সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Monday, May 24, 2021

সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন পিডিএফ


 সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন, বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন'
লেখক- সুশীল রায়
বইয়ের ধরন- গল্প সংগ্রহ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২২৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১১এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত

সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন
 

যে গল্পের শেষ নেই সে হচ্ছে মানুষের বিচিত্র জীবন। আশ্চর্য ছোটগল্পের মতই হঠাৎ তার আরম্ভ। পরতে-পরতে তার নানা অকল্পনীয় ঘটনার রঙে রসের পোঁচ লাগতে লাগতে হঠাৎ একদিন রাঙা হয়ে উঠেই হঠাৎ শেষ হয়ে যাওয়া। তাইতেই জীবনের শেষ হয়, কিন্তু গল্পে হয় না। তাই জীবনের নটে গাছটি মুড়িয়েও যেখানে গল্প থামল না সেখানে বলবার জন্য কারও থাকা চাই। তিনি গল্প-লেখক। জীবনে গল্পের তাই এত দাম, লেখকের তাই এত সম্মান। জীবন-খাতা শূন্য পাতাগুলো যিনি আপন রঙে ভরিয়ে দিলেন আমাদের চোখের সামনে সেই সৃষ্টিকর্তার নেপথ্যজীবন সম্বন্ধে আমাদের জানবার কৌতুহল বড়োই ক্ষুধার্ত। এই জন্যেই আজ সুশীল রায়ের জীবনের পাতাগুলো ইতিকণার পাতায় একটুকরো জলছবি হরফে ছাপা হল। জলছবির বৈশিষ্ট্য এই যে, এতে জলের লোত দেখিয়ে ছবি দেখার তৃষ্ণাকে পুরো না মিটিয়ে বরং বাড়িয়েই দেয়।
জীবনে অনেক ধাক্কার টাল সামলাতে গিয়ে অনেক পাক খেয়েছেন সুশীল রায়। এই বিদগ্ধ জীবন অপরের ক্ষেত্রে কি কাজে লাগত জানিনে, কিন্তু সুশীল রায়ের শিল্পী-মন তাকে সৎকাজেই লাগিয়েছেন। একই রোদে কেউ পুড়ে হয় খাক, কারও গায়ে ধরে পাক।
১৯১৫ খৃস্টাব্দে সুশীল রায় উত্তরবঙ্গের রাজসাহী শহরে ভূমিষ্ঠ হন। তাঁর পিতা স্বর্গীয় গোবিন্দ রায় ছিলেন ঐ অঞ্চলের বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তি; তিনি ছিলেন রাজসাহীর সরকারী উকিল, জিলা-কংগ্রেসের সেক্রেটারী, ‘হিন্দুৱঞ্জিকা' পত্রিকার সম্পাদক। ১৯১৮ খৃস্টাব্দে তার অকালমৃত্যুতে অতি শৈশবেই সুশীলবাবু ভাগ্য বিপর্যয় উপস্থিত হয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের মধ্য দিয়ে তাঁর শিক্ষার্থী-জীবন দ্রুততালে অগ্রসর হয়ে আসে। তাঁর ছাত্র-জীবন অনুসরণ করে দেখলে দেখা যাবে তাঁর অস্থির চিত্ত চঞ্চলভাবে বিজ্ঞান বাণিজ্য-বিভাগ প্রভৃতি ঘুরে অবশেষে সাহিত্যে নির্বাণ লাভ করে। তিনি রিপন কলেজ থেকে আই. এ-সি, বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বি. কম., ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্গভাষায় এম. এ. উপাধি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ছাত্র-জীবন যখন এইভাবে ধাপে-ধাপে এগিয়ে চলেছে, সাহিত্যচর্চাও সেই সঙ্গে চলেছিল মহা-উৎসাহে। চোদ্দ বছর বয়েস থেকে তাঁর কবিতা-রচনার সূত্রপাত। মাত্র উনিশ বছর বয়সে, তখন তিনি কলেজের প্রাঙ্গণ পার হননি, রচনা করেন 'একদা' নামক মনোরম উপন্যাসখানি। একটি মাত্র দিনের কাহিনী নিয়ে এই উপন্যাস। এই 'একদা’র মাধ্যমেই সুশীল রায় একদা কখন সাহিত্য-রসিক ও পাঠকসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বসলেন বলা শক্ত। নানা আক্রমণাত্মক সমালোচনায় উপল-প্রহত-প্রতিতা কিছুতেই রচনার ধারাকে স্তব্ধ হতে দেয়নি। লেখনী স্বচ্ছন্দ গতিতে বয়ে চলল।
এর পরে 'শ্রীমতী পঞ্চমী সমীপেষু' ‘ত্রিবেণী' 'রুদ্রাক্ষ' এই তিনখানা উপন্যাস ও 'পাঞ্চালী' 'সুচরিতাসু' নামে দুখানা কবিতা-গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। উপন্যাসগুলির মধ্যে 'শ্রীমতী পঞ্চমী সমীপেষু'-ই শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। এখান হিন্দিতে অনুদিত হয়েছে। এছাড়া 'লক্ষ্মীহরণ নাট্য' 'কুলাঙ্গার’ ‘রাজসী’ ‘মাথা’ ‘মধু গাউলি' প্রভৃতি বহু গল্প আছে যারা নিজেরাই সুশীলবাবুকে সাহিত্য-সমাজে চিরচিহ্নিত করে রাখবে। সুশীলবাবুর রচনাশৈলীতে এটা মিঠে সুর মেলে, মেলে হৃদয়-ঘনতার আমেজ। সুশীলবাবুর চোখ আছে খুঁটিয়ে দেখবার, অতি সহজ ভাষা আছে ফুটিয়ে তুলবার। তাঁর রুচি আছে, বসবোধ আছে।
নেপথ্যে বাস করাই এঁর জীবনের বৈশিষ্ট্য। তাই বেনামের আড়ালে বসে তিনি কালিদাসের রঘুবংশ ও মেঘদূত কাব্যের অপূর্ব সাহিত্যিক আলোচনা করেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘উদয়ন' ছদ্মনামে তিনি 'আলেখ্যদর্শন' পর্যায়ে এই দুই মহাকাব্যের বিচার করেছেন, সুধী-সাধারণের কাছে সে রচনা বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। আর, 'অমরু’ ছদ্মনামে আনন্দবাজারেই তিনি লিখেছেন ‘জল্পনা ও কল্পনা' পর্যায়ে অনেকগুলি লেখা, এ রচনায় গল্পের আমেজ ও রম্যরচনার রস একত্রে মিশে সার্থক রচনা হয়ে উঠেছে। স্বনামে তিনি দেশ পত্রিকার অনেকগুলি রম্যরচনা লিখেছেন।
এই প্রসঙ্গে আর-একটি কথাও উল্লেখযোগ্য। সুশীল রায় জাত-কবি। একালে দীর্ঘকাব্য রচনা প্রায় উঠে গিয়েছিল ; সুশীলবাবু কাব্যের সে অপবাদ দুর করেছেন। মহাভারতের কাহিনী নিয়ে তিনি ইতিমধ্যে দু'টি দীর্ঘকাব্য রচনা করেছেন, ‘সুলভার তপস্যা’ ও  'সুভ্র-প্রণয়কথা’ -১৩৫৮ ও ১৩৫৯ সনের আনন্দবাজার পত্রিকার বিশেষ দোল-সংখ্যায় এই কাব্য দুটি প্রকাশিত হয়েছে।
জীবন তাঁর কর্মবহুল। ছোট-বড় বহু কাজই তিনি করেছেন অস্থিরভাবে, অস্থায়ীভাবে। টুথ-পাউডারের ক্যানভাসিং থেকে শুরু করে মেডিকাল কলেজে ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্টান্ট-গিরি, সরকারী চাকুরী, পত্রিকা সম্পাদনা, শিক্ষকতা ইত্যাদি নানাকাজের মধ্যে দিয়ে তিনি জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। - 'ইতিকথা' থেকে উদ্ধৃত

বইটি সম্পর্কে কয়েকটি কথাঃ

ভারতীয় সাহিত্যের প্রসঙ্গ উত্থাপন করবার প্রয়োজন নেই ; পৃথিবীর যে-ক’টি সেরা সাহিত্য তার দরবারেও বাংলা ছোটগল্পের স্থান কিছু তুচ্ছ করবার মতন নয়। কাব্য ও উপন্যাস নিয়ে নানা চিত্তে নানা সংশয়, নানা প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, নাটক নিয়ে তো বটেই ; কিন্তু বাংলা ছোটগল্প বৃহৎ সাহিত্য-দরবারেও নিঃসংশয়ে নিজের আসন দাবি করতে পারে। সে দাবির অধিকার রবীন্দ্রনাথই আমাদের দিয়ে গেছেন এবং সেই থেকে শুরু করে গত পঞ্চাশ-ষাট বছরের ভেতর বাংলা ছোটগল্প যে দ্রুতগতিতে বেড়ে উঠেছে তা ভাবলে বিস্মিত হ'তে হয়। এত স্বল্পকালের ভেতর এমন সুষ্ঠু এবং স্বাস্থ্যময় বিবর্তনের দৃষ্টান্ত পৃথিবীর সাহিত্যের ইতিহাসে বিরল।
বর্তমান বাংলা ছোটগল্পের রূপ, তার আকৃতি-প্রকৃতি, গঠননৈপুণ্য, কাঠামো, ভঙ্গী ও সাজসজ্জা-একান্তভাবে ধার করা না হলেও বহুলাংশে যে ইংরেজি-ফরাসী-জার্মান-রুশীয় ছোটগল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার ফলে গড়ে উঠেছে তা অস্বীকার করবার উপায় নেই, লাভও নেই, প্রয়োজনই বা কি! কিন্তু বাঙালী লেখক পৃথিবীর এই ঐশ্বর্যকে যেভাবে আত্মস্থ করেছেন, পরদেশী বীজ ও কলমের চাষ করে যে সমৃদ্ধ ফসল ফলিয়েছেন নিজের জমিতে, তা বিস্ময়কর। রবীন্দ্রনাথ-প্রভাতকুমার-প্রমথ চৌধুরী-শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে আজকের যে-কোনা জনপ্রিয় গল্পলেখক পর্যন্ত তার পরিচয় সুবিস্তৃত।
বাংলা ছোটগল্পের লেখক বাঙালী মধ্যবিত্তের নানা স্তরের বস্তু ও ভাবপুঞ্জ যে-রকম পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছেন, যে-সত্য ও গভীর পরিচয় বহন করে এনেছেন সে-পরিচয় ও বিশ্লেষণ আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। বর্তমান গল্পগুলিও তার ব্যতিক্রম নয়।
সুশীল রায়-মশায় সাম্প্রতিক বাংলার সেরা ছোটগল্প-লেখকদের মধ্যে অন্যতম ; তার শক্তি ও প্রতিভা ইতিমধ্যেই বাংলার সাহিত্যিক ও পাঠকমহলে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
সুশীলবাবু গল্প ফাঁদতে জানেন, শেষ করতে জানেন, এবং গল্প বলবার কৌশল তার আয়ত্তে। প্রমথ চৌধুরী মশায়ের অনুবৃত্তি করে বলা যায়, এই রচনাগুলি ছোটও বটে, গল্পও বটে। সুশীলবাবুর ভাষা সহজ, স্বচ্ছন্দ ; বাক্যগুলি ছোট, তাদের গতি মাঝে মাঝে আচমকা, কিন্তু সর্বত্র সহজ ও সাবলীল ; কথাবার্তা খুব ঘরোয়া, দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে এবং মধ্যবিত্ত ধ্যানধারণা ও ব্যবহারকাশের সঙ্গে তার সম্বন্ধ বস্তুঘনিষ্ঠ। গল্পের কাঠামো আঁটসাট, গড়ন ধারালো। কল্পিত ঘটনা বস্তুজ্ঞানকে কোথাও আঘাত করে না, খুব সহজ স্বাভাবিক ভাবেই মনে স্বীকৃতিলাভ করে। কিন্তু ঘটনার বিন্যাসে সুশীলবাবু, পাঠকের চমক লাগাতে ভালবাসেন, এবং সে-কাজে তিনি নিপুণ। হঠাৎ বাঁক ফিরিয়ে দেওয়ার, আচমকা একটা পরিণতি দানের কাজটা খুব সহজ নয় ; অথচ কয়েকটি গল্পেই তিনি অত্যন্ত সহজে অথচ সুকৌশলে এই দুরূহ কাজটি করেছেন। মধ্যবিত্ত জীবনের নানাস্তরে তাঁর দৃষ্টি অত্যন্ত স্বচ্ছ ও গভীর, এবং সবচেয়ে যা বড় কথা, একটা সহানুভূতির সুর সর্বত্র প্রত্যক্ষ এবং তাঁর ভাষা ও বাকভঙ্গীর ভেতর দরদের লেশমাত্রও যাতে ধরা না পড়ে সে-চেষ্টা তিনি সজ্ঞানে করেছেন।

এখন এই পোষ্টটিতে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই এহেন লেখকের লেখা চোদ্দটি গল্প সংকনল বই 'সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন' এর পিডিএফটি।
সূচীপত্র-

মাথা
খাটাল
ফানুস
লক্ষ্মণ পণ্ডিত
ডেকরেটর মনোহর
পাখোয়াজ
ফেরার
সাবেক কালের কাব্য
মান
দাগ
মহিমের ফ্লুট
কপাল
কচ ও কেটি
মধু গাউলি


উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এই পোষ্ট হইতে একটি গল্প সংগ্রহ বই- 'সুশীল রায়ের গল্প-সঞ্চয়ন'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment