একান্নপীঠের সাধক - নিগূঢ়ানন্দ পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Tuesday, February 1, 2022

একান্নপীঠের সাধক - নিগূঢ়ানন্দ পিডিএফ


 একান্নপীঠের সাধক - নিগূঢ়ানন্দ, হিন্দু ধর্মীয় বই
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'একান্নপীঠের সাধক'
লেখক- নিগূঢ়ানন্দ
বইয়ের ধরন- হিন্দু ধর্মীয় বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২১৪
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১৪এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত, ক্লিকেবল সূচীপত্র 

একান্নপীঠের সাধক - নিগূঢ়ানন্দ



একান্নপীঠ একটা প্রবল কৌতূহলের বিষয় শাক্তদের কাছে। এই একান্নপীঠের গল্প কথা আমরা সবাই জানি। দক্ষযজ্ঞে দক্ষকন্যা সতী শিবনিন্দা শুনে করেছিলেন দেহত্যাগ। দক্ষযজ্ঞ ধ্বংস করে শোকে মুহ্যমান শিব সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে গেলেন ভারত পরিক্রমায়, বিষ্ণু তাঁর সুদর্শনচক্র দিয়ে সেই দেহ কেটে দিলেন টুকরো টুকরো করে। উদ্দেশ্য শিবকে মৃত পত্নীর দেহ থেকে মুক্ত করা। বিষ্ণুচক্রে বিচ্ছিন্ন হয়ে সতীর দেহ ভারতের একান্নটা স্থানে পড়েছিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে। যেসব স্থানে পড়েছিল সতীদেহের এইসব নানা অংশ সেইসব স্থানে শিবও বিরাজ করতে লাগলেন ভৈরব হয়ে লিঙ্গরূপে। শিবশক্তির উপাসকদের কাছে এইসব তীর্থস্থান অতি পবিত্র। দক্ষযজ্ঞের এ কাহিনী নিয়ে নানা মত আছে, ঐতিহাসিকদের নানা ব্যাখ্যা। সে-সব ব্যাখ্যায় আমাদের প্রয়োজন নেই। তবে একটি প্রশ্ন বড় প্রশ্ন। সে প্রশ্ন এই যে, এই একান্নপীঠ কি কেবলমাত্র মাতৃপূজারী অর্থাৎ শক্তি পূজারীদেরই স্থান, না অন্যান্য ধর্মপিয়াসী ও মুক্তি পিয়াসীদেরও তীর্থক্ষেত্র। হিন্দুদের মধ্যে দেবতার উপাসক হিসেবে তিনটি শ্রেণী খুবই বিখ্যাত—বৈষ্ণব, শৈব ও শাক্ত। অন্যান্য দেবতাদের নামে এবং গুরুদের নামেও যে উপাসক সম্প্রদায় নেই তা নয়। কিন্তু তারা তেমন প্রবল নয়, একমাত্র দাক্ষিণাত্যে গণপতি বা গণেশের উপাসক সম্প্রদায় ছাড়া। সুতরাং এই সব শাক্তপীঠে কারা যান তীর্থ করতে? কারা যান সাধনা করতে ?
শাক্তপীঠে সাধনার ধারা হল তন্ত্রমতে। তন্ত্র জিনিসটাই শৈবদের দান। শাক্তরাও তন্ত্রপথের পথিক। বৈষ্ণবরাও যে তন্ত্রহীন তা নয়। এমন কি জৈন ও বৌদ্ধধর্মেও তন্ত্র আছে। পরবর্তীকালে বৌদ্ধধর্মেও তন্ত্রের প্রভাব পড়েছিল এত যে, বলা যায় না। ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে বিচার করলে মনে হয়, বৌদ্ধতন্ত্র, শৈবতন্ত্রের সঙ্গে এমন ভাবে মিশে গিয়েছিল যে, দুইয়েকে ভিন্ন করাই কষ্টকর। তাছাড়া বৌদ্ধরাও গৌতম বুদ্ধের শক্তি হিসেবে কল্পনা করেছিলেন নানা শক্তিমূর্তি—যেমন প্রজ্ঞাপারমিতা, তারা ইত্যাদি। এখন কথা, কারা ঐ শাক্তপীঠের সাধক ? শুধুমাত্র যারা কালী, দুর্গা প্রভৃতি হিন্দু শাক্তদেবীতে বিশ্বাস করেন তারাই, না আরও কেউ? তন্ত্রপীঠে যাঁরা তন্ত্রমতে সাধন করেন তাদের তন্ত্রের ধারা শৈব শাক্ত দুইয়ের ক্ষেত্রেই এক। শৈব চান পরমপুরুষ শিবের স্পর্শ পেয়ে মুক্তি লাভ করতে। সে জন্য দেহের ষটচক্র ভেদ করে তারা লিঙ্গমুলের নিকটবর্তী চেতনাকে উর্ধ্বে সহস্রায়ে নিয়ে যান। শাক্তরা মনে করেন লিঙ্গমুলের কাছে মূলাধারে শক্তি আছেন ঘুমিয়ে, তাঁকে জাগরিত করে সহস্রায়ে নিয়ে গেলেই হয় সিদ্ধিলাভ। শক্তি উপাসনার কোন মূল্যই নেই যদি না শিবশক্তির মিলন ঘটানো যায় দেহের অভ্যন্তরে। নানামত নানাপথে সেই এক দিকেই এগোন শৈব এবং শাক্ত সাধকেরা। বৈষ্ণবদের মধ্যেও তন্ত্র আছে। পুরুষের গুণ হিসেবে শক্তিরূপা দেবী আছেন। কিন্তু তাঁদের সাধনা নয় শাক্ত ও শৈবদের মত। তাদের পীঠ, তাদের তীর্থক্ষেত্র আলাদা। মূলতঃ শাক্তপীঠের সাধক হলেন শৈব এবং শাক্ত উভয়েই। সুতরাং একান্নপীঠের সাধকদের আলোচনাপ্রসঙ্গে শাক্ত ও শৈবদের উপরই মূলত নির্ভর করতে হবে আমাদের। যদিও অন্যান্য সাধনার ধারাও টিকে আছে এই তান্ত্রিক সাধকদের মধ্যে। মুখে কালী কালী তারা তারা বললেই যে শাক্তসাধক তা নয়—যেমন ধরুন, তারাপীঠের তারা মূলতঃ বৌদ্ধদেবী। তেমনই অনেক স্থানে মহাকালীর রূপও এসেছে বৌদ্ধতন্ত্র থেকে। আবার তারকেশ্বরের শিবসাধনায় ‘ভোলে বাবা পার করেগা' বললেই শিবসাধক হওয়া যায় না। কারণ তারকেশ্বরের শিব হলেন নাথপন্থীদের জটেশ্বর শিব। পরে হয়েছেন তারকনাথ শিব। এই নাথপন্থীরা মূলতঃ ছিলেন বৌদ্ধ। অন্ততঃ হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর তাই অভিমত। সুতরাং, শাক্তপীঠ বা শাক্তপীঠের সাধকের চরিত্র নিরূপণ করা দুরূহ ব্যাপার।


* প্রিয় পাঠকগণ, নিগূঢ়ানন্দের আরো বই সংগ্রহ করুন-
 > মহাতীর্থ একান্ন পীঠের সন্ধানে
 > সর্পতান্ত্রিকের সন্ধানে
 > মৃত্যু ও পরলোক
 > দিব্য জগৎ ও দৈব-ভাষা
 > দেবতা দর্শন


তন্ত্র সাধনার নানা ধারা আছে ভারতবর্ষে। এই সব নানা ধারার তন্ত্রসাধকই সাধনা করেছেন শাক্তপীঠে। সুতরাং একমাত্র শক্তির উপাসকই যে শাক্তপীঠের সাধক তা নয়। ভিন্নপথের সাধনপন্থী হয়তো সাধনা করেছে একান্নপীঠে, সুতরাং একান্নপীঠের সাধকদের আলোচনা কালে তাঁদেরও নাম এসে যেতে পারে অবধারিত রূপেই। বৈষ্ণব বাদে (অবশ্য বৈষ্ণবদের মধ্যেও অনেকে যে শাক্ত পীঠে সাধনা করেননি তা নয়) শৈব, দশনামী, দণ্ডী, সন্ন্যাসী-(যাঁদের মধ্যে আছেন অবধূত, নাগা, আলেখিয়া, দঙ্গলী, অঘোরী, অবধুতানী, ব্রহ্মচারী, যোগী ইত্যাদি) শাক্ত (যাদের মধ্যে আছেন পশ্বাচারী, বীরাচারী ইত্যাদি) অসংখ্য শ্রেণীর সন্ন্যাসীই সাধনা করেছেন এই পীঠে। এমনকি বৌদ্ধ মতে বিশ্বাসীরাও যে সাধনা করেননি এসব তীর্থে তা বলা যায়না জোর করে। সুতরাং একান্তপীঠের সাধকদের আলোচনা প্রসঙ্গে কোন জাতীয় সাধকের আলোচনা হবে সে-কথা বলা দুষ্কর। তাছাড়া এই সব পীঠের কোন্ পীঠ থেকে আরম্ভ করা হবে সাধকদের কাহিনী সেকথা বলায়ও অত্যন্ত অসুবিধা। সাধু সন্ন্যাসীর দেশ ভারতবর্ষে অসংখ্য সাধু সন্ন্যাসীর শেষ নেই। তাঁদের মধ্যে প্রতারক জোচ্চোর আছে অনেকেই, আবার যথার্থ সাধু সন্ন্যাসীও আছেন বহু জনেই। এঁদের খুঁজে বের করে পরিচিত করা আকাশের এক একটি নক্ষত্রকে চিহ্নিত করার মতনই অসম্ভব। তাছাড়া বড় অসুবিধা এই যে, অনেকেই বিশেষ একটি শ্রেণীর নামেই চিহ্নিত, স্বতন্ত্র নাম নিয়ে নেই, যেমন অঘোর বাবা, পরমহংস অবধূত ইত্যাদি। সেজন্য এইসব পার্থিব জগৎ সম্পর্কে উদাসীন শ্মশানচারী, প’হারী, স্বল্পহারী, মৌনী, স্বল্পবাকৃ ইত্যাদি সাধকদের জীবনী আলেখ্য রচনা করাও কঠিন। বিশেষকরে শ্মশানচারী সন্ন্যাসীদের সম্পর্কে তথ্য আহরণ করা অসম্ভব। তা ছাড়া এক একটি পীঠে অসংখ্য পুণ্যপ্রয়াসী সাধক করেছেন সাধনা। সুতরাং প্রত্যেকটি পীঠে প্রত্যেকটি সন্ন্যাসী সম্পর্কে আলোচনা করা সাধ্যের অতীত। প্রতিনিধি স্থানীয় দু'একজন যাঁদের সম্পর্কে জানা যায়, যাঁরা অলৌকিক ক্ষমতাবলে চমক সৃষ্টি করেছিলেন তাঁদের সাধক জীবনে, তাঁদের সম্পর্কেই মাত্র করা যেতে পারে আলোচনা। এছাড়া পীঠে পীঠে সাধনপ্রয়াসী সন্ন্যাসীদের আছে বিচিত্র বিশ্বাস। তাঁরা মনে করেন, যত সম্ভব বেশী পীঠে সাধনা করাতেই সার্থকতা। যেমন শাক্ত তান্ত্রিকেরা মনে করেন যে, একান্ন পীঠে সাধনা করা তাঁদের পক্ষে অবশ্য কর্তব্য। সেদিক থেকে ধরতে গেলে অধিকাংশ সন্ন্যাসীই প্রায় সর্বতীর্থের সাধক। শাক্তেরা প্রায় অধিকাংশই ভ্রমণ করেছেন একান্নপীঠে। ফলে কোন এক সাধকের নাম যদি একটি পীঠে করা যায় তাহলে তিনি যে অন্য পীঠে ছিলেন না এমন অনুমান করা অনুচিত। সেইজন্য একান্নপীঠর সাধক সম্পর্কে আলোচনা করতে যাওয়া জটিল একটা সমস্যার ব্যাপার। তবু সেই দুঃসাহসে ব্ৰতী হচ্ছি প্রকাশকের ইচ্ছাতে, বিশেষ শ্রদ্ধাভাজন জনৈক তন্ত্রসাধকের প্রেরণায় এবং পুণ্যসঞ্চয়কারীদের মধ্যে অনেকের কৌতূহলের তাড়নায়। এই মহাব্ৰত উৎযাপন করতে পারব কিনা জানি না। আমি চিরকালই বিশ্বাস করি, আমাদের সচেতন ইচ্ছার পেছনে আছে আর এক ইচ্ছা। সে ইচ্ছ যিনি পরিচলনা করেন তিনিই হলেন ইচ্ছাময়ী। তার ইচ্ছার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে হাত দিচ্ছি এই দুরূহ কাজে। ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছাই পূর্ণ হবে।

সূচীপত্র-
করতোয়াতটের সাধক
বক্রেশ্বরের অঘোরী বাবা
জ্বালামুখীর ভৈরবী
কামরূপ কামাখ্যার পিশাচসিদ্ধ
বৃন্দাবনের আয়েঙ্গার বাবা
মণিকর্ণিকার রহস্যময় সাধক


এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন

অরিজিনাল পিডিএফ সোর্স- এখানে
হার্ড কপি সংগ্রহ- এখানে
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা হিন্দু ধর্ম সম্পর্কিত বই 'একান্নপীঠের সাধক - নিগূঢ়ানন্দ' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন

No comments:

Post a Comment