অচলপত্র সংকলন পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Saturday, January 30, 2021

অচলপত্র সংকলন পিডিএফ


 অচলপত্র সংকলন- বাংলা দুস্প্রাপ্য বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'অচলপত্র সংকলন'
সম্পাদনা- জ্যোতির্ময়ী চৌধুরী
বইয়ের ধরন- সম্পাদিত বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৩৫৯
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৩৩এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত

অচলপত্র সংকলন পিডিএফ

১৯৪৮ সালের গোড়ায় কলকাতায় একটি নতুন মাসিক পত্রিকা বেরোল- 'বড়োদের পড়বার, ছোটদের দুধ গরম করবার একমাত্র মাসিক', এই অভিনব বিজ্ঞাপনে শশাভিত হয়ে ‘অচলপত্র’ চমকিত করল সবাইকে। প্রথম সংখ্যার এই ঘোষণা সব সংখ্যাতেই থাকত। তবে দ্বিতীয় সংখ্যায় ছিল আর একটি অদ্বিতীয় ঘোষণা—‘অনেকেই প্রথম সংখ্যা বাজারে দেখাই যায়নি, এ অভিযোগও করেছেন। ক্রমশ আমাদের এ সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে যে অচলপত্রের প্রথম সংখ্যা আদৌ কোনদিন বেরিয়েছিল কিনা। এই সূত্রেই অচলপত্র প্রকাশনা দীপ্তেন্দ্রকুমার সান্যালের ‘এলেবেলে' বইটির যে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছিল, সেটি মনে পড়বে—সেই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল-প্রথমেই পঞ্চম সংস্করণ বেরোচ্ছে। পরে চতুর্থ, তৃতীয়, দ্বিতীয় এবং প্রথম সংস্করণ বেরোতে থাকবে। পাঠক মুহূর্তমধ্যে বুঝতে পারেন যে একজন সম্পূর্ণ নতুন সম্পাদক, একটি নতুন পত্রিকা এবং এক নতুন রসিক এসে গিয়েছেন।
‘অচলপত্র' পত্রিকার এই শক্তিশালী সম্পাদক এবং অন্যতম শক্তিমান লেখক ছিলেন দীপ্তেন্দ্রকুমার সান্যাল। ১৯৪৭-এর বহু প্রত্যাশিত স্বাধীনতা যখন কারো প্রত্যাশাই মেটায়নি, অখণ্ড ভারতের খণ্ডিত পরিণাম যখন দুর্গতিতে পরিণত হল, তখন মানুষ সব কিছুকেই চাইছিল আঘাত করতে। নিজে আহত হচ্ছে, তাই সে বিব্রত, আশাহত। 'অচলপত্র’ সেই ইচ্ছাপূরণের ইশারা নিয়ে এসেছিল। বিদ্রুপের চেহারায় সেই আঘাত হয়ে উঠল উজ্জ্বল, উন্মুখ হয়ে উঠল পাঠক। সবার বুক ভেঙে গেছে, চাবুক মারার জন্য দীপ্তেন্দ্রকুমার যে অস্ত্রটি তুলে নিলেন তার নাম উইট। ক্ষুরধার pun, ভাষার মধ্যে অপ্রত্যাশিত মোচড় এসব ছিল তার সহজাত ক্ষমতা।

আজকের পাঠক ‘অচলপত্র’ দেখেননি। আক্রমণকে খরতর করার মতো আকর্ষক ভাষার সঙ্গে তাদের পরিচয় নেই। রসিকতা করার যে দুবার প্রবণতা এবং দুর্দম ক্ষমতা ‘অচলপত্র’কে সর্বদাই শাণিত করে রাখত, তার সংবাদ এ যুগের পাঠকদের জানার কথা নয়। এ যুগ, অচলপত্রের ভাষায়, হুজুগ মাত্র। এ সংকলনের প্রয়োজন ছিল সেইজন্যই। যে রসিকতা হারিয়ে গিয়েছে, যে দিন চলে গিয়েছে, তাকে ফিরিয়ে আনার কাজটা প্রকৃতই জরুরি হয়ে উঠেছিল। সংকলন সম্পাদিকা যে শ্রম স্বীকার করেছেন সেজন্য তাকে সাধুবাদ দেবেন পাঠকেরা।
১৯৪৮ সালে এই পত্রিকা প্রকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই জনপ্রিয় হয়েছিল। ১৯৫২ পর্যন্ত মাসিক পত্রিকা হিসেবেই বেরোত। আগেই বলেছি, পত্রিকাটির বিশেষত্ব ছিল বিদ্রুপ, ব্যঙ্গ। বিদ্রুপ, কিন্তু নির্দোষ নয়, ভাষায় ভঙ্গিতে এর তীক্ষ্ণতা তীব্র হয়ে উঠছিল। সবসময়ে এই তীব্রতা সীমা মেনে চলেনি। আসলে, দীপ্তেন্দ্রকুমার চারপাশে দৃষ্টি ফেলতেন তির্যকভাবে। একসময়ে Attack নামে একটি ইংরেজি পত্রিকা তিনি অল্পদিনের জন্য চালিয়েছেলেন। তার শ্লোগান ছিল—Attack is the best policy for defence। এই আক্রমণ যেমন তাকে পপুলার করেছিল, তেমনি পাল্টা সমালোচনার মুখেও ফেলেছিল। পদে পদে বিপদে পড়েছেন, তবু আপসের পথে যাননি।

পত্রিকাটির ব্যঙ্গ ছিল প্রায়শই নিষ্ঠুর, নির্মম অথচ সেইসঙ্গে উপভোগ্য। বা, হয়তো সেইজন্যই সুস্বাদু হতো। কাগজের চরিত্রটাই ছিল বেপরোয়া। কাউকে পরোয়া করতেন না দীপ্তেন্দ্রকুমার। রাজনীতিতে নয়, সাহিত্যে নয়।
ক্রমশ দীপ্তেন্দ্রকুমার এতটাই বিতর্কিত হয়েছিলেন যে তখন তাকে ছদ্মনাম ব্যবহার করতে হচ্ছে। নীলকণ্ঠ' ছদ্মনামে সমাজের হলাহলের বিরুদ্ধে কোলাহল করে চলেছেন, বিনিময়ে গরল নিয়েছেন জীবনে।

আজকের পাঠক অচলপত্র পড়েনি, ক্লার্ক গেলকেও সে চেনে কিনা জানি না, কিন্তু এই সংকলনটি হাতে তুলে নিলে এবং পাতা উল্টোতে গেলে সে যে এই পত্রিকাটির প্রতি আকৃষ্ট হবে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। এমন এক আশ্চর্য কাগজের খবর পেয়ে তাকে অবাক হতেই হবে। এমনটি কখনো ছিল না, সম্ভবত আর কখনো হবে না। মেজাজ এবং মর্জির, বুদ্ধি এবং বিবেচনার, রস এবং রসজ্ঞের এমন মজার সমন্বয় চট করে ঘটে না। এমনটি করা যায় না, এমনটি হয়ে যায়। 'অচলপত্র একটাই হয়েছিল যতদিন সচল ছিল, আবার যখন সত্যিই অচল হল তখন আর একটাও হল না। মানুষের হিত করেছে বলা চলে না, তবে অচলপত্র মানুষের হিতাহিতজ্ঞান উল্টিয়ে দিয়েছে, এমনটি ভাবা চলে।
দীপ্তেন্দ্রকুমার স্বল্পায়ু ছিলেন। মাত্র বিয়াল্লিশ বছর বয়সে অকস্মাৎ তার জীবনাবসান হয়ে যায়। যেহেতু ‘অচলপত্র' এবং দীপ্তেন্দ্রকুমার পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক ছিলেন, তাই পত্রিকাটিও বেশিদিন বাঁচেনি। এই সংকলনটি আদ্যোপান্ত পাঠের পরে আজকের পাঠক সেজন্য বিষন্ন হবেন। কারণ তিনি বুঝবেন যে আরো পরিণত হবার অবকাশ পেলে ‘অচলপত্র'কে সম্পাদক অনেক দূর নিয়ে যেতে পারতেন। অনেক দূর গতি হতো তার (দীপ্তেন্দ্রকুমার থাকলে বলতেন 'অনেক দুর্গতি’); তা হতে পারেনি।

যাইহোক সংকলনটির পিডিএফ ফাইল এই পোষ্টে শেয়ার করা হল।

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পঠকগণ, আপনারা দুস্প্রাপ্য পত্রিকা সংকলন বই- 'অচলপত্র সংকলন'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment