গীতায় ঈশ্বরবাদ - হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, হিন্দু ধর্মীয় বই পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Sunday, January 30, 2022

গীতায় ঈশ্বরবাদ - হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, হিন্দু ধর্মীয় বই পিডিএফ


 গীতায় ঈশ্বরবাদ - হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, হিন্দু ধর্মীয় বই pdf
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'গীতায় ঈশ্বরবাদ'
লেখক- হীরেন্দ্রনাথ দত্ত
বইয়ের ধরন- হিন্দু ধর্মীয় বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৩৭৪
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১৮এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত,

গীতায় ঈশ্বরবাদ - হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, হিন্দু ধর্মীয় বই pdf

গীতা অতি অপূৰ্ব গ্রন্থ। জগতের সাহিত্যে এরূপ উৎকৃষ্ট ও উপাদেয় গ্রন্থ আর দ্বিতীয় নাই। গীতার আয়তন বৃহৎ নহে—গীতাতে মাত্র সাত শত শ্লোক ; তথাপি গীতা সৰ্ব্বধৰ্ম্মের সার, সকল শাস্ত্রের সারাৎসার। যেমন সমুদ্রমন্থনে অমৃত উৎপন্ন হইয়াছিল, তেমনি শাস্ত্ৰসমুদ্র মথিত হইয়া এই গীতামৃত উল্থিত হইয়াছে। সেই জন্যই প্রাচীনেরা বলিয়াছেন-
গীতা সুগীতা কর্ত্তব্যা কিমনৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ।
'গীতা সুগীতা করা উচিত; অন্য বিস্তর শাস্ত্রে প্রয়োজন কি ?'
গীতার একটা বিশেষত্ব—ইহার সার্বভৌমতা গীতায় সাম্প্রদায়িকতা অথবা সঙ্কীর্ণতার লেশমাত্র নাই। সেই জন্য সকল শ্রেণীর দার্শনিক, সকল সম্প্রদায়ের সাধক গীতাকে সমান আদরের চক্ষে দেখেন। গীতা বিশ্বতোমুখ গ্রন্থ। কি কৰ্মী, কি জ্ঞানী, কি যোগী, কি ভক্ত, সকলেরই পক্ষে গীতা তুল্য উপাদেয়।
এরূপ হইবার প্রধান কারণ –গীতার ব্যঞ্জনা-শক্তি। গীতায় একাধারে সকল সার সত্যের সমাবেশ দৃষ্ট হয়। গীতা সত্যের সূৰ্য্যস্বরূপ। সূৰ্যে যেমন সকল বর্ণের সমন্বয় -সেইজন্য যে ফুল যে বর্ণ প্রতিফলিত করিতে সমর্থ, সূর্যকিরণে সে ফুল সেই বর্ণ ধারণ করে। সূৰ্য্য যদি সৰ্ব্ব বর্ণের সমন্বয় না হইয়া, নীল, পীত বা হরিৎ হইতেন, তবে ভিন্ন রঙের পুষ্প সে আলোকে প্রকাশিত হইতে পারিত না। সেইরূপ গীতা যদি সমস্ত সার সত্যের সমন্বয় না করিয়া সত্যের একদেশ বা অংশ মাত্র প্রকটিত করিতেন, তবে কি গীতার শুভ্রালোকে বিশ্বজনের চিত্ত উদ্ভাসিত হইতে পারিত?
দেশে ও বিদেশে এই গীতাগ্রন্থ নানাজনে নানাভাবে আলোচনা করিয়াছেন; তথাপি এখনও গীতাসম্বন্ধে চরম কথা বলা হয় নাই। কখনও হইবে কিনা, জানি না। কারণ যে গ্রন্থসম্বন্ধে উক্ত হইয়াছে-
ব্যাস বেত্তি ন বেত্তি বা
‘ব্যাসদেব হয় ত জানেন, কিংবা তিনিও জানেন না', সে গ্রন্থের রহস্যোদঘাটন মনুষ্যের সাধ্যায়ত্ত নহে। বস্তুতঃ গীতার শুভ্রজ্যোতিঃ আমরা দৃষ্টিগোচরেই আনিতে পারি না। কারণ, আমরা নিজ নিজ শিক্ষা ও সংস্কারের বশে গীতাকে রঙ্গিল কাচের মধ্য দিয়া দেখি ; তাহার ফলে গীতার শুভ্রজ্যোতিঃ রঞ্জিত হইয়া আমাদের চক্ষে প্রতিভাত হয়। আমাদের প্রত্যেকেরই চক্ষের উপর ঐ রঙ্গিল কাচ রহিয়াছে.; অতএব আমরা যে কখনও গীতার মৰ্ম্মোদঘাটন করিতে পারি, তাহার সম্ভাবনা অল্প।
এ দেশে বহুকাল হইতে নানা দর্শনশাস্ত্র প্রচলিত আছে। তাহাতে ধীমান দার্শনিকগণ বুদ্ধির দ্বারা সত্যনির্ণয় করিবার প্রয়াস করিয়াছেন। আধুনিক পণ্ডিতগণও দৃঢ়তার সহিত ঐ পথেই বিচরণ করিতেছেন। তাঁহারা কোনদিন গন্তব্যস্থানে পঁহুছিতে পারিবেন কি না, সন্দেহ হয়। কারণ, সত্যনির্ণয়ের পথ ইহা নহে। দার্শনিকের সম্বল তর্ক, তর্কের ফল—বাদ, জল্প, বিতণ্ডা, কলহ। কিন্তু তর্কের দ্বারা কখনও সত্যনির্ণয় হয় না। শ্ৰতি বলিয়াছেন-
নৈষ' তর্কেণ মতিয়াপনেয়া
'তর্কের দ্বারা তত্ত্বজ্ঞান লাভ হয় না।'
ভগবান্ বাদরায়ণও ব্রহ্মসূত্রে তর্কের অপ্রতিষ্ঠা থ্যাপন কবিয়াছেন।
তর্ক প্রতিষ্ঠানাদপ্যন্যথানুমেয়মিতি চেদেবমপ্যবিমোক্ষপ্রসঙ্গঃ।-ব্ৰহ্মসূত্র ২।১।১১।
ইহার ভাষ্যে শ্ৰীশঙ্করাচাৰ্য্য লিখিয়াছেন, লোকে বুদ্ধির উপর নির্ভর করিয়া যে তর্ক উত্থাপন করে, সে তর্কের প্রতিষ্ঠা নাই। কারণ, এক বুদ্ধিমানের অনুমোদিত তর্ক, অপর বুদ্ধিমান্ নিরাশ করেন। পক্ষান্তরে, তাঁহার তর্কও তৃতীয় বুদ্ধিমান্ কর্তৃক খণ্ডিত হয়। অতএব তর্কের শেষ কোথায় ?
সেইজন্য শাস্ত্রকারদিগের উপদেশ এই, অচিন্ত্য চরমতত্ত্বের বিচারস্থলে তর্কের প্রয়োগ করিবে না।।
ঋষিদিগের অনুমোদিত সত্যনির্ণয়ের প্রণালী, দার্শনিকের প্রণালী হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। সে প্রণালীর ক্রম—শ্রবণ, মনন ও নিদিধ্যাসন। যে সকল সত্য চরম সত্য, ( যাহাদিগকে হার্বাট স্পেন্সার অজ্ঞেয়ের কোটাতে ফেলিয়াছেন।) সে সকল সত্য কখনও প্রত্যক্ষ অথবা অনুমানের বিষয় হইতে পারে না। আমাদের এরূপ কোন ইন্দ্রিয় নাই, যাহার দ্বারা আমরা চরমসত্যকে প্রত্যক্ষ করিতে পারি। অনুমান প্রত্যক্ষমূলক। আমাদের সাধ্য কি যে, আমরা তর্ক ও যুক্তি দ্বারা চরমসত্যের অবধারণ করিব ? অতএব, সাধারণ মনুষ্যের পক্ষে চরমসত্যনির্ণয়ের একমাত্র উপায় আপ্তবাক্য। আপ্ত অর্থে ভ্ৰম প্ৰমাদশূন্য পুরুষ,—যিনি তত্ত্বদৃষ্টি  দ্বারা চরমসত্যের সাক্ষাৎ লাভ করিয়াছেন। তাঁহার উপদেশই আপ্তবাক্য।
ঋষিরা আপ্ত; সেইজন্য তাঁহাদের প্রচারিত শ্রুতিস্মৃতি প্রভৃতি শাস্ত্রই চরমসত্যনির্ণয়ের একমাত্র প্রমাণ। সেই শাস্ত্ৰবাক্য শ্রবণ করিতে হইবে, এবং সেই শ্রুত বাক্যসমূহের পরস্পর সমন্বয় করিয়া ‘মনন' করিতে হইবে; পরে তৎসম্বন্ধে একান্ত ও একাগ্রচিত্তে ধ্যান ( নিদিধ্যাসন) করিতে হইবে , তবেই সত্যনির্ণয় হইবে। ইহাই ঋষিগণের অনুমোদিত সত্যনির্ণয়ের প্রণালী।
শ্রোতব্যঃ শ্রুতিবাক্যেভ্যো মন্তব্যশ্চোপপত্তিতিঃ।
মত্বা চ সততং ধ্যেয় এতে দর্শনহেতবঃ।।
‘শ্রুতিবাক্য শ্রবণ করিবে। যুক্তির দ্বারা মনন করিবে। পরে সতত ধ্যান করিবে। এইরূপে (সত্যের) দর্শনলাভ হয়।
এই গ্রন্থে লেখক যথাসাধ্য ঐ প্রণালীরই অনুসরণ করিতে চেষ্টা করিয়াছে। কারণ, লেখকের বিশ্বাস যে, গীতার প্রকৃত মৰ্ম্ম গ্রহণ করিতে হইলে, কেবল তর্কযুক্তির আশ্রয় লইলে চলিবে না। গীতা শ্রদ্ধাসহকারে শ্রবণ করিয়া তাহার অর্থ মনন করিতে হইবে এবং পরে একাগ্র ও নিবিষ্ট হইয়া তাহার মর্ম নিদিধ্যাসন করিতে হইবে; তবেই কঞ্চিৎ গীতার সারসত্য আমরা হৃদয়ঙ্গম করিতে সমর্থ হইব।

এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা হিন্দু ধর্মীয় বই 'গীতায় ঈশ্বরবাদ - হীরেন্দ্রনাথ দত্ত' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন

No comments:

Post a Comment