দাঙ্গাবিরোধী গল্প বাংলা ছোট গল্পের বই - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Tuesday, September 4, 2018

দাঙ্গাবিরোধী গল্প বাংলা ছোট গল্পের বই


দাঙ্গাবিরোধী গল্প বাংলা ছোট গল্পের বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- দাঙ্গাবিরোধী গল্প
লেখক- ভারতীয় লেখকগণ
সম্পাদনা ও অনুবাদ - কমলেশ সেন
বইয়ের ধরন- ছোট গল্প সংকলন
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২২৫
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ-  ৫ এমবি
প্রিন্ট ভালো, অবশ্যই জলছাপমুক্ত
বইয়ের মুখবন্ধ-
ভারতবর্ষের রাজনৈতিক এবং সামাজিক জীবনে সাম্প্রদায়িকতার উৎস, সময়কাল এবং গতি-প্রকৃতি নিয়ে বিদ্বজ্জনদের মধ্যে অবশ্যই যথেষ্ট মতবিরোধ আছে। এই মতবিরোধ থাকা স্বাভাবিক। তবে তাঁরা অধিকাংশই অন্তত একটা বিষয়ে একমত যে, ব্রিটিশ শাসনকালে একদিকে যেমন সাম্প্রদায়িক ঐক্য গড়ে উঠেছে এবং সেই ঐক্য জঙ্গী রূপ নিয়েছে ; তেমনি অন্যদিকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির চক্রান্তে একাধিকবার সাম্প্রদায়িক অনৈক্য এবং রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়েছে। জাতীয় আন্দোলনে বিভেদ সৃষ্টি করে আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসকগোষ্ঠী অত্যন্ত সুকৌশলে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি চালিয়ে গিয়েছে—যে রাজনীতি আজ সুগভীরভাবে এদেশের মাটিতে প্রোথিত।
একদিন এই ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরাই বিপ্লবের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে জাতীয় কংগ্রেসের জন্ম দেয়—যাতে বিপ্লবের রাশ জাতীয় কংগ্রেসের বুর্জোয়া নেতাদের হাতে থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতবর্ষের শোষিত নির্যাতিত মানুষ এই কংগ্রেসের পতাকাতলেই জমায়েত হয়। তাই কংগ্রেস নেতৃত্বের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের বেড়াজাল বারবার ভেঙ্গে পড়ে সেই আন্দোলন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের শোষণ ও শাসনের ভিত কাপিয়ে তোলে।
জাতীয় আন্দোলনের উদ্ভব এবং বিকাশের যুগে জাতীয়তাবাদী হিন্দু নেতারা জাতীয়তার ভারতীয় ভিত্তিভূমি অনুসন্ধান করছিলেন। প্রাচীন হিন্দু ধর্ম এবং সামন্ততান্ত্রিক হিন্দু সংস্কৃতিকেই তাঁদের জাতীয়তার ভিত্তি করলেন। ফলে গো-রক্ষা সমিতি স্থাপন, শিবাজী উৎসব এবং গনেশ পূজারও প্রচলন এবং বাঙলা দেশে শক্তির উপাসন। শুরু হয়। এমন কি সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনও শক্তির এই উপাসনায় মেতে ওঠে রাজরীতির সঙ্গে ধর্মের এই মেলবন্ধন ছিল মারাত্মক, আজও এই বন্ধন নানাভাবে অটুট ।
এই জাতীয়তাবাদী নেতারা জাতীয় আন্দোলনকে পরিপুষ্ট, সতেজ ও সবল করার জন্যে আমাদের জাতীয় সংগ্রামের বীর নেতাদের কখনই উর্ধ্বে তুলে ধরলেন না। অথচ তাদের সামনেই ছিলেন বাসুদেব ফাড়কে, চাপেকার ভ্রাতৃদ্বয়, নানা সাহেব, আঁতিয়া টোপী, কুঁয়ার সিংহ, ফৈজাবাদের মৌলন। আহম্মদুল্লাহ--ছিল সঁওতাল এবং নীল বিদ্রোহের অমর সংগ্রামের কাহিনী ও বীর নায়করা। কিন্তু কেন তারা এই সংগ্রামী ঐতিগুলির মধ্যে থেকে জাতীয়তার মাল-মশলা সংগ্রহের জন্যে আগ্রহী হলেন না? তার কারণ এই সব নেতারা ছিলেন বুর্জোয়া শ্রেণীর প্রতিভূ। শ্রেণী-স্বার্থকেই তাঁরা রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন।
স্বাভাবিক কারণেই ভারতবর্ষের জাতীয় আন্দোলনে এক বিরাট ফাটল সৃষ্টি হয়-যে ফাটল দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ে বিষের ধারা। তাই একদিন (১৯০৬, ৩০ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন এবং উসকানিতে জন্ম হল ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ-র নেতৃত্বে মুসলিম লীগ। মুসলিম লীগ প্রত্যক্ষভাবেই ব্রিটিশ সাম্রাজাবাদের খয়ের খাঁ হয়ে আসবে নামে এবং বিভেদ সৃষ্টি করতে থাকে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত মেহনতী মানুষ নেতৃত্বের রক্তচক্ষুকে অগ্রাহ্য করে সংগ্রামের রণভূমিতে অবতীর্ণ হয়। এই রণভূমি ছিল যেমন ব্যাপক তেমনি সুসংহত। এই সুসংহত সংগ্রামের রূপ আমরা দেখতে পাই পেশওয়ার অভুথান, শোলাপুর কমিউন, বরদৌসী কৃষক অভুত্থান, চৌরিচোরা, পুন্নভায়লারের কৃষক সংগ্রাম, রশিদ আলী দিবসে।
এইসব গণ-অভ্যুত্থান এবং সংগ্রামে ভীত-সন্ত্রস্ত নেতৃবৃন্দ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ভারত বিভাগের পরিকল্পনা করে। এবং সমগ্র উপমহাদেশে দাঙ্গা বাধিয়ে দেয়। এই দাদা যে কত সর্বগ্রাসী আকার ধারণ করে তা আমরা প্রত্যক্ষ করি আমাদের জীবন এবং মান-সম্মান দিয়ে।
ভারত, পাকিস্তান, বাঙলা দেশ—সমগ্র উপমহাদেশের রাজনীতি এবং সমাজ জীবনে এই সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতি বিদ্বেষ আজ গভীর থেকে গভীরতর আকার ধারণ করেছে। এই কট্টর সাম্প্রদায়িক মনোভাৰ এবং রাজনীতির বিরুদ্ধে যে আদর্শগত এবং তত্বগত লড়াই পরিচালনা করা উচিত ছিল তা আজও অনুপস্থিত।
শ্রেণী বিভক্ত সমাজে শ্রেণী রাজনীতির সপক্ষে দৃঢ়ভাবে না দাড়ালে এ দাঙ্গা কখনই বন্ধ করা সম্ভব নয়। শুধু দু ফোটা অশ্রু বিসর্জন করা ছাড়া আমাদের আর কোন কিছুই করার থাকবে না। কারণ আজ যে তীব্র শ্রেণী সংঘাত শুরু হয়েছে সেই শ্রেণী সংঘাতকে ধ্বংস করার জন্যে শাসকশ্রেণী আরও উগ্র আকারে সাম্প্রদায়িকতা, প্রাদেশিকতা ও জাতপাতের জিগির তুলে রক্তের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে।
এই বিদ্বেষ, এই হত্যার বিরুদ্ধে বারবার প্রতিবাদ উঠেছে—প্রতিরোধ ও হয়েছে। সেই প্রতিবাদ, সেই প্রতিরোধ একদিকে যেমন শ্রমিক, কৃষক ও অন্যান্য মেহনতী মানুষও করেছে, তেমনি লেখক শিল্পীরাও নীরব-নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকেননি। আমরা চাই সারাদেশ ব্যাপী এই দাঙ্গার বিরুদ্ধে আবার সোচ্চার প্রতিবাদের ঝড় উঠুক । এই প্রতিবাদ ক্রমেই সংহত রূপ নিক এবং আমাদের মনন ও চিন্তার জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করুক। এই আলোড়ন এবং লক্ষ্য নির্দিষ্ট করার জন্যই এই সংকলনের প্রচেষ্টা। সংকলনের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে দেশ বিভাগের সময়-পর্বে রচিত ছোট গল্প থেকে। এই গল্পগুলোর রাজনৈতিক সামাজিক ও ঐতিহাসিক মূল আছে।
উপরের লেখাটি বইয়ের মুখবন্ধ থেকে নিয়ে এখানে উদ্ধৃত করা হয়েছে, সামান্য কিছু লাইন বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোন সংযোজন করা হয় নাই। সম্পূর্ন লেখাটি বই থেকে পডুন।
দাঙ্গাবিরোধী গল্প

যে গল্পগুলি বইতে আছে, সেগুলি হল-
অমৃতসর - কৃষণ চন্দর
ভারতমাতার পাঁচ রূপ - খাজা আহামদ আব্বাস
ওস্তাদের কসম - কিশোর শাহু
রমন্তে তত্র দেবতা - অজ্ঞেয়
ঘরের খোঁজে - রাঙ্গেয় রাঘো
গুরমুখ সিং-এর উইল - সাদাত হোসেন মান্টো
সাদা ঘোড়া - রামেশ চন্দ্র সেন
একটি তুলসী গাছের কাহিনী - সৈয়দ ওয়ালীঊল্লাহ্
আদাব - সমরেশ বসু
ড্রেসিং টেবিল - সলিল চৌধুরী
ঠান্ডা প্রাচীর - গুরমুখ সিং জিত
দলিল - নারায়ণ ভারতী
ব্যাথার মঞ্জরী - অমৃত রায়
অমৃতসর এসে গিয়েছে - ভীষ্ম সাহানী
খড় কাটার মেশিন - উপেন্দ্র নাথ অশক
অতীত - দর্শক
জল এবং পুল - মহীপ সিং
খোদা আর ঈশ্বরের লড়াই - যশপাল
লাজবন্তী - রাজেন্দ্র সিং বেদী

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে উপরোক্ত বাংলা অনুবাদ গল্প সংকলন বই- 'দাঙ্গাবিরোধী গল্প' -এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment