বিভূতিভূষণ - চিত্তরঞ্জন ঘোষ পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Friday, June 18, 2021

বিভূতিভূষণ - চিত্তরঞ্জন ঘোষ পিডিএফ


 বিভূতিভূষণ - চিত্তরঞ্জন ঘোষ পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'বিভূতিভূষণ'
লেখক- চিত্তরঞ্জন ঘোষ
বইয়ের ধরন- প্রবন্ধ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২০৯
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১২এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত

বিভূতিভূষণ - চিত্তরঞ্জন ঘোষ

বিভূতিভূষণ স্নিগ্ধ প্রকৃতির উপাসক। গ্রাম-বাংলার অবহেলিত তুচ্ছ প্রকৃতি-বিষয়ের এত বড় রসিক আর নেই। গ্রামদেশের গাছ পালা, রৌদ্ৰবৃষ্টি, আকাশ-বাতাস থেকে খানা-ডোবা পর্যন্ত সর্বত্রই তিনি সৌন্দর্যের সন্ধান পেয়েছেন, এবং তাকে খুঁটিয়ে উপস্থিত করেছেন।
বিভূতিভূষণের সাহিত্য পড়তে গিয়ে এই খাঁটি কথাটা বারবার মনে পড়ে। সরল আন্তরিকতা তাঁর বিশিষ্ট গুণ।
গ্রাম-বাংলাকে দেহ-মনের যুক্ত অঞ্জলিতে গ্রহণ কবেছিলেন বিভূতিভূষণ। ইন্দ্রিয়ের পঞ্চপ্রদীপ জ্বেলে দেখেছিলেন তার রূপ, বরণ করে মনের ঘরে তুলেছিলেন, সাহিত্যের সভায় গেয়েছিলেন তার গান। এইখানেই তাঁর দেশপ্রেমিকতা। দেশকে তিনি 'মা, মা’ বলে উচ্চকণ্ঠে ডাকেন নি, তার সঙ্গে মিশে ছিলেন তিনি।
সাহিত্যের অন্যতম মুখ্য বিষয়বস্তু প্রেম বিভূতিভূষণে তেমন প্রাধান্য পায়নি। প্রেমের রহস্য উন্মোচন বা তার গতিবেগ পরিমাপে তার তেমন উৎসাহ নেই। অপুর মনোবিকাশের খুঁটিনাটি বর্ণনা সত্বেও তার প্রেম-চেতনার উদ্বোধন সম্পর্কে নীরবতা লেখকের এই বিষয়ে আপেক্ষিক অনুৎসাহ প্রমাণ করে। তাঁর সাহিত্যের সুবৃহৎ পটভূমিতে প্রেমের স্থান কতটুকুই বা ।
প্রেম যেখানে এসেছে বিভূতি-সাহিত্যে, এসেছে একটা বিশেষরূপে। শান্ত গৃহশ্রী তার প্রেমের প্রদীপে। সে দীপের আলোর পরিধি ছোট, প্রকৃতি স্নিগ্ধ। এত উত্তাপহীন সে বর্তিকা যে মনে হয় বুঝি এক পসলা জ্যোৎস্না শিখার গায়ে কে জড়িয়ে দিয়েছে। সেজ্যোৎস্না কল্পলোকে ভাবুকতা জাগায়, দাবানল জ্বালায় না। উত্তেজনা বা উন্মাদনা সে-প্রেমের জগৎ থেকে নির্বাসিত। বিভূতিভূষণে প্রেমের স্রোত ইছামতীর মতই স্তিমিত, নিস্তরঙ্গ। খরস্পর্শা সর্বনাশী রূপ তার নয়। পাড় সে ভাঙ্গে না, পাড়ে জাগায় শ্যামসমারোহ। তার প্রেম প্রবল নয়, কোমল। তিনি প্রেমের প্রমত্ত শক্তিকে দেখেন নি, তার প্রেমে পরম স্বস্তি। তার দাম্পত্য প্রেমের আড়ালে বাৎসল্যের অন্তঃস্রোত দুলক্ষ্য নয়।
এহেন লেখকের গল্প উপন্যাস ও তাঁর লেখনি দক্ষতাকে চুলচেরা বিশ্লেষন করেছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক তথা সমালোচক চিত্তরঞ্জন ঘোষ এই বইটির মাধ্যমে।

বিভুতিভুষণের সমস্ত গ্রন্থপঞ্জী:

১৩২৮ সালের মাঘ সংখ্যা প্রবাসী’তে বিভূতিভূষণের প্রথম গল্প ‘উপেক্ষিতা' মুদ্রিত হয়। এর পর প্রায় দীর্ঘ ত্রিশ বৎসর তিনি (মৃত্যুকাল—কার্তিক ১৩৫৭) যে সকল গ্রন্থাদি রচনা করেছিলেন, তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হোলো। গ্রন্থে মুদ্রিত প্রকাশ কালের তারিখ (সাধারণত বাংলা সালে) ব্যতীত [ ] বন্ধনীর মধ্যে যে তারিখ দেওয়া হোলো, তা বেঙ্গল লাইব্রেরী সঙ্কলিত মুদ্রিত পুস্তকের তালিকা থেকে সঙ্কলিত। উভয় রকমের তারিখে কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছু গরমিল আছে। যথা, মেঘমল্লার, অপরাজিত, চাঁদের পাহাড়, জন্ম ও মৃত্যু, কিন্নরদল, আদর্শ হিন্দু হোটেল, জ্যোতিরিঙ্গণ।
১। পথের পাঁচালী (উপন্যাস)। আশ্বিন ১৩৩৬ [১লা নভেম্বর ১৯২৯ খৃঃ ] পৃঃ ৪২৭
উপন্যাসটি লেখা শেষ করে গ্রন্থাকারে কোলকাতায় পাঠান ২৬শে এপ্রিল, ১৯২৮  । প্রথম প্রকাশ বিচিত্রায়, আষাঢ় ১৩৩.আশ্বিন ১৩৩৬)।
পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ, আশ্বিন ১৩৩৯।
এ বইয়ের বালাপাঠ্য সংস্করণ :
(ক) ছোটদের পথের পাঁচালী। [ ১৪ আগস্ট, ১৯৪৪] পৃঃ ১৯২
(খ) আম আঁটির ভেঁপু। [২২শে সেপ্টেম্বর ১৯৪৪ ] পৃঃ ১৮১
২। মেঘমল্লার (গল্প)। শ্রাবণ ১৩৩৮ [৩০শে জানুয়ারি ১৯৩২] পৃঃ ২১৯
সূচী : মেঘমল্লার, নাস্তিক, উমারাণী, বউ-চণ্ডীর মাঠ, নব-বৃন্দাবন, অভিশপ্ত, খুকীর কাণ্ড, ঠেলাগাড়ী, পুইমাচা, উপেক্ষিত (এই গল্পটির নাম নাকি প্রথমে দিয়েছিলেন পূজনীয়া। পরে করেন ‘উপেক্ষিতা'। দ্রষ্টব্য, 'পাচুগোপালের ডায়রী’—যতীন্দ্রমোহন রায়। -সোমপ্রকাশ, আষাঢ়-ভাদ্র, ১৩৬৬)
৩। অপরাজিত (উপন্যাস) :
১ম খণ্ড, মাঘ ১৩৩৮ [২৬ এপ্রিল ১৯৩২] পৃঃ ১-৩৫৪
২য় খণ্ড, ফাল্গুন ১৩৩৮ [২৫ মে ১৯৩২ ] পৃ: ৩৫৪-৬১৯
প্রথম প্রকাশ প্রবাসীতে। (পৌষ, ১৩৩৬-আশ্বিন ১৩৩৮)।
গ্রন্থকার প্রথমে এই গ্রন্থের নাম দেবেন ভেবেছিলেন ‘আলোক সারথি'।
৪। মৌরীফুল (গল্প)। ভাদ্র ১৩৩৯ | [ ৩রা সেপ্টেম্বর ১৯৩২] পৃঃ ১৭৫
সূচীঃ মৌরীফুল, জলসত্র, রোমান্স, বাক্ষসগণ, হাসি, প্রত্নতত্ত্ব,দাতার স্বর্গ, খুটি-দেবতা, গ্রহের ফের, মরীচিকা।
এই গ্রন্থের অন্তর্গত প্রথম গল্পটি প্রথমে ‘প্রবাসী’র অগ্রহায়ণ ১৩৩৩ সালে মুদ্রিত হবার পর সুধীরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রবর্তিত 'কথা ও কাহিনী' গল্পমালার পঞ্চম সংখ্যার পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হয়।
৫। যাত্রাবদল। ( গল্প )। কার্তিক ১৩৪১ | [৩০শে নভেম্বর, ১৯৩৪ ] পৃঃ ১৬২
সূচীঃ ভণ্ডুলমামার বাড়ী, পেয়ালা, উইলের খেয়াল, কনে দেখা, সার্থকতা, একটি দিন, বাইশ বছর, বৈদ্যনাথ, ডানপিটে, যাত্রাবদল।
৬। দৃষ্টি-প্রদীপ। (উপন্যাস)। ভাদ্র ১৩৪২ [২৭ আগস্ট, ১৯৩৫] পৃ: ৩১৬।' প্রবাসী’তে প্রথম প্রকাশিত (ফাল্গুন ১৩৪০-চৈত্র ১৩৪১)।
৭। বিচিত্র জগৎ (সন্দর্ভ) ভাদ্র, ১৩৪৪। ক্রাউন ১/৪ আকার পৃ: ২৯০ দ্বিতীয় সংস্করণ, আশ্বিন ১৩৫৬
সূচী : আধুনিক গ্রীস, পারস্য (পার্সিপোলিস), বর্তমান প্যালেষ্টাইন, বর্তমান মাঞ্চুরিয়া, বলিভিয়া, বেলজিয়ামের খালপথে, বরফের রাজ্য (ফিনল্যাণ্ড), ইংলণ্ডের পল্লী, নরওয়ের পল্লী, উত্তর আমেরিকা হইতে দক্ষিণ আমেরিকা, হাওয়াই হইতে সানফ্রান্সিসকো, প্যারিস হইতে স্কুলপথে কাশ্মীর, বোম্বেটেদের শহর সেন্ট ম্যালো, সান্টা ফি, জ্যামেকা, কলোরাডো, বোর্ণিও দ্বীপ, ফিজি দ্বীপ, মাদাগাস্কার দ্বীপ, প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জ (মোইক্রোনেসিয়া), সোসাইটি দ্বীপপুঞ্জ ও পলিনেসিয়া, ওয়েষ্ট ইণ্ডিজ দ্বীপপুঞ্জ (লাসিব), ভারত সমুদ্রের দ্বীপ, হাইতুরু দ্বীপ (পক্ষীদ্বীপ ), টাঙ্গানিয়াকা ও কঙ্গো (দক্ষিণ আফ্রিকা), যবদ্বীপের আগ্নেয়গিরি, মরুভূমির দেশ আরব, আরিজোনার মরুভূমি, তুর্কিস্থানের মরুপথ, মাধুকুও ( মঙ্গোলিয়া), পৃথিবীর বৃহত্তম নদী আমাজন, কলোরাডো নদী, চীনের নদী, পৃথিবীর বিশালতম অরণ্য ( আমাজন ), পানামা। খাল ও অরণ্য, ভোলাপথ (কানাডার উত্তর পশ্চিমাঞ্চল), ভূস্বর্গ সেফিলিস, | মায়ের সেলুঙ জাতি, সমুদ্রতলের নূতন জগৎ জলের তলায় নূতন জগৎ | ওয়েষ্ট ইণ্ডিজ দ্বীপপুঞ্জের আশ্চর্য বস্তু, তিব্বতী দস্যুদের পবিত্র শিখর কংকা, কেপ্রিদ্বীপের পাখীর আভড়া, পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়ার কয়েকটি আশ্চর্য বস্তু, ব্যাঙের চাষ, কোমোডো দ্বীপের অতিকায় গিরিগিটি, পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা মূল্যবান পক্ষী, লিবীয় মরুভূমি, এঞ্জিনবিহীন এরোপ্লেন, আমেরিকার কাঠবিড়ালীর আশ্চর্য ঘুম, ফার্ণ, ভূমধ্যসাগর হইতে পিকিং।
‘প্রকাশকের নিবেদন’-এর অংশ বিশেষ। ইংরাজিতে Countries of the World, World of Wonder, Lands and Peoples প্রভৃতি যে শ্রেণীর বই,...বাংলাভাষায় বিচিত্র জগৎ হয়েছে সেই শ্রেণীর বই। বইখানির বিষয় নির্বাচন ব্যাপারে কোনও ধরাবাধা নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় নি। যে সব লেখক, পর্যটক, অভিযানকারী বা ভূতত্ববিদগণের প্রবন্ধ বা কাহিনী বিচিত্র জগৎ রচয়িতার ভাল লেগেছে, নানা কারণে যে সব কাহিনী তার বিচিত্র ও অপূর্ব মনে হয়েছে সে সবই তিনি তার নিজস্ব অননুকরণীয় স্টাইলে মনোরম গল্পের মত বর্ণনা করেছেন।... আমাদের পরিচিত জগতের বাইরে যে একটা ব্যাপকতর অজ্ঞাত, সৌন্দর্যময় জগৎ আছে—যে জগৎ রূপে, বর্ণে, গন্ধে, মাধুর্যে-অপূর্ব সমগ্রতায়—অবর্ণনীয়, অপরূপ; 'বিচিত্র জগৎ'-এর পাতায় সেই জগতেরই অনাস্বাদিত আনন্দময় রূপ বিকশিত হয়েছে, প্রবাহিত হয়েচে শান্ত সমুজ্জ্বল বর্ণোৎসবের দীপ্তি।'
উদ্ধতির শেষ অংশটি পড়ে হঠাৎ মনে হয় প্রকাশকের বেনামীতে লেখাটি কি স্বয়ং বিভূতিভূষণের ?
গ্রন্থটির তথ্য বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত হলেও লেখক স্বীয় মনকে এর সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন। একটি ক্ষুদ্র উদ্ধতি দিই কলোরাডো অংশ থেকে : ‘এই পার্বত্য হ্রদগুলির সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। এদের চারিধারে বন, বনে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের বন্যপুষ্প বন আলো করে রাখে, একটি গম্ভীর প্রশান্তি ও চারিদিকের সৌন্দর্যে দর্শকের মনঃপ্রাণ বিতোর হয়ে ওঠে। যারা খেলাধূলা ভালোবাসে না, শুধু বসে বসে ভাবতে চায় বা কবিতা লিখতে চায়, তারা নৌকা ভাড়া করে আপন মনে আসন্ন সন্ধ্যায় হ্রদের নিস্তরঙ্গ নীল জলে ইচ্ছামত বেরিয়ে বেড়াতে পারে।
লেখাগুলির বেশীর ভাগ বেরিয়েছিল 'বঙ্গশ্রী' পত্রিকায়, কিছু ‘বিচিত্রা'-য় ‘বিশ-প্রকৃতি বিভাগে। বিচিত্রা'-র ‘বিবিধ সংগ্রহ' বিভাগেও মাসে মাসে এই জাতীয় সন্দভ বিভূতিভূষণ লিখেছিলেন। যথা, প্রশান্ত সাগরের কয়েকটি মরুদ্বীপ (জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৬), তারকার জন্ম (শ্রাবণ, ১৩৩৬), উল্কার সমাধি ( আশ্বিন, ১৩৩৮), ব্রিটানির প্রাগৈতিহাসিক প্রস্তর-কীর্তি (কার্তিক, ১৩:৬), বর্তমান আবিসিনীয়া (মাঘ, ১৩৩৬ ); আরিজোনা মরুভূমির পর্বতগাত্রে প্রাচীন ছবি (শ্রাবণ, ১৩৩৭), কলেরেডোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ( ভাদ্র, ১৩৩৭ ) প্রভৃতি।
শেষের এই লেখাগুলির অধিকাংশই বোধহয় কোন গ্রন্থে সংকলিত হয় নি। অথচ এই লেখাগুলিতে লেখকের বিশিষ্ট মনের ছাপ আছে। ইংরাজীতে পঠিত দেশগুলিকে তিনি যেন মানসচক্ষে দেখতেন। দুটি উদাহরণ দিচ্ছি।
কলেরেডোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অংশ : ‘অত্যন্ত উচ্চভূমি হইতে তুষারাবৃত শিখরগুলির সৌন্দর্য, বিশেষ করিয়া তাহাদের অহরহ পরিবর্তনশীল মুর্তি বড় অদ্ভুত দেখায়—এই হয়তো কোনটা মেঘাবৃত আছে, আবার এখনি মেঘ সরিয়া গিয়া পরিপূর্ণ সূর্যকিরণে তাহার প্রতি অঙ্গ স্নাত হইতেছে—দূরে অন্য একটা ছোট শিখরে হয়তো ততক্ষণ বৃষ্টি সুরু হইয়াছে, অথচ এখানে মাথার উপরকার আকাশ ঘন নীল, মেঘগুলির প্রান্ত রৌদ্রে ঝিকমিক করিতেছে। এখানকার সূর্যাস্তগুলিও দেখিবার জিনিস—সমতল ভূমিতে, এ ধরনের সন্ধ্যার দৃশ্য চোখে পড়ে না।
'বর্তমান আবিসিনীয়া’র শেষ প্যারাগ্রাফ : 'আবিসিনীয়ার প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি সুন্দর। বনাচ্ছাদিত পিবত্যভূমি, তৃণপূর্ণ উপত্যকা, হ্রদ, নদী, পবতকন্দর ও Canyon, বড় বড় নির্জন মাঠ—দেশের সর্বত্র এমন ছড়ানো আছে যে, কোনো একটা দৃশ্য বেশীক্ষণ দেখতে হয় না, একঘেয়ে মনে হয় না। আধুনিক সভ্যতা বিস্তার না হওয়ার দরুণ চওড়া রাস্তা। নাই, মাঠের মধ্যে বেড়া নাই, টেলিগ্রাফ লাইন নাই, গাড়ীঘোড়া নাই, চারিদিকে হাস্যময়ী প্রকৃতির মুক্ত অবাধ লীলা।
৮। চাঁদের পাহাড় (বাল্যপাঠ্য উপন্যাস) ১লা আশ্বিন ১৩৪৪ [২৮শে জানুয়ারী ১৯৫৮] পৃঃ ১৭৭
মৌচাকে প্রথম প্রকাশিত (আষাঢ় ১৩৪২-চৈত্র ১৩৪৩)
উপন্যাসটির ঘটনাস্থল আফ্রিকা। ভৌগোলিক সংস্থান ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনার জন্য লেখক নির্ভর করেছেন প্রধানতঃ sir Harry Johnston, Rosita Forbes প্রভৃতি বিখ্যাত পর্যটকদের বইয়ের ওপর। জুলুল্যাণ্ডের আরণ্য-অঞ্চলে প্রচলিত ডিঙ্গোনেক (Rhodesian-monster) ও বুনিপের প্রবাদ-বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে গ্রন্থটি রচিত।
৯। জন্ম ও মৃত্যু (গল্প)। আশ্বিন ১৩৪৪। [৬ই ফেক্ৰয়ারী ১৯৩৮] পৃঃ ১৮৮
সূচী : যদু হাজরা ও শিখিধ্বজ, জন্ম ও মৃত্যু, সই, রামশরণ, দারোগার গল্প, খুড়ীমা, বায়ুরোগ, অরন্ধনের নিমন্ত্রণ, লেখক, বড়বাবুর বাহাদুরী, অন্নপ্রাশন, তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প, ডাকগাড়ী, অকারণ। 

১০। আইভ্যানহো (অনুবাদ)। পৃঃ ২১১
১১। কিন্নরদল (গল্প)। কার্তিক ১৩৪৫ [অক্টোবর, ১৯৩৮] পৃঃ ২০৫
সূচীঃ মণি ডাক্তার, পুরোনা কথা, খোসগল্প, একটি দিনের কথা, বাটি চচ্চড়ি, তারানাথ তান্ত্রিকের দ্বিতীয় গল্প, ডাইনী, বুধীর বাড়ী ফেরা, বিধু মাস্টার, উন্নতি, কিন্নর দল। 

১২। আরণ্যক। (উপন্যাস)। চৈত্র ১৩৪৫ [২১শে মার্চ, ১৯৩৯ পৃ: ৩৩৩
ইহার বাল্যপাঠ্য সংস্করণ 'ছেলেদের আরণ্যক' অগ্রহায়ণ ১৩৫৩-তে প্রকাশিত হয়। আরো পরে প্রকাশিত হয় “লবটুলিয়ার কাহিনী।
১৩। মরণের ডঙ্কা বাজে। ( বাল্যপাঠ্য উপন্যাস)। ১৫ই জানুয়ারী ১৯৪০ পৃ: ১৫০
মৌচাকে প্রথম প্রকাশিত (পৌষ ১৩৪৪—আশ্বিন ১৩৪৬)
১৪। অভিনব বাঙলা ব্যাকরণ। (স্কুলপাঠ্য) [২৮শে জুলাই ১৯৪০] পৃঃ ১৫৫
১৫। আদর্শ হিন্দু-হোটেল। (উপন্যাস) আশ্বিন ১৩৪৭ [ নভেম্বর, ১৯৪০] পৃ: ২৯২
অধুনালুপ্ত ‘মাতৃভূমি' পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশ হয়। তখন মাতৃভূমির অন্যতম কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন গোপাল নিয়োগী (দৈনিক ‘বসুমতী’র বর্তমান সম্পাদক। শোনা যায় গোপালবাবুর মেয়ে বীণা বিভূতিভূষণকে হাজারিঠাকুর বলে ডাকত। দ্রষ্টব্য, 'পাঁচুগোপালের ডায়রী’—যতীন্দ্রমোহন রায়,সোম প্রকাশ, আষাঢ়-ভাদ্র, ১৩৬৬)।
১৬। অভিযাত্রিক ( ভ্রমণ কাহিনী) [ ২২ মার্চ ১৯৪১) পৃঃ ২৫৮
১৭। বেণীগির ফুলবাড়ী (গল্প) ( ১৫ই এপ্রিল ১৯৪১] পৃঃ ১৮৯
সূচী: বেণীগির ফুলবাড়ী, মাষ্টার মশায়, তিরোলের বালা, জনসভা, প্রত্যাবর্তন, প্রাবল্য, বাঁশি, পাঁচুমামার বিয়ে, শান্তিরাম, কুয়াশার রঙ, ফিরিওয়ালা, নিস্ফলা।
১৮। স্মৃতির রেখা। ( দিনলিপি) ১লা শ্রাবণ ১৩৪৮, পৃঃ ১৫৫ প্রথম ক্যালকাটা পাবলিশাস সংস্করণ, মহালয়া, ১৩৬২। ২৭শে অক্টোবর, ১৯২৬-এই দিনের ডায়রী প্রথম দুটি পাতা। তারপর ২৯শে এপ্রিল, ১৯২৫ থেকে ২৬শে এপ্রিল ১৯২৮ পর্যন্ত দিনলিপি আছে। পথের পাঁচালী লেখার প্রধান সময় এটা। 'আরণ্যকে'র অরণে তখন লেখক ছিলেন।
