শিক্ষামুখী মনোবিজ্ঞান - শ্যামাপ্রসাদ চট্টোরাজ বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'শিক্ষামুখী মনোবিজ্ঞান'
লেখক- শ্যামাপ্রসাদ চট্টোরাজ
বইয়ের ধরন- বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষামুলক বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৭৪৫
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৪৩এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
মনোবিজ্ঞান কথাটির সঙ্গে বিজ্ঞান কথাটি যুক্ত ব'লে আমরা মনোবিজ্ঞানকে একটি বিজ্ঞান হিসেবে ধরে নিতে পারি। কিন্তু এই বিজ্ঞান অপেক্ষাকৃত নবীন। বিভিন্ন বিজ্ঞানের আবির্ভাবের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়—জ্যোতির্বিদ্যাই বোধ হয় প্রথম বিজ্ঞান। তারপর আসে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, তারও পরে জীব বিজ্ঞান। মনবিজ্ঞানের আবির্ভাব অনেক পরে এবং সম্ভবতঃ উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে মনোবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৮৭৯ সালে লিপজিগ সহরে মিঃ ভুণ্ড কর্তৃক প্রথম মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠিত হয়।
এক একটি বিজ্ঞান এক একটি বিশেষ জাতীয় বিষয় বা বস্তুর সম্বন্ধে আলোচনা করে। পৃথক বিজ্ঞান হিসাবে মনোবিজ্ঞানেরও একটি পৃথক বিষয়
ক্ষেত্র থাকা স্বাভাবিক। এখন দেখা যাক এই বিজ্ঞানের বিষয় কি? মনোবিজ্ঞানের ইংরেজী প্রতিশব্দটি হল—Psychology, দুটি গ্রীক শব্দ নিয়ে Psychology কথাটির উৎপত্তি। একটি হ’ল ‘Psyche' যার অর্থ হল ‘soul' বা আত্মা; আর অপরটি হল-'logos' বা science যার অর্থ
হ’ল বিজ্ঞান। সুতরাং এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হ’ল-আত্মার বিজ্ঞান। কিন্তু এই সংজ্ঞাটি দর্শন-শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মাহের (Maher) যা বলেছেন, তা হ’ল-“মনোবিজ্ঞান হল দর্শনের সেই শাখা যা মানুষের মন বা আত্মা নিয়ে আলোচনা করে।” এই জাতীয় দার্শনিক মনোবিজ্ঞানীদের কাজ আত্মার উৎপত্তি, স্বরূপ ও পরিণতি নিয়ে আলোচনা করা।
পরবর্তী মনবিজ্ঞানীরা কিন্তু উপরোক্ত সংজ্ঞাটি মেনে নিতে পারলেন না। মনোবিজ্ঞানকে আত্মার বিজ্ঞান হিসাবে ধরে নেওয়া যেতে পারে না বলেই তারা মনে করলেন এবং তার সপক্ষে তাঁরা কতকগুলি যুক্তি দেখালেন। মোটামুটি ভাবে তাদের বক্তব্য ছিল-
(১) আত্মার বিজ্ঞান বললে মনোবিজ্ঞানকে দর্শন ও অধিবিদ্যার (Metaphysics) শাখা বা অংশ হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু মনবিজ্ঞান একটি পৃথক বিজ্ঞান। (২) আত্মার স্বরূপ সম্বন্ধে দার্শনিকেরা একমত নন। যা সর্বজনীন নয়, তা দিয়ে কোন বিজ্ঞান গড়ে উঠতে পারে না।
(৩) মনোবিজ্ঞান হল বিষয়নিষ্ঠ ও অভিজ্ঞতা ভিত্তিক বিজ্ঞান। বিজ্ঞান হলেই তা পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ প্রভৃতির উপর নির্ভরশীল হবে। কিন্তু আত্মা অতীন্দ্রিয়। তাই তাকে নিয়ে কোন পর্যবেক্ষণ চালানো অসম্ভব। কাজেই আত্মার বিজ্ঞান কথাটিই সম্পূর্ণ ভুল।
মধ্যযুগে মনবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দেওয়া হ’ল মনের বিজ্ঞান। এই সময় মনোবিদগণ মনে করতেন মনোবিদ্যায় থাকবে মন সম্বন্ধে নানা বৈজ্ঞানিক আলোচনা। কিন্তু এখানেও নানা রকম অসুবিধা দেখা গেল। মন কথাটিও তত আত্মার মতই ব্যাপক। তাছাড়া ম্যাডুগাল বলেন—“মন হল দ্ব্যর্থক শব্দ, এই সংজ্ঞা দেবার প্রয়োজন আছে।" কাজেই যে জিনিষ সম্বন্ধে কোন পরিষ্কার ধারণাই গড়ে ওঠে নি, তাকে বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু করা যেতে পারে না। আবার তর্কশাস্ত্র, নীতিবিজ্ঞান প্রভৃতিও ‘“মন” নিয়ে আলোচনা করে। এই “মন” আর মনোবিজ্ঞানের “মন”—এই দুটির মধ্যে কি পার্থক্য, তা সুস্পষ্ট ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
যাই হোক, বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি—দেহগত ও চেতনাগত উভয় প্রকার আচরণই হল মনবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু। এক কথায় বলা যেতে পারে, সম্পূর্ণ মানুষটিই মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু। ম্যাকডুগালের মতে, মনোবিজ্ঞান হল জীবের আচরণ সম্বন্ধীয় বিষয়নিষ্ঠ বিজ্ঞান (Positive Science)। উডওয়ার্থের মতে, পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তির ক্রিয়াকলাপ সম্পকীয় বিজ্ঞানই হল মনোবিজ্ঞান।
এই বইয়ের আলোচনার বিষয়বস্তু হল শিক্ষা-মনোবিজ্ঞান। এই শাখাটি মনোবিজ্ঞানের ব্যাবহারিক রূপ।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এই পোষ্ট হইতে শ্যামাপ্রসাদ চট্টোরাজ দ্বারা লিখিত শিক্ষামুখী মনোবিজ্ঞান বইয়ের পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
No comments:
Post a Comment