হুতোম প্যাঁচার নকশা - কালীপ্রসন্ন সিংহ, পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'হুতোম প্যাঁচার নকশা'
লেখক- কালীপ্রসন্ন সিংহ
বইয়ের ধরন- বাংলা দুস্পাপ্য বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১৯২
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১৩এমবি
প্রিন্ট ভালো (ক্লিকেবল সূচীপত্র), জলছাপ মুক্ত
বুদ্ধির সঙ্গে হৃদয়বৃত্তির অপূর্ব সমন্বয় হয়েছিল কালীপ্রসন্নের জীবনে। ঊনবিংশ শতকের পূর্ণ প্রগতিশীলতার প্রতিনিধি তিনি। জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর কী অপরিসীম শ্রদ্ধা যে ছিল তার উজ্জ্বলতম অভিজ্ঞান হল তার বিপুলতম কীর্তি “মহাভারতের" অনুবাদ। বিদ্যাসাগর থেকে আরম্ভ করে তখনকার সমস্ত শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত এই বিরাট কাজে তাঁর সহায়তা করেছিলেন।
'হুতোম প্যাঁচার নকশা' সম্পর্কে দু-একটি কথা
কালীপ্রসন্নের অসাধারন সৃষ্টি‘হুতোম প্যাঁচার নকশা' -অনন্য সমাজচিত্র। শুধু চিত্র বললে ঠিক হয় না—বইটি আসলে চিত্রশালা—‘পিকচার গ্যালারি'। চড়ক-পার্বণের রঙ্গ, বারোয়ারীর নামে সমকালীন সমাজের দুনীতি ; মরা ফেরা, ছেলে ধরা, মিউটিনি, সাতপেয়ে গোরু, আর দরিয়াই ঘোড়ার হুজুগের ব্যঙ্গ-প্রসঙ্গ, বিচিত্র বুজরুকির নমুনা, হঠাৎ অবতার পদ্মলোচন দত্তের শ্লেষতিক্ত উপাখ্যান, মাহেশের স্নানযাত্রার বর্ণনা, রামলীলার হট্ট উৎসব এবং নব প্রবর্তিত রেলওয়ের অতি বাস্তব চিত্র-হুতোমের নকশা থেকে এরা কেউই বর্জিত হয়নি। শুধু বিশুদ্ধ সমাজচিত্র নয়—সংস্কারব্রতীর উপদেশও নয়—রসসৃষ্টি হিসেবেও ‘নকশা’র একটি অসামান্য মর্যাদা আছে। বইটি উপন্যাসের চাইতেও সুখপাঠ্য। এমন একটি উপাদেয় গ্রন্থের সঙ্গে সচরাচর আমাদের পরিচয় ঘটে না।
“আলাল” প্রকাশিত হওয়ার চার বছর পরে “হুতোম প্যাঁচার নকশা” আবির্ভূত হয়। আবির্ভাব যে চাঞ্চল্যকর হয়েছিল তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তার কারণ, এই নকশার মধ্যে কাল্পনিকতার স্থান ছিল না বললেই চলে। দুঃসাহসী কালীপ্রসন্ন দেশের কুপ্রথা, মূঢ়তা, ভণ্ডামি এবং ইতরামীর একেবারে ফোটোগ্রাফিক ছবি যেন তাঁর একস-রে লেন্সে ধরে ফেলেছেন। কোথাও বাস্তব নামধাম বজায় রেখে, কখনো বা সামান্যমাত্র আবরণ রেখে তিনি অনেক তথাকথিত “বিখ্যাত" ব্যক্তির খাঁটি চরিত্রটি পাঠকের সামনে তুলে ধরেছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র দীনবন্ধু সম্পর্কে যা বলেছিলেন-কালীপ্রসন্ন সম্বন্ধেও সে উক্তি প্রযোজ্য: তিনি তুলি ধরে সামাজিক বৃক্ষে সমারূঢ় বানরের ল্যাজ সুদ্ধ এঁকে দিয়েছিলেন।