১৯। বিপিনের সংসার। (উপন্যাস)। ভাদ্র, ১৩৪৮ [ সেপ্টেম্বর ১৯৪১] পৃঃ ৩৪৯। দ্বিতীয় সংস্করণ, বৈশাখ, ১৩৫৮
২০। দুই বাড়ী। (উপন্যাস) মহালয়া ১৩৪৮। পৃ: ১৮৬ প্রথম সিগনেট সংস্করণ শ্রাবণ ১৩৫৯
২১। মিসমিদের কবচ। (বাল্যপাঠ্য উপন্যাস) [ ১লা এপ্রিল ১৯৪২ ] পৃঃ ৯৯ । দেব সাহিত্যকুটীর কতৃক কাঞ্চনজঙ্ঘা সিরিজে প্রকাশিত।
২২। অনুবর্তন। (উপন্যাস) ভাদ্র, ১৩৪৯ [ ২২শে জুলাই ১৯৪২ ?] পৃঃ ২৯৯
পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩৫০। (লেখক এই বইটি লিখেছিলেন 'ক্লার্কওয়েলের স্কুল' নামে। প্রকাশকালে নাম পরিবর্তন করা হয়।)
২৩। তৃণাঙ্কুর। (দিনলিপি) ১৩৫০। পৃ: ১২৪।
এই গ্রন্থের রচনাকাল ১৯শে জুন ১৯৩৮ থেকে জানুয়ারী ১৯৩৯ পর্যন্ত। অপরাজিত রচনার প্রধান কাল এটা।
২৪। টমাস বাটার আত্মজীবনী । জ্যৈষ্ঠ ১৩৫০ (১৯৪৩) পৃঃ ১৬০ জন বারোস কৃত ইংরেজী থেকে অনূদিত।
২৫। নবাগত। (গল্প) ( ২৫ জানুয়ারী ১৯৪৪ ) পৃঃ ১৮০
সূচীঃ দ্রবময়ীর কাশীবাস, আশার নেশা, ক্যানভাসার কৃষ্ণলাল,পারমিট, মুক্তি, গায়ে হলুদ, ঠাকুরদার গল্প, ভিড়, অরক, থিয়েটারের টিকিট, পার্থক্য, স্বপ্ন-বাসুদেব। ২৬। তালনবমী। (গল্প সংগ্রহ) বৈশাখ ১৩৫১ [১৬ই মে ১৯৭৪ ] পৃঃ ১০৪
সূচী : তালনবমী, রঙ্কিণী দেবীর খড়গ, মেডেল, মশলা ভূত,বামা, বামাচরণের গুপ্তধন প্রাপ্তি, অরণ্যে, গঙ্গাধরের বিপদ, রাজপুত্র, চাউল।
২৭। উর্ম্মি মুখর। ( দিনলিপি)। পৃঃ ৮৫
২৮। দেবযান। (উপন্যাস) [ ৩ রা অক্টোবর ১৯৪৪ ] পৃঃ ২৩৭ দ্বিতীয় পরিবর্ধিত সংস্করণে পৃঃ সংখ্যা ২৪৪[ ২১শে জুলাই, ১৯৪৬]
২৯। উপল খণ্ড। (গল্প)। [ ১৬ই এপ্রিল ১৯৪৫ ] পৃঃ ১৭১
সূচী : আব্বান, একটি ভ্রমণ কাহিনী, নসুমামা ও আমি, দৈবাৎ,বিড়ম্বনা, ভুবন বোষ্টমী, শাবলতলার মাঠ, পৈতৃক
ভিটা, দুর্গতি, ফকির, আইনষ্টাইন ও ইন্দুবালা।
৩০। বিধু মাস্টার। (গল্প)। ১৩৫২ সাল [ ১৯৪৫ ] পৃঃ ২০৮
সূচী : বাক্সবদল, মূলোরাডিস—হস র্যাডিস, সুলোচনার কাহিনী, বেচারী, অভয়ের অনিদ্রা, অসমাপ্ত, কবি কুণ্ড মশায়, সঞ্চয়, সুহাসিনী মাসীমা, বিধু মাস্টার, অভিশাপ।
৩১। কেদার রাজা। (উপন্যাস) পৃঃ ৩৬৩
৩২। বনে পাহাড়ে। (ভ্রমণ কাহিনী)। [ ২৫শে সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ ] পৃঃ ৮৯। মৌচাকে প্রথম প্রকাশিত (আষাঢ় ১৩৫০—আষাঢ় ১৩৫২)
৩৩। ক্ষণভঙ্গুর (গল্প) ২৯ শে ভাদ্র ১৩৫২ [সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ ] পৃঃ ১৩১
সূচী : সিদুরচরণ, একটি কোঠাবাড়ীর ইতিহাস, বুদোর মায়ের মৃত্যু, ছেলেধরা, রামতারণ চাটুয্যে—অথর, নুটি মন্তর, ফড় খেলা, হাট, অরণ্যকাব্য।
৩৪। উৎকর্ণ। ( দিনলিপি) পৃঃ ২৫৪
৩৫। অসাধারণ। (গল্প)। [ ৭ই মে ১৯৪৬ ] পৃ: ১৮১
সূচীঃ অসাধারণ, নদীর ধারের বাড়ি, বিপদ, জন্মদিন, কাঠ বিক্র বুড়ো, হারুণ অল রসিদের বিপদ, সুলেখা, রূপোবাঙাল, তেঁতুল তলার ঘাট, দুই দিন, মাকাল লতার কাহিনী, বংশ লতিকার সন্ধানে, কমপিটিশন, ব্ল্যাক মার্কেট দমন কর, তুচ্ছ, পিদিমের নিচে।
৩৬। হীরা মাণিক জ্বলে (উপন্যাস)। পৃ: ১৫৯।
মৌচাকে প্রথম প্রকাশিত ( বৈশাখ, ১৩৪৮--চৈত্র ১৩৪৯)।
৩৭। বিভূতিভূষণের শ্রেষ্ঠ গল্প। [১১ই সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭] পৃঃ ২১২
সূচীঃ কিন্নরদল, মৌরীফুল, কানভাসার কৃষ্ণলাল, দ্রবময়ীর কাশীবাস, আহবান, একটি ভ্রমণ কাহিনী, নমামা ও আমি, বিপদ, তুচ্ছ, সিদুর চরণ, তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প, ভণ্ডুল মামার বাড়ী, কনে দেখা, মেঘ মল্লার, পুঁই-মাচা।
৩৮। অথৈজল। (উপন্যাস) কার্তিক ১৩৫৪, পৃঃ ২৫৩
৩৯। মুখোস ও মুখশ্রী। (গল্প) (১৫ ডিসেম্বর, ১৯৪৭] পৃঃ ১৭৫
সূচীঃ মুখোস ও মুখশ্রী, বাসু হাড়ি, দৈব ঔষধ, বারিক অপেরা পার্টি, উড়ম্বর, মাছ চুরি, বেসাতি, কলহান্তরিতা, উল্টোরথ, মুক্তপুরুষ হরিদাস, অন্তজ লি, বোম,
খোলস, চৌধুরাণী।
৪০। হে অরণ্য কথাকও। (দিনলিপি) [২৪ জানুয়ারী, ১৯৪৮] পৃ: ১৮৮
৪১। আচার্য্য কৃপালনী কলোনী। (গল্প)। আশ্বিন ১৩৫৫। পৃ: ১১৪ নতুন সংস্করণে পরিবর্তিত নাম ‘নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব'।
সূচীঃ আচার্য্য কৃপালনী কলোনী, নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব, বরো বাগদিনী, প্রভাতী, সাহায্য, গিরিবালা, চিঠি, মড়িঘাটের মেলা, হাজারি খুড়ির টাকা, প্রত্যাবর্তন, পড়ে পাওয়া, আমার ছাত্র।
৪২। জ্যোতিরিঙ্গণ। (গল্প)। চৈত্র ১৩৫৫ [১লা মার্চ, ১৯৪৮পৃঃ ১৩৯
সূচীঃ সংসার হিংয়ের কচুরি, দুই দিন, অনুশোচনা, দাসু, বাসা,বন্দী, থনটন কাকা, কালচিতি, দিবাবসান, মুস্কিল, গল্প নয়।
৪৩। ইছামতী (উপন্যাস)। পৌষ, ১৩৫৬ (১৫ জানুয়ারী ১৯৫০] পৃ: ৪২৪
ইছামতী-প্রীতির উদাহরণ লেখকের সাহিত্যজীবনের গোড়া থেকেই পাওয়া যায়। 'অপরাজিত' থেকে দুটি উল্লেখযোগ্য উদ্ধৃতি দিচ্ছি । অপুর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ইছামতী : 'শৈশবে এই ইছামতী ছিল তার কাছে কি অপূর্ব কল্পনায় ভরা।
‘ইছামতী ছিল পাড়াগায়ের গরীব ঘরের মা। তার তীরের আকাশ বাতাসের সঙ্গীত মায়ের সুখের ঘুম পাড়ানি গানের শত শত স্নেহে তার নব মুকুলিত কচি মনকে মানুষ করিয়া তুলিয়াছিল, তার তীরে সে-সময়ের কত আকাঙক্ষা, বৈচিত্র্য, রোমান্স,-তার তীরে ছিল দূরের অদেখা বিদেশ, বর্ষার দিনে এই ইছামতীর কূলে-কূলে ভরা ঢলঢল গৈরিক রূপে সে অজানা মহাসমুদ্রের তীরহীন অসীমতার স্বপ্ন দেখিত.•••••
এখন সে আর বালক নাই, কত বড় বড় নদীর দুকূল-ছাপানো লীলা দেখিয়াছে—গঙ্গা, শোন, বড়দল, নর্মদাতাদের অপূর্ব সন্ধ্যা, অপূর্ব বর্ণসন্তার দেখিয়াছে—সে বৈচিত্র্য, সে প্রখরতা ইছামতীর নাই, এখন তার চোখে ইছামতী ছোট নদী।......
কিন্তু তা বলিয়া ইছামতীকে সে কি কখনো ভুলিবে? (অপরাজিত, পৃঃ ৩৮২-৮৩)।
‘ইছামতী এই চঞ্চল জীবনধারার প্রতীক। ওর দুপাড় ভরিয়া প্রতি চৈত্র বৈশাখে কত বনকুসুম, গাছপালা, পাখ-পাখালী, গায়ে গায়ে গ্রামের ঘাট—শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া কত ফুল ঝরিয়া পড়ে, কত পাখীর দল আসে যায়, ধারে ধারে কত জেলেরা জাল ফেলে, তীরবর্তী গৃহস্থবাড়ীতে হাসিকান্নাৰ লীলাখেলা হয়, কত গৃহস্থ আসে, কত গৃহস্থ যায়—কত হাসিমুখ শিশু মায়ের সঙ্গে নাহিতে নামে, আবার বৃদ্ধাবস্থায় তাহাদের নশ্বর দেহের রেণু কলস্বনা ইছামতীর স্রোতোজলে ভাসিয়া যায়—এমন কত মা, কত ছেলেমেয়ে, কত তরুণ-তরুণী মহাকালের বীথিপথে আসে যায় অথচ নদী দেখায় শান্ত, স্নিগ্ধ, ঘরোয়া, নিরীহ।' ( অপরাজিত, পৃঃ ৪২ )
এই রকম উদ্ধারযোগ্য অংশ বিভূতিসাহিত্যে আরো আছে।
“ইছামতী' উপন্যাসটি লেখবার ইচ্ছা তার মনে জাগে ১লা মার্চ, ১৯২৯। 'স্মৃতির রেখা'-তে (পৃঃ ৯১) লিখেছেন : 'খুব রোদ চড়েছে, কল, বলিয়াতে স্নান করতে এলাম। ঠাণ্ডা জলে নাইতে নাইতে ভাবছিলাম—ঐ আমাদের গ্রামের ইছামতী নদী। আমি একটা ছবি বেশ মনে করতে পারি—এই রকম ধু-ধু বালিয়াড়ী পাহাড়, পাহাড় নয়। শান্ত ছোট, স্নিগ্ধ ইছামতীর দু’পাড় ভরে ঝোপে ঝেপে কত বনকুসুম, কত ফুলে ভরা ঘেঁটুবন, গাছপালা, গাঙশালিকের বাসা সবুজ তৃণাচ্ছাদিত মাঠ। গায়ে গায়ে গ্রামের ঘাট, আকন্দ ফুল।......কত হাসিকান্নার মেলা। আজ পচিশত বছর ধরে কত গৃহস্থ এল, কত হাসিমুখ শিশু প্রথম মায়ের সঙ্গে নাইতে এল—কত বৎসর পরে বৃদ্ধাবস্থায় তার শশানশয্যা হল ঐ ঠাণ্ডা জলের কিনারাতেই, ঐ বাঁশবনের ঘাটের নিচেই কত মা, কত ছেলে, কত তরুণ-তরুণী সময়ের পাষাণ বেয়ে এসেছে গিয়েছে মহাকালের বীথিপথ বেয়ে। ঐ শান্ত নদীর ধারে ঐ আকন্দ ফুল, ঐ পাটা শেওলা, বনঝোপে দ্যুতিমান, এদের গল্প লিখব, নাম হবে ইছামতী।
৪৪। কুশল পাহাড়ী (গল্প) [ ৭ই এপ্রিল, ১৯৫১ পৃঃ ২৩৪
সূচীঃ কুশল পাহাড়ী, ঝগড়া, বড় দিদিমা, অবিশ্বাস্য, খেলা, জাল, আবির্ভাব, মান তালাও, বে-নিয়ম, অভিমানী, শিকারী, পরিহাস, জহরলাল ও গড়, গল্প নয়, সীতানাথের বাড়ী ফেরা, হরিকাকা, এমনই হয়, ঝড়ের রাতে, চাউল, পথিকের বন্ধু, আটিষ্ট, শেষ লেখা।
৪৫। ছোটদের শ্রেষ্ঠ গল্প (গল্প)। জ্যৈষ্ঠ, ১৩৬২। দ্বিতীয় সংস্করণ শ্রাবণ ১৩৬৩ ( জুলাই, ১৯৫৬) পৃঃ ১১০
সূচীঃ আরক, দাদু, বাঘের মন্তর, থনটন কাকা, মুটি মন্তর, হারুণ-অল রসিদের বিপদ, ঠেলাগাড়ি, কাশী কবিরাজের গল্প, অবিশ্বাস্য, বিরজা হোম ও তার বাধা, পথ চেয়ে।
৪৬। গল্প পঞ্চাশৎ
সূচীঃ নবাগত, উপলখণ্ড, ক্ষণভঙ্গুর, বিধুমাষ্টার ও জ্যোতি রিঙ্গণের প্রায় সব গল্প।
৪৭। রূপ হলুদ। (গল্প) জ্যৈষ্ঠ ১৮৭৯ শকাব্দ। পৃঃ ১১৮
সূচীঃ ননীবালা, বিরজা হোম ও তার বাধা, বুড়ো হাজরা কথা
কয়, কাশী কবিরাজের গল্প, ছোট নাগপুরের জঙ্গলে, মায়, আমার ডাক্তারী, বর্শেলের বিড়ম্বনা, কাদা, ভৌতিক পালঙ্ক।
৪৮। অশনিসংকেত (উপন্যাস)। ভাদ্র ১৩৬৬। পৃঃ ১৬০।
‘মাতৃভূমিতে (মাঘ ১৩৫০—মাঘ ১৩৫২) ধারাবাহিক রূপে প্রকাশিত হয়। চৈত্র ১৩৫২ সালে মাতৃভূমির অবলুপ্তির পর এই রচনাটি অসমাপ্ত থেকে যায়।
৪৯। দম্পতি (দেব সাহিত্য কুটির প্রকাশিত)।
৫০। অনুসন্ধান (১৯৫৯ খৃঃ) বিভূতি প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিতব্য।
                                    -তথ্যসূত্র- বিভূতিভূষণ গ্রন্থ


বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা সংগ্রহ করতে পারেন বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা প্রবন্ধ 'বিভূতিভূষণ - চিত্তরঞ্জন ঘোষ' বইটির বাংলা পিডিএফ।

No comments:

Post a Comment