রাহুল সাংকৃত্যায়ন জীবন ও মূল্যায়ন পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Thursday, July 7, 2022

রাহুল সাংকৃত্যায়ন জীবন ও মূল্যায়ন পিডিএফ


 রাহুল সাংকৃত্যায়ন জীবন ও মূল্যায়ন - প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তী
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'রাহুল সাংকৃত্যায়ন জীবন ও মূল্যায়ন'
লেখক- প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তী
বইয়ের ধরন- জীবনীমুলক
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২৯২
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ২৪এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত, ক্লিকেবল সূচীপত্র

রাহুল সাংকৃত্যায়ন জীবন ও মূল্যায়ন

 

মহাপন্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন বিংশ শতাব্দীর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনীষীদের অন্যতম। এমন বহুবর্ণময় গতিশীল জীবন, এত বিপুল জ্ঞান ও কর্মের সমন্বিত ব্যক্তিত্ব বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ভাবতে আশ্চর্য লাগে-অসহনীয় কষ্টকে স্বেচ্ছায় বরণ করে যিনি সারাজীবন উড্ডীন পাখির মতো নিরন্তর দেশ বিদেশে পর্যটন করে বেড়িয়েছেন সমাজ ও সভ্যতা, মাটি ও মানুষকে জানা ও চেনার জন্য, এই ধরিত্রির রূপরসকে উপভোগ ও উপলব্ধির জন্য তিনিই আবার বিশ্বের জ্ঞানভান্ডারকে আত্মসাৎ করার দুর্মর চেষ্টায় সমাহিত থেকেছে। আবার, তার লেখনীর নিরন্তর প্রবাহও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দুরন্ত গতিতে অব্যাহত থেকেছে।

