সুকুমার রচনাবলী (এক খন্ডে সমগ্র রচনা) পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'সুকুমার রচনাবলী' (এক খন্ডে সমগ্র রচনা)
লেখক- সুকুমার রায়
সম্পাদনা- প্রফুল্ল কুমার পাত্র
বইয়ের ধরন- রচনাবলী
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৬৬৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৫৮এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
সম্পাদকের কথা-
১৮৮৭ সালে সুকুমার রায়ের জন্ম হয়। পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়। মাতার নাম বিধুমুখী দেবী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম মেয়ে। উপেন্দ্রকিশোরের বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় আমরা দেখতে পাই লেখায়, গানে ও তাঁর মুদ্রণের কাজে। ১৮৯৫ সালে উপেন্দ্রকিশোরের চেষ্টায় বিলেত থেকে নিজের খরচে তখনকার আধুনিকতম যন্ত্রপাতি আনিয়ে নিজের প্রেস চালু করেন। প্রেসের নাম দিয়েছিলেন ইউ. রায় এন্ড সন্স।
সুকুমার রায় ছিলেন বড় ছেলে স্বনাম ধন্য পুরুষ। মাত্র ছত্রিশ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে যে অপূর্ব রসের সৃষ্টি করে গেছেন, তার তুলনা নেই। ভাষাতত্ত্ব বিষয়েও তাঁর অপূর্ব প্রতিভা ছিল এবং ছবি আঁকার বিষয়ে তাঁর জুড়ি মেলা দায়, সেই সব যাঁরা শুনতেন তারা দীর্ঘকাল পরেও বলতেন এমন, সহজ, সুন্দর ও সরল করে কম লোকই গল্প বলতে পারে। একবার শুনলে সকলেই মনে রাখতে পারে, মনের মধ্যে রসবোধ আপনিই তৈরী হয়ে যায়, এমনি অপূর্ব লেখা। আসলে এ হলো শ্রেষ্ঠ শিক্ষার নিয়ম। তাঁর একমাত্র স্বনাম ধন্য সন্তান বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিত রায়। যাকে বর্তমান জগতে এক ডাকে ছোট বড় সকলেই চেনে। উপেন্দ্রকিশোরের দুই ছেলে তিন মেয়ে। রবীন্দ্রনাথের রাজর্ষি উপন্যাস থেকে সুকুমার ও সুখলতার নাম রাখা হয়েছিল তাতা ও হাসি।
সুকুমার রায়ের পড়াশুনা কলকাতাতেই হয়। মুকুল পত্রিকায় প্রকাশিত দুটি বাল্যরচনা ছাড়া ছাত্রাবস্থায় সুকুমার রায়ের সাহিত্য রচনায় কোন নজির পাওয়া যায় না। কলেজ ছাড়ার কিছুদিনের মধ্যেই “ননসেন্স" ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হয়, আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধব নিয়ে গঠিত এই ক্লাবের জন্য লেখা দুটি নাটক ঝালাপালা ও লক্ষণের শক্তিশেল এইক্লাবের পত্রিকা সাড়ে-বত্রিশ ভাজা-র পাতায় সুকুমার রায়ের হাস্যরসের প্রথম আভাস বেশ ভালভাবেই পাওয়া যায়।
রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞানের ডাবল অনার্স নিয়ে বি এস. সি. পাশ করার পাঁচ বছর পরে ১৯১১ সালে সুকুমার রায় মুদ্রণশিল্পে উচ্চ শিক্ষার জন্য তাঁর বাবা বিলেতে পাঠান। এর এক বছর পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বিলেতে গিয়ে উপস্থিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর ইংরাজীতে গীতাঞ্জলির পাণ্ডুলিপি। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন উপেন্দ্র কিশোরের বন্ধু ও সমবয়সী, সেজন্য সুকুমার রায় রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে আসতে কোন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি। সুকুমার এই সময় ইংরাজিতে ‘দ্য স্পিরিট অব রবীন্দ্রনাথ’ নামে একটি স্বরচিত প্রবন্ধ কোয়েস্ট সোসাইটির একটি অধিবেশনে পাঠ করে বিস্ময়ের উদ্রেক করেন এবং খুব বাহবা লাভ করেন।
১৯১৩ সালের মে মাসে উপেন্দ্রকিশোরের সম্পাদনায় সন্দেশ পত্রিকা প্রকাশিত করেন, এর কিছুদিন পরেই সুকুমার রায় দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরেই সন্দেশ পত্রিকায় তাঁর লেখা ও ছবি প্রকাশিত হতে থাকে।
উপেন্দ্রকিশোরের ছোটদের অনেক সুন্দর সুন্দর লেখা প্রকাশিত হওয়ার জন্য সুকুমারের লেখা তেমন বেশী পত্রিকায় প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে উঠত না। উপেন্দ্রকিশোরের ও হাস্যরসিক হিসাবে খুব নাম ছিল।
সুকুমার রায়ের সাহিত্য প্রতিভার বিষয় জানতে পারলেও তার পূর্ণ বিকাশ দেখে যেতে পারেন নি। ১৯১৫ সালে বাহান্ন বছর বয়সে উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয়। তার ফলে সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার কাজ স্বভাবতই সুকুমারের উপর পড়ে।
ঠিক এমনি সময়ে মণ্ডে ক্লাব প্রতিষ্ঠা হয়। তখনকার অনেক তরুণ শিল্পী সাহিত্যক, শিক্ষাবিদকে নিয়েই এই ক্লাব প্রতিষ্ঠা হয়। এই ক্লাবে সব রকমেরই আলোচনা হত। এখানে গান, বাজনা, আড্ডা, আমোদ, ভোজ, পিকনিক এমন কি, প্লেটো নীটশে থেকে শুরু করে বঙ্কিম, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ এবং ধর্ম বিষয়েও আলোচনা হত। ক্লাবের মধ্যমণি ছিলেন সুকুমার রায়। ক্লাবের বিজ্ঞপ্তি ছাপা হত সুকুমার রায়ের প্রেসে। তার ভাষা ছিল সুকুমার রায়ের নিজের ভাষা, ক্লাব সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে একবার সভ্যদের কাছে ছাপা সে পোস্টকার্ড গেল। সেই পোস্ট কার্ডে লেখা হল—
সম্পাদক বেয়াকুব কোথা যে দিয়েছে ডুব
এদিকেতে হায় হায় ক্লাবটি যে যায় যায়
তাই বলি সোমবারে মদগৃহে গড়পারে
দিলে সবে পদধূলি ক্লাবটিরে ঠেলে তুলি,
রকমারি পুঁথি যত নিজ নিজ রুচি মত
আনিবেন সাথে সবে কিছু কিছু পাঠ হবে।
-করজোড়ে বার বার নিবেদিছে সুকুমার।
সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার সময় সুকুমার রায়ের শিশু সাহিত্য দিন দিন নব কলেবর বৃদ্ধি হতে লাগল, যেমনি চিত্তাকর্ষক তেমনি লোভনীয়। শুধু গল্প, কবিতা নয়—নানান বিষয়ে চিত্তাকর্ষক প্রবন্ধ, সারা বিশ্বের নানান খবর দেশ-বিদেশের উপকথা, ধাঁধা, নাটক, হেঁয়ালি প্রভৃতিতে সন্দেশ পত্রিকা ভরপুর। সে সময়কার সন্দেশ পত্রিকা না দেখলে তা কারো পক্ষেই ধারণা করা দুঃসাধ্য। লেখার দ্বারা ওর ঐ পত্রিকার বিশ্লেষণ করা সত্যই দুঃসাধ্য।
সুকুমার রায়ের কোন রচনাই তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত হয় নি। বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য মুদ্রিত ক্ষুদ্রকায় পুস্তিকা অতীতের ছবি বাদ দিলে সুকুমার রায়ের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘আবোল তাবোল' প্রকাশ কাল ১৯শে সেপ্টেম্বর ১৯২৩ সাল। প্রকাশক ইউ রায় অ্যাণ্ড সন্স, ১০০ গড়পার রোড, কলিকাতা। অর্থাৎ সুকুমার রায়ের মৃত্যুর ঠিক নয় দিন পর। ১৯২৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে সুকুমার রায়ের মৃত্যু হয়। ছাপা বই না দেখে গেলেও তার তিনরঙা মলাট তার অঙ্গসজ্জা পাদপূরক দুচার লাইনের কিছু ছড়া, টেলপিসের ছবি ইত্যাদি সবই তিনি করে গিয়েছিলেন শয্যাশায়ী অবস্থায়।
১৯১৫ থেকে ১৯২৩ পর্যন্ত আট বছর সুকুমার রায় সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। তার মধ্যে শেষের আড়াই বছরের অধিকাংশ সময়ই রোগশয্যায় শায়িত ছিলেন। কিন্তু এই অবস্থাতেও তিনি শুয়ে শুয়ে যতটা পারতেন করতেন। শুধু লেখা নয় ছাপার বিষয়েও সেই অবস্থায় অনেক ভাবনা চিন্তা করে গেছেন। তার প্রমাণ তাঁর নোটবুকে তাঁর আবিষ্কৃত কয়েকটি মুদ্রণ পদ্ধতির তালিকা রয়েছে। এগুলি পরিকল্পনা ছিল কিন্তু কাজে লাগাতে পারেন নি। লেখা ও আঁকার দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ কীর্তির নিদর্শন প্রায় সবই সেই শেষ আড়াই বছরে, ১৯২২ সালে হ-য-ব-র-ল লেখা হয়। তাঁর শেষ রচনা ছিল আবোল তাবোলের শেষ কবিতা ‘আবোল-তাবোল”। উপেন্দ্রকিশোরের বহুমুখী প্রতিভার গুণে তাঁর ছেলে মেয়েরাও তেমনি সমস্ত গুণই পেয়েছিলেন। কোন বিষয়েই বাপের কম ছিলেন না। সুকুমার রায় যদি আর কিছু দিন পৃথিবীতে থাকতেন তবে আমরা তার কাছ থেকে অনেক কিছুই লাভ করতে পারতাম। কিন্তু সে সৌভাগ্য থেকে আমরা আজ চিরতরে বঞ্চিত।
এই রচনাবলীতে যাকিছু রয়েছে-
আবোল তাবোল,খাই খাই অন্যান্য কবিতা, অতীতের ছবি,
পাগলা দাশু, হ য ব র ল,বহুরূপী,নাটক,অন্যান্য
গল্প,বাল্যরচনা, জীবজন্তু,জীবনী ও বিবিধ
এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা এক খন্ডে সমগ্র রচনা 'সুকুমার রচনাবলী' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন
No comments:
Post a Comment