এছাড়া আঙ্গিকের দিক থেকে বইটির চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য হল এর ভাষা। একেবারে সর্বজনবোধ্য চলতি ভাষায় লেখা বই হিসাবে বাংলা গদ্যে এইটিই প্রথমতম।
বাঙালীর জাতীয় ইতিহাসে কালীপ্রসন্ন সিংহ অমর। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে “হুতোম প্যাঁচার নকশা” মৃত্যুহীন কৃতিত্ব।
কালীপ্রসন্ন-এর বংশ পরিচয়।।
জোড়াসাঁকো নিবাসী দেওয়ান বংশের নন্দলাল সিংহের একমাত্র পুত্র। ১৮৪০ খ্ৰীষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে জন্ম হয়।
শিক্ষা।।
প্রথমে হিন্দু কলেজে, পরে গৃহশিক্ষকের কাছে।
সংস্কৃতি-সাধনা।।
বিদ্যোৎসাহিনী সভার প্রতিষ্ঠা (জুলাই বা জুন, ১৮৫৩); বিদ্যোৎসাহিনী সভার পক্ষ থেকে মধুসূদনের সংবর্ধনা (১২ই ফেব্রুয়ারি, ১৮৬১); ওই সভার উদ্যোগেই রেভারেণ্ড লঙের সংবর্ধনা। বিদ্যোৎসাহিনী রঙ্গমঞ্চ স্থাপন (১৮৫৬)। বিখ্যাত অধ্যাপক ডি-এল রিচার্ডসনের বিদায় সংবর্ধনা জ্ঞাপন এবং তার বিলাতযাত্রার পাথেয়ে সহায়তা।
পত্র-পত্রিকা পরিচালন।।
বিদ্যোৎসাহিনী পত্রিকা, সর্বতত্ত্ব প্রকাশিকা, রাজেন্দ্রলাল মিত্রের বিবিধার্থ সংগ্রহের কয়েক সংখ্যা সম্পাদন এবং পরিদর্শক পত্রিকা।
সাহিত্য কীর্তি।।
বাবু নাটক, বিক্রমোর্বশী নাটক, সাবিত্রী সত্যবান নাটক, মালতী মাধব নাটক, হুতোম প্যাঁচার নকশা (১৮৬১, '৬২, '৬৪), বঙ্গেশ বিজয়, শ্ৰীমন্তবদগীতা, মহাভারত, হিন্দু পেটরিয়ট সম্পাদক মৃত হরিশ মুখোপাধ্যায়।
দেশপ্রেম ও অন্যান্য কীর্তি।।
বিদ্যাসাগরের বিধবা-বিবাহ সমর্থন। বহুবিবাহ-নিরোধে সহযোগিতা। ‘নীলদর্পণে'র মামলায় পাদরি লঙের জরিমানার টাকা দেওয়া। হিন্দু পেট্রিয়ট সম্পাদক হরিশ মুখখাপাধ্যায়ের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে মুদ্রাযন্ত্র ও পত্রিকার স্বত্বরক্ষণ। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দুর্ভিক্ষে দান। গ্রান্ট, মেমোরিয়াল ফাণ্ডে দান। 'ভারতবর্ষীয় সংবাদপত্র’ ও ‘সোমপ্রকাশ’কে অর্থ সাহায্য। কলকাতায় প্রথম নিজব্যয়ে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। বাঙালী-বিদ্বেষী স্যার ওয়েলসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় তীব্র ভাষণ। অবৈতনিক ম্যাজিস্ট্রেটরূপে অসামান্য ন্যায়নিষ্ঠা। ১৮৭০ সালের ২৪শে জুলাই অকাল মৃত্যু।
এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা পুরানো অথচ মূল্যবান সামাজিক দলিল 'হুতোম প্যাঁচার নকশা - কালীপ্রসন্ন সিংহ' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন ।
No comments:
Post a Comment