গৌড় কাহিনী - শৈলেন্দ্র কুমার ঘোষ, বাংলা ঐতিহাসিক বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'গৌড় কাহিনী'
লেখক- শৈলেন্দ্র কুমার ঘোষ
বইয়ের ধরন- ঐতিহাসিক বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৪৫৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ২৩এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত,
গৌড় প্রাচীন বাংলার এককালীন রাজধানী এবং অধুনা ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি নগর যার অবস্থান বর্তমান ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। বেশীরভাগ অংশ রয়েছে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদা জেলায় এবং বাকী কিছু অংশ রয়েছে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়।
পশ্চিমবঙ্গই গৌড়। ঐতিহাসিক যুগের প্রথম উন্মেষের সময়ে এখানকার এক যুবরাজ লঙ্কাদ্বীপে গিয়ে সেখানে ভারতীয় উপনিবেশের সুত্রপাত করেন। আবার ষষ্ঠ শতাব্দীতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর গৌড় এক স্বতন্ত্র রাজ্যে পরিণত হোলে কনৌজের সঙ্গে যে নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামের সূত্রপাত হয় সেই সময়ে কিছু সংখ্যক গৌড় যোদ্ধা আশ্রয়ের জন্য চীন সমুদ্রের উপকূলে গিয়ে দ্বিতীয় এক উপনিবেশ স্থাপন করে। সুদুর অতীত কাল থেকে এই জনপদের উপর দিয়ে এমনি বহু ঝড়ঝঞ্জা যেমন
বহে গেছে তেমনি এখানকার কৃষ্টি শুধু ভারতকে নয় সমগ্র পূর্ব এশিয়াকে ফলেফুলে ভরিয়ে তুলেছে। বেদোত্তর যুগের কোন সময়ে এই গৌড়ভুমিতে মহর্ষি কপিল আবির্ভূত হয়ে সাংখ্য দর্শনের প্রবর্তন করেন। সে সময়ে এখানে বেদের প্রভাব যথেষ্ট থাকলেও ধীরে ধীরে জৈনমতের জনপ্রিয়তা দেখা দেয়। গৌড়ের পরেশনাথ পাহাড় অধিকাংশ জৈন তীর্থঙ্করের লীলাক্ষেত্রে পরিণত হয়। সম্রাট চন্দ্রগুপ্তকে জৈনমতে দীক্ষা দেন এখানকার এক মহাযোগী শ্রুতকেবলি ভদ্রবাহু।
জৈন ধর্মের এই প্রতিপত্তির জন্য স্বয়ং অশোক পর্যন্ত গোড়ে প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হোলেও বৌদ্ধমত এখানে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যে স্থবির কাশ্যপ মাতঙ্গকে সম্রাট মিং-তির দূত বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য চীনে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি গৌড়ের অধিবাসী হওয়া সম্ভব। চীনের চ্যান ও জাপানের জেন মতের প্রবর্তক মহাস্থবির বোধিধর্ম যে গৌড়ীয় সন্ন্যাসী এরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হবার সঙ্গত কারণ আছে। কোন কোন দক্ষিণ ভারতীয় ঐতিহাসিক তাকে কাঞ্চিপুরের রাজপুত্র বলে দাবী করলেও সমর্থনসূচক কোন সুত্র দেখাতে পারেন নি।
অষ্টম শতাব্দীতে বৌদ্ধমত ভারতের অন্যান্য অঞ্চল থেকে লোপ পায়, কিন্তু পাল রাজগণের নেতৃত্বে গৌড় হয়ে দাড়ায় এর শেষ আশ্রয়স্থল। সে সময়ে এখানকার বৌদ্ধ তান্ত্রিকদের প্রভাব সমস্ত এশিয়ায় অনুভূত হয়। সেই তন্ত্রকে সঙ্গে নিয়ে স্থবির কুমারঘোষ এবং অহৎ অতীশ দীপঙ্কর সুবর্ণভূমি ও তিব্বতে গমন করেন। গৌড়নন্দিনী তারাদেবীর প্রচেষ্টায় বিজয় সাম্রাজ্য মহাযানমতের পীঠভূমিতে পরিণত হয়।
পালশক্তির পতনের পর গৌড়ে বৈদিকমত পুন:প্রতিষ্ঠা করবার চেষ্টা হোলে ও বৌদ্ধতন্ত্রের জঠর থেকে যে শৈবতন্ত্রের উদ্ভব হয় আজও তা আমাদের সমাজ ও ধর্মজীবনকে সকল দিক দিয়ে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। সমগ্র ভারতের মধ্যে গৌড় তান্ত্রিকতার এই জনপ্রিয় তার পিছনে রয়েছে কর্ণাটাগত সেনরাজগণের উদ্যম ও কান্যকুব্জাগত কয়েকটি পরিবারের নিষ্ঠা। তাঁরা শুধু তন্ত্রকে নূতন রূপ দেন নি, সমগ্র পুর্ব ভারতের রঙ্গমঞ্চে বিশিষ্ট ভূমিকার অভিনয় করেছেন। আজও করছেন।
আশ্চর্যের বিষয় এই যে ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুতে এরূপ এক শক্তিশালী সমাজের চক্ষের সম্মুখে জনৈক নিরক্ষর তুর্কী সেনানায়ক বিনা যুদ্ধে সেনশক্তিকে অপসারিত করে গৌড় জয় করে নেন। বখতিয়ার খিলজি কোন অজ্ঞাত অন্তরীক্ষ থেকে নবদ্বীপ প্রাসাদের উপর ঝাপিয়ে পড়েন নি; তাঁর মুষ্টিমেয় সৈনিক কোন যাদুমন্ত্র জানত না। তুর্কীদের গৌড় জয়ের পিছনে এক সুচিন্তিত পরিকল্পনা ছিল এবং তার ব্লু-প্রিন্ট রচিত হয় খলিফার রাজধানী বাগদাদে। এ সম্বন্ধে বৎসরের পর বৎসর ধরে নানা গ্রন্থ অধ্যয়নের ফলে যে সব উপকরণ সংগৃহীত হয়েছে তা দিয়ে এই পুস্তকখানি রচিত হোল। হয় তো আরও বহু উপকরণ অজ্ঞাত থেকে গেছে ; সেগুলি সংগ্রহের দায়িত্ব ভবিষ্যৎ গবেষকদের।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এই পোষ্ট হইতে একটি ঐতিহাসিক বই 'গৌড় কাহিনী - শৈলেন্দ্র কুমার ঘোষ' এই বইটির পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
No comments:
Post a Comment