উত্তর প্রদেশের সামন্ততান্ত্রিকতার নিগড়বদ্ধ তন্দ্রাবিষ্ট এক গ্রামের বন্ধন ছিন্ন করে বালক বয়সেই তিনি বেরিয়ে এসেছিলেন বিশ্বভূবনের মুক্ত আকাশে বিচরণের দুর্মদ আকাঙ্ক্ষা বুকে নিয়ে। নিশ্চিন্ত সাবলীল জীবন, আত্মীয় পরিজনের অগাধ স্নেহ ভালবাসা তাকে বাঁধতে পারেনি। এই বিস্ময় বালকের স্বেচ্ছায় কপর্দকশূন্য হয়ে ভারত পর্যটন যেমন চিত্তাকর্ষক তেমনি রোমাঞ্চকর। ভারতের এমন কোনো ঐতিহ্যশালী, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থান নেই যা তিনি পরিক্রমা করেননি। হিমালয়ের প্রতি তার ছিল অপার প্রেম। ভারতের প্রকৃতি ও সমাজের অনন্ত বৈচিত্র্যকে তিনি উপলব্ধি করেছেন; আর একের পর এক গ্রন্থে এবং নিজের সুবৃহৎ আত্মকথা—আমার জীবন যাত্রার পাঁচটি খন্ডে তার লিপিচিত্র এঁকে গেছেন।
তার এই পরিব্রাজনবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল এক সর্বগ্রাসী জ্ঞানলিপ্সা। যেখানে যখন গিয়েছেন সেখানকার ভাষা তিনি শিখেছেন। ৩৬টি ভাষা তিনি আয়ত্ত করেছিলেন।
এই স্বশিক্ষিত মহাপন্ডিত অজস্র বিষয়ে অগাধ পান্ডিত্য অর্জন করেছিলেন শুধু নয়, সেই সব বিষয়ে অবিস্মরণীয় গ্রন্থসমূহ রচনা করে গিয়েছেন।
ভারতের প্রাচীন যে-সংস্কৃতি দেশের স্মৃতি থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল, তা পুনরুদ্ধারের যে দুরূহ সংকল্প স্বউদ্যোগে তিনি এককভাবে মাথায় তুলে নিয়েছিলেন তার তুলনা বোধহয় পৃথিবীতে আর নেই। প্রায় নিঃসম্বল অবস্থায় দুর্গম পথ অতিক্রম করে চার চার বার তিনি তিব্বতে গিয়েছেন। এমনকী প্রথমবার যেতে হয়েছিল আত্মগোপন করে। সব মিলিয়ে প্রায় তিন বছর তাকে তিব্বতে থাকতে হয়েছে বৌদ্ধ দর্শনের মহামূল্যবান পুঁথির রত্নভান্ডার উদ্ধারের জন্য প্রায় দুষ্প্রবেশ্য বিহারগুলিতে প্রবেশের অনুমতি সংগ্রহ করতে, ধুলা ময়লার পাহাড় মন্থন করে অমূল্য সংস্কৃত পুঁথির এক বিশাল ভান্ডার আবিষ্কার ও সংগ্রহ করে আনতে। কোনো কোনো গ্রন্থের শত শত পৃষ্ঠার অনুলিপি সেখানে বসে তাকে করতে হয়েছে নিজের হাতে। সবই একক প্রচেষ্টায়। বিপুল সংখ্যক পুঁথি ছাড়াও বহু প্রাচীন চিত্রপট ও অন্যান্য সামগ্রী তিনি ভারতে এনেছে। বিভিন্ন সংগ্রহশালায় তা সংরক্ষিত রয়েছে। এই সব পুঁথির পঞ্জীকরণ, সম্পাদনা, অনুবাদ তিনি কিছু কিছু করেছেন। আজও বিভিন্ন স্থানে নানা পন্ডিত ব্যক্তি তা করে চলেছেন।
এত পরিব্রাজন, অধ্যয়নের মধ্যে তার লেখনীও চলেছে দুর্বার বেগে সারা জীবন ধরে। যখনই তাঁর পায়ের গতির সাময়িক বিরতি ঘটেছে তখনই ছুটেছে কলম বিষয় থেকে বিষয়াস্তরে। উপন্যাস, গল্প, নাটক, সাহিত্য সমালোচনা, ভ্রমণ কাহিনী, জীবনী, আত্মজীবনী, শব্দকোষ, দর্শন, পুরাতত্ব, ইতিহাস, রাজনীতি ইত্যাদি কোনো কিছুই তার রচনাবৃত্তের বাইরে ছিল না। অনেকগুলি ভাষায় তিনি লিখেছেন, কিন্তু হিন্দি ভাষার প্রতি তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। তাঁর মধ্য-এশিয়ার ইতিহাস গবেষণা ভারতের প্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতির মূল অনুসন্ধানে এক অনালোকিত দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। নিরস্তর গতিশীল এই মানুষটির জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার পরিধি যত প্রসারিত হয়েছে তার চৈতন্যের জগতেও ঘটেছে নানা রূপান্তর, বিশ্বাস ও জীবনযাত্রাও হয়েছে পরিবর্তিত। পর্বে পর্বে নিজেকে ভেঙে চুরে নতুন করে গড়ে তুলেছেন তিনি। কেদারনাথ পান্ডে হিসেবে শুরু করেছিলেন জীবন, যৌবনারত্তে তিনি হয়ে গেলেন বৈরাগী সাধু বাবা রামউদার দাস, তা থেকে হলেন আর্য সমাজের প্রচারক। পরবর্তী পর্বে বুদ্ধের জীবন তাকে আকৃষ্ট করে, বৌদ্ধদর্শনে তিনি নিমজ্জিত হন এবং হয়ে ওঠেন বৌদ্ধ ভিক্ষু রাহুল সাংকৃত্যায়ন। কিন্তু প্রথমাবধি তার চিত্তাকাশ লাঞ্ছিত মানবতার প্রতি মমত্বে ভালবাসায় আচ্ছন্ন ছিল। বৌদ্ধ দর্শনের পথ বেয়ে নিপীড়িত মানুষের মুক্তির অন্বেষায় তিনি শেষ পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন মার্কসবাদী দর্শনে। তিনি হলেন বিহারে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ১৯৩৬ সালে তিনি পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন এবং ১৯৩৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরূপেই তিনি শেষ নিঃশাস ত্যাগ করেন। তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে যেমন কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছে তেমনি কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। মার্কসবাদী দর্শন ও কমিউনিস্টরাজনীতি সম্পর্কে নানা পুস্তক রচনা করে তিনি সাম্যবাদী আন্দোলনকে পরিপুষ্ট করেছেন।
এই অনন্যসাধারণ মনীষীর বৈচিত্র্যময় জীবন মুগ্ধ করেছিল ইতিহাসবেত্তা অধ্যাপক প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তীকে। অধ্যাপক চক্রবর্তী কেবল ইতিহাসের একজন প্রাজ্ঞ ও ছাত্রবৎসল অধ্যাপকই ছিলেন না, তার জ্ঞান ও চিন্তার পরিধিও ছিল সুবিস্তৃত। তার ফরাসী বিপ্লব ও য়োরোপের যুদ্ধ : প্রথম দশমাস গ্রন্থ দুখানি ইতিহাস গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সংযোজন। বিশেষভাবে স্মরণীয় তার দীর্ঘ গবেষণার ফসল—দি মার্জিনাল মেন। পূর্ববঙ্গের বাস্তুহারাদের জীবন, সংগ্রাম ও সংগঠনের ইতিহাস নিয়ে এমন মহাকাব্যিক গ্রন্থ আর রচিত হয় নি। বইখানিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রবীন্দ্র পুরস্কার দিয়ে অভিনন্দিত করেছেন।


*এছাড়া আপনারা তাঁর নিজের লেখা আত্মজীবনী বই- 'আমার জীবন যাত্রা' (পাঁচটি খন্ড) পড়তে পারেন।

রাহুল সাংকৃত্যায়নের ভোলগা থেকে গঙ্গা, মানবসমাজ, বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদ ইত্যাদি অনেকগুলি বই বহুদিন যাবৎ বাঙালি পাঠকের কাছে আদৃত। সাম্প্রতিককালে তাঁর আমার জীবনযাত্রা(৫ খণ্ড) অনেকেই পড়েছেন।

এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এই পোষ্ট হইতে অসাধারণ একটি জীবনী গ্রন্থ 'রাহুল সাংকৃত্যায়ন জীবন ও মূল্যায়ন' এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment