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ছিল। শুনলে অবাক লাগে এই সেদিন মাত্র দুজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী উক্ত কাজটি করতে সক্ষম হয়েছেন। আর ঐ কাল্পনিক ‘নটিলাসে’র মত নিরবধি কাল জলতলে ডুবে থাকবার ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে। সেদিনের যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিন ‘নটিলাস'।
জুল ভর্ণ-এর শেষ জীবন আদৌ সুখের ছিল না। বুদ্ধিজীবী তাদের বিদ্রুপের পাত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি। নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টি শক্তি যায়, বধিরতাও ক্রমে এসে গ্রাস করে।
১৯০৫ এ এই প্রখ্যাত লেখকের মৃত্যু হয়। তাঁর শোক যাত্রায় দেশের যাবতীয় জ্ঞানীগুণী আর সারা বিশ্বের রাজা রাজড়াদের, প্রেসিডেন্টদের প্রতিনিধিরা যোগদান করেন।
প্যারিসের একটি দৈনিকপত্রই বুঝি জুল ভর্ণ-এর মৃত্যু সংবাদকে সর্বাধিক প্রশংসা বাক্যে প্রকাশ করে :
The old storyteller is dead. It is like the passing of Santa Claus.
পরিশেষে বক্তব্য, আসল গ্রন্থগুলি বৃহৎ, এ গ্রন্থে গ্রথিত হল সেগুলির সবিশেষ সংক্ষিপ্ত রূপ। সংক্ষেপ করা হলেও মূলের রস যাতে বজায় থাকে তার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে।
বড় হয়ে কিশোর পাঠক-পাঠিকা যাতে মূল গ্রন্থ পাঠ করে রসাস্বাদনে আগ্রহী হয় সেই কথা মনে রেখেই এই প্রচেষ্টায় তারা খুশী হলেই সম্পাদকের শ্রম সার্থক হবে।

তিনটি এ্যাডভেঞ্চার কাহিনী

জুল ভর্ণের তিনটি বিখ্যাত উপন্যাস একত্রে, সেগুলি হল-
ফাইভ উইকস্ ইন এ বেলুন
টোয়েন্টি থাউজান্ড লীগ আন্ডার দি সী
রউন্ড দি ওয়ার্ল্ডইন এইটি ডেজ


উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে উপরোক্ত বাংলা অনুবাদ রোমাঞ্চকর গল্প সংকলন বই- 'তিনটি এ্যাডভেঞ্চার কাহিনী' -এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment