শ্রেষ্ঠগল্প - শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- শ্রেষ্ঠগল্প
লেখক- শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
বইয়ের ধরন- গল্প সংগ্রহ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২৫০
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৭এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত
১৯৫৫ সাল নাগাদ শৈলজানন্দ চিত্রপরিচালনার জীবন থেকে পুরোপুরি সরে আসতে পারেননি, কারণ তার পরিচালিত শেষ ছবি ‘আমি বড় হবো’ নির্মিত হয় ১৯৫৭ সালে। প্রথম যৌবনের মতো আবার নতুন করে সাহিত্যচর্চায় নিমগ্ন হবার সময় ও সুযোগ তখনও (১৯৫৫) তাঁর আসেনি বিভিন্ন কারণে। কিছুদিন পর থেকেই অবশ্য তিনি আবার কলম ধরেছিলেন এবং ১৯৭২ সাল পর্যন্ত নিরলসভাবে অসংখ্য গল্প-উপন্যাস লিখে বাংলাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। আজ শৈলজানন্দের সেরা গল্পগুলি বাংলার সাহিত্যপিপাসু পাঠকদের কাছে উপস্থাপনা করার দায়বদ্ধতা থেকে বলতে পারি, শৈলজানন্দের লেখা বিপুল গল্পসম্ভার থেকে শ্রেষ্ঠ গল্প নির্বাচন করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। এক্ষেত্রে সম্পাদকের রুচি, ভালো লাগা, মন্দ লাগা এসবের একটা সীমাবদ্ধতা থেকেই যায়। তবে শৈলজানন্দের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে দীর্ঘকালের গবেষণাকর্মে যুক্ত থাকার সূত্রে বলা | যায়, যে গল্পগুলি এই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করা হলাে সেগুলি ছাড়াও আরও বেশ কিছু গল্প এতে স্থান পেতে পারতো, কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই গল্পগুলিকে পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়া গেল না।
১৯১৮ সালে শৈলজানন্দ গল্প লেখা শুরু করেন, আগে অবশ্য কবিতা লিখতেন। তার এই পর্বের গল্পগুলি প্রকাশিত হয়েছিল মাধুরী’, ‘মোসলেম ভারত', 'মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা', ‘উপাসনা’, ‘শওগাত', 'নওরোজ’ প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায়। ১৯১৯ সালে শৈলজানন্দের প্রথম গল্পগ্রন্থ 'মর্মবাণী’ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে লেখকের আরও অজস্র গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল, যেমন : ‘আমের মঞ্জরী’, ‘দিনমজুর’, ‘মারণ-মন্ত্র', 'বধূ-বরণ’, ‘অতসী', 'জীবন নদীর তীরে' প্রভৃতি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কোনো গল্পগ্রন্থের প্রতিই লেখকের নিজস্ব নির্বাচন বা চিন্তাভাবনার অবকাশ বোধহয় হয়ে ওঠেনি। তাই এই গল্পগ্রন্থগুলির মধ্যে নানান ত্রুটিবিচ্যুতি আছে। যাই হোক, শৈলজানন্দ ১৯১৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত প্রায় তিনশো'র মতো ছোটবড় গল্প লিখে গেছেন। কিন্তু বাংলা সাহিত্যের প্রথম সারির অন্যতম সাহিত্যিক হয়েও শৈলজানন্দ আজ বিস্মৃতপ্রায়। এর প্রধান কারণ তাঁর রচনাগুলি সুসম্পাদিত হয়ে নতুনভাবে প্রকাশ করার কাজে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই এই সংকলনের গল্পগুলি সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হলো যাতে পাঠক, ছাত্রছাত্রী, গবেষক সবাই উপকৃত হতে পারেন এবং গুণগত মানের দিক থেকেও বইটি আকর্ষণীয় হয়। যেমন : ১। কাঙালী-ভোজন - ১৩৩১, আশ্বিন মাসিক বসুমতী’ পত্রিকা
২। ধ্বংসপথের যাত্রী এরা — ১৩৩১, ফাল্গুন ‘প্রবাসী’ পত্রিকা
৩। জনি ও টনি - ১৩৩৩, জ্যৈষ্ঠ কালিকলম' পত্রিকা
৪। নারীমেধ - ১৩৩৪, আষাঢ় ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৫। অতি ঘরী না পায় ঘর – ১৩৩৭, আশ্বিন ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৬। অসমাপ্ত - ১৩৩৭, ফাল্গুন ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৭। বলি মঞ্জুর - ১৩৩৮, পৌষ ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৮। পোড়ারমুখী - ১৩৪২, ৩য় বর্ষ ‘বর্ষবাণী' পত্রিকা
৯। মারণ-মন্ত্র - ১৩৩৩, চৈত্র ‘কালিকলম' পত্রিকা
১০। হতভাগা - ১৩৪১, আষাঢ় ‘উদয়ন' পত্রিকা
১১। এই জীবনের পাওয়া ১৩৩১, পৌষ, ‘বিজলী’ (সাপ্তাহিক)
১২। জন-ঋণী - ১৩৪০, শ্রাবণ ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
১৩। দুঃস্বপ্ন - ১৩৩৮, আষাঢ় ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
এই তালিকা থেকে বোঝা যায় যে, গল্পগুলির অধিকাংশই শৈলজানন্দ তার প্রথম যৌবনে রচনা করেছিলেন এবং তখনও তিনি চিত্রপরিচালক হয়ে ওঠেননি। গল্পগুলি সম্পর্কে বিস্তৃত কোনো আলোচনা বা বিশ্লেষণে না গিয়ে শুধু বলা যায় যে, সুগভীর বাস্তবতাবোধ, নিপীড়িত মানবাত্মার প্রতি মমতা, নারীজীবনের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি অপার সহানুভূতি এবং বর্ণনা ও ভাষার সুষমামণ্ডিত গতি শৈলজানন্দের সাহিত্যের সব কটি বৈশিষ্ট্যই এই গল্পগুলিতে আছে। শৈলজানন্দের গল্প-উপন্যাসে নারী-চরিত্রেরা প্রথম থেকেই স্বমহিমায় উজ্জ্বল, তুলনায় পুরুষচরিত্রগুলি কিছুটা অন্য ধরনের। বধূবরণ, নারীমেধ’, ‘অতি ঘরন্তী না পায় ঘর', 'বদলি মধুর’, ‘কৃষ্ণা', 'জয়া', 'অসমাপ্ত’, ‘এ জীবনের পাওয়া প্রভৃতি গল্পগুলির প্রত্যেকটিতেই নারী চরিত্রগুলি অসামান্য শিল্পরূপ পরিগ্রহ করেছে। উপেক্ষিত প্রেমের করুণ ও মধুর গল্প হিসাবে ‘বলি মঞ্জুর' গল্পটি বাংলাসাহিত্যের সর্বকালের একটি সেরা গল্প। ডঃ নন্দগোপাল সেনগুপ্ত বলেছেন, "বধূবরণ', 'কামিনীকাঞ্চন' (কৃষ্ণ) এবং ‘অতি ঘরন্তী না পায় ঘর’- এই তিনটি গল্প বিশ্বসাহিত্যের সেরা গল্পগুলির মধ্যে স্থান পাওয়ার যোগ্য।" কৃষ্ণা' গল্পটি কামিনীকাঞ্চন নামেও প্রকাশিত হয়েছিল। তাছাড়া এই গল্পটি অবলম্বনে তপন সিংহ ‘উপহার’ (১৯৫৫) নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। বলি মজুর’ গল্পটিও দূরদর্শনে চিত্রায়িত হয়। ‘অসমাপ্ত গল্পটি ‘রাখালমাষ্টার’ নামেও প্রকাশিত হয়েছিল। 'দুঃস্বপ্ন’ গল্পটি শৈলজানন্দ পাঠ করেছিলেন রমেশচন্দ্র সেনের ‘সাহিত্যসেবক সমিতির সভায় এবং গল্পটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। গল্পটি 'ভারতবর্ষ' পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি পত্রপত্রিকা এবং গল্পসংকলনে অন্য নামে প্রকাশিত হয়। তাছাড়া এই গল্পটিকে অবলম্বন করে শৈলজানন্দ একটি উপন্যাসও লিখেছিলেন। শৈলজানন্দ ও স্ত্রী লীলাবতী দেবী দুজনেই পশুপাখি খুব ভালোবাসতেন। শ্যামপুকুরের বাড়িতে কুকুর, বিড়াল, পাখিপক্ষির জীবনের সঙ্গে সাহিত্যিক শৈলজানন্দের শিল্পীমানস যেন এক পরম প্রাপ্তির সুর খুঁজে পেয়েছিল। ‘পোড়ারমুখী’, ‘জনি ও টনি’, ‘ইদুর’, ‘পুষি’, ‘বেড়াল’ প্রভৃতি গল্পগুলি তাই সহজেই আমাদের মনকে নাড়া দিয়ে যায়। বীরভূমের শৈশবস্মৃতি-বিজড়িত গল্প ‘জয়া'। নিজের গ্রামের মধ্যেই শৈলজানন্দ দেখেছিলেন ‘জয়া’-কে। সমাজের অসহায় দলিত শ্রেণীর মানুষের জীবন নিয়ে লেখা ‘মারণ-মন্ত্র' গল্পটি শৈলজানন্দের সাহিত্যের একটি বিশেষ দিকের অপরূপ নিদর্শন; তা হলো নিপীড়িত, শোষিত, সর্বহারা শ্রেণীর মানুষের সংগ্রামী জীবনের কথা বলা। 'ধ্বংসপথের যাত্রী এরা’ গল্পটি শৈলজানন্দের নাগরিক জীবনভিত্তিক সাহিত্যসৃষ্টির প্রথম মাইলস্টোন। আঞ্চলিক গল্প থেকে সরে এসে এই গল্পটির মাধ্যমেই তিনি বাংলাসাহিত্যে এক নতুন দিকের সৃষ্টি করেছিলেন। শৈলজানন্দ তখন নিজে শাঁখারীপাড়ার মেসবাড়িতে থাকতেন। বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি এই মেসবাড়িটিকে বাংলাসাহিত্যে চিরস্থায়ী আসন করে দিয়ে গেছেন। এটিও বাংলাসাহিত্যের একটি সেরা গল্প। সারা জীবন ধরে শৈলজানন্দ যে অফুরন্ত গল্পের ধারায় বাংলাসাহিত্যের ভাণ্ডারকে পূর্ণ করে। গেছেন তা থেকে একগুচ্ছ সেরাগল্প সর্বশ্রেণীর পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়া হলো। কাহিনী, ভাষা ও জীবনবোধের অপরূপ ব্যঞ্জনায় গল্পগুলি সবার ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। ড: বুদ্ধদেব দাশ
বইয়ের সূচীপত্র-
বদলি মঞ্জুর
ধ্বংস পথের যাত্রী এরা
জনি ও টনি
বধূবরণ
মারণ-মন্ত্র
পোড়ারমুখী
কাঙালী-ভোজন
জয়া
হতভাগা
এই জীবনের পাওয়া
কৃষ্ণা
নারীমেধ
অসমাপ্ত
অতি ঘরস্তী না পায় ঘর
দুঃস্বপ্ন
জনম-ঋণী
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, সংগ্রহ করে নিন একটি গল্প সংগ্রহ বই- 'শ্রেষ্ঠগল্প - শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়' বাংলা বই পিডিএফ।
ডিজিটাল বইয়ের নাম- শ্রেষ্ঠগল্প
লেখক- শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
বইয়ের ধরন- গল্প সংগ্রহ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২৫০
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৭এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত
১৯৫৫ সাল নাগাদ শৈলজানন্দ চিত্রপরিচালনার জীবন থেকে পুরোপুরি সরে আসতে পারেননি, কারণ তার পরিচালিত শেষ ছবি ‘আমি বড় হবো’ নির্মিত হয় ১৯৫৭ সালে। প্রথম যৌবনের মতো আবার নতুন করে সাহিত্যচর্চায় নিমগ্ন হবার সময় ও সুযোগ তখনও (১৯৫৫) তাঁর আসেনি বিভিন্ন কারণে। কিছুদিন পর থেকেই অবশ্য তিনি আবার কলম ধরেছিলেন এবং ১৯৭২ সাল পর্যন্ত নিরলসভাবে অসংখ্য গল্প-উপন্যাস লিখে বাংলাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। আজ শৈলজানন্দের সেরা গল্পগুলি বাংলার সাহিত্যপিপাসু পাঠকদের কাছে উপস্থাপনা করার দায়বদ্ধতা থেকে বলতে পারি, শৈলজানন্দের লেখা বিপুল গল্পসম্ভার থেকে শ্রেষ্ঠ গল্প নির্বাচন করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। এক্ষেত্রে সম্পাদকের রুচি, ভালো লাগা, মন্দ লাগা এসবের একটা সীমাবদ্ধতা থেকেই যায়। তবে শৈলজানন্দের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে দীর্ঘকালের গবেষণাকর্মে যুক্ত থাকার সূত্রে বলা | যায়, যে গল্পগুলি এই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করা হলাে সেগুলি ছাড়াও আরও বেশ কিছু গল্প এতে স্থান পেতে পারতো, কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই গল্পগুলিকে পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়া গেল না।
১৯১৮ সালে শৈলজানন্দ গল্প লেখা শুরু করেন, আগে অবশ্য কবিতা লিখতেন। তার এই পর্বের গল্পগুলি প্রকাশিত হয়েছিল মাধুরী’, ‘মোসলেম ভারত', 'মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা', ‘উপাসনা’, ‘শওগাত', 'নওরোজ’ প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায়। ১৯১৯ সালে শৈলজানন্দের প্রথম গল্পগ্রন্থ 'মর্মবাণী’ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে লেখকের আরও অজস্র গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল, যেমন : ‘আমের মঞ্জরী’, ‘দিনমজুর’, ‘মারণ-মন্ত্র', 'বধূ-বরণ’, ‘অতসী', 'জীবন নদীর তীরে' প্রভৃতি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কোনো গল্পগ্রন্থের প্রতিই লেখকের নিজস্ব নির্বাচন বা চিন্তাভাবনার অবকাশ বোধহয় হয়ে ওঠেনি। তাই এই গল্পগ্রন্থগুলির মধ্যে নানান ত্রুটিবিচ্যুতি আছে। যাই হোক, শৈলজানন্দ ১৯১৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত প্রায় তিনশো'র মতো ছোটবড় গল্প লিখে গেছেন। কিন্তু বাংলা সাহিত্যের প্রথম সারির অন্যতম সাহিত্যিক হয়েও শৈলজানন্দ আজ বিস্মৃতপ্রায়। এর প্রধান কারণ তাঁর রচনাগুলি সুসম্পাদিত হয়ে নতুনভাবে প্রকাশ করার কাজে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই এই সংকলনের গল্পগুলি সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হলো যাতে পাঠক, ছাত্রছাত্রী, গবেষক সবাই উপকৃত হতে পারেন এবং গুণগত মানের দিক থেকেও বইটি আকর্ষণীয় হয়। যেমন : ১। কাঙালী-ভোজন - ১৩৩১, আশ্বিন মাসিক বসুমতী’ পত্রিকা
২। ধ্বংসপথের যাত্রী এরা — ১৩৩১, ফাল্গুন ‘প্রবাসী’ পত্রিকা
৩। জনি ও টনি - ১৩৩৩, জ্যৈষ্ঠ কালিকলম' পত্রিকা
৪। নারীমেধ - ১৩৩৪, আষাঢ় ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৫। অতি ঘরী না পায় ঘর – ১৩৩৭, আশ্বিন ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৬। অসমাপ্ত - ১৩৩৭, ফাল্গুন ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৭। বলি মঞ্জুর - ১৩৩৮, পৌষ ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
৮। পোড়ারমুখী - ১৩৪২, ৩য় বর্ষ ‘বর্ষবাণী' পত্রিকা
৯। মারণ-মন্ত্র - ১৩৩৩, চৈত্র ‘কালিকলম' পত্রিকা
১০। হতভাগা - ১৩৪১, আষাঢ় ‘উদয়ন' পত্রিকা
১১। এই জীবনের পাওয়া ১৩৩১, পৌষ, ‘বিজলী’ (সাপ্তাহিক)
১২। জন-ঋণী - ১৩৪০, শ্রাবণ ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
১৩। দুঃস্বপ্ন - ১৩৩৮, আষাঢ় ‘ভারতবর্ষ' পত্রিকা
এই তালিকা থেকে বোঝা যায় যে, গল্পগুলির অধিকাংশই শৈলজানন্দ তার প্রথম যৌবনে রচনা করেছিলেন এবং তখনও তিনি চিত্রপরিচালক হয়ে ওঠেননি। গল্পগুলি সম্পর্কে বিস্তৃত কোনো আলোচনা বা বিশ্লেষণে না গিয়ে শুধু বলা যায় যে, সুগভীর বাস্তবতাবোধ, নিপীড়িত মানবাত্মার প্রতি মমতা, নারীজীবনের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি অপার সহানুভূতি এবং বর্ণনা ও ভাষার সুষমামণ্ডিত গতি শৈলজানন্দের সাহিত্যের সব কটি বৈশিষ্ট্যই এই গল্পগুলিতে আছে। শৈলজানন্দের গল্প-উপন্যাসে নারী-চরিত্রেরা প্রথম থেকেই স্বমহিমায় উজ্জ্বল, তুলনায় পুরুষচরিত্রগুলি কিছুটা অন্য ধরনের। বধূবরণ, নারীমেধ’, ‘অতি ঘরন্তী না পায় ঘর', 'বদলি মধুর’, ‘কৃষ্ণা', 'জয়া', 'অসমাপ্ত’, ‘এ জীবনের পাওয়া প্রভৃতি গল্পগুলির প্রত্যেকটিতেই নারী চরিত্রগুলি অসামান্য শিল্পরূপ পরিগ্রহ করেছে। উপেক্ষিত প্রেমের করুণ ও মধুর গল্প হিসাবে ‘বলি মঞ্জুর' গল্পটি বাংলাসাহিত্যের সর্বকালের একটি সেরা গল্প। ডঃ নন্দগোপাল সেনগুপ্ত বলেছেন, "বধূবরণ', 'কামিনীকাঞ্চন' (কৃষ্ণ) এবং ‘অতি ঘরন্তী না পায় ঘর’- এই তিনটি গল্প বিশ্বসাহিত্যের সেরা গল্পগুলির মধ্যে স্থান পাওয়ার যোগ্য।" কৃষ্ণা' গল্পটি কামিনীকাঞ্চন নামেও প্রকাশিত হয়েছিল। তাছাড়া এই গল্পটি অবলম্বনে তপন সিংহ ‘উপহার’ (১৯৫৫) নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। বলি মজুর’ গল্পটিও দূরদর্শনে চিত্রায়িত হয়। ‘অসমাপ্ত গল্পটি ‘রাখালমাষ্টার’ নামেও প্রকাশিত হয়েছিল। 'দুঃস্বপ্ন’ গল্পটি শৈলজানন্দ পাঠ করেছিলেন রমেশচন্দ্র সেনের ‘সাহিত্যসেবক সমিতির সভায় এবং গল্পটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। গল্পটি 'ভারতবর্ষ' পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি পত্রপত্রিকা এবং গল্পসংকলনে অন্য নামে প্রকাশিত হয়। তাছাড়া এই গল্পটিকে অবলম্বন করে শৈলজানন্দ একটি উপন্যাসও লিখেছিলেন। শৈলজানন্দ ও স্ত্রী লীলাবতী দেবী দুজনেই পশুপাখি খুব ভালোবাসতেন। শ্যামপুকুরের বাড়িতে কুকুর, বিড়াল, পাখিপক্ষির জীবনের সঙ্গে সাহিত্যিক শৈলজানন্দের শিল্পীমানস যেন এক পরম প্রাপ্তির সুর খুঁজে পেয়েছিল। ‘পোড়ারমুখী’, ‘জনি ও টনি’, ‘ইদুর’, ‘পুষি’, ‘বেড়াল’ প্রভৃতি গল্পগুলি তাই সহজেই আমাদের মনকে নাড়া দিয়ে যায়। বীরভূমের শৈশবস্মৃতি-বিজড়িত গল্প ‘জয়া'। নিজের গ্রামের মধ্যেই শৈলজানন্দ দেখেছিলেন ‘জয়া’-কে। সমাজের অসহায় দলিত শ্রেণীর মানুষের জীবন নিয়ে লেখা ‘মারণ-মন্ত্র' গল্পটি শৈলজানন্দের সাহিত্যের একটি বিশেষ দিকের অপরূপ নিদর্শন; তা হলো নিপীড়িত, শোষিত, সর্বহারা শ্রেণীর মানুষের সংগ্রামী জীবনের কথা বলা। 'ধ্বংসপথের যাত্রী এরা’ গল্পটি শৈলজানন্দের নাগরিক জীবনভিত্তিক সাহিত্যসৃষ্টির প্রথম মাইলস্টোন। আঞ্চলিক গল্প থেকে সরে এসে এই গল্পটির মাধ্যমেই তিনি বাংলাসাহিত্যে এক নতুন দিকের সৃষ্টি করেছিলেন। শৈলজানন্দ তখন নিজে শাঁখারীপাড়ার মেসবাড়িতে থাকতেন। বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি এই মেসবাড়িটিকে বাংলাসাহিত্যে চিরস্থায়ী আসন করে দিয়ে গেছেন। এটিও বাংলাসাহিত্যের একটি সেরা গল্প। সারা জীবন ধরে শৈলজানন্দ যে অফুরন্ত গল্পের ধারায় বাংলাসাহিত্যের ভাণ্ডারকে পূর্ণ করে। গেছেন তা থেকে একগুচ্ছ সেরাগল্প সর্বশ্রেণীর পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়া হলো। কাহিনী, ভাষা ও জীবনবোধের অপরূপ ব্যঞ্জনায় গল্পগুলি সবার ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। ড: বুদ্ধদেব দাশ
বইয়ের সূচীপত্র-
বদলি মঞ্জুর
ধ্বংস পথের যাত্রী এরা
জনি ও টনি
বধূবরণ
মারণ-মন্ত্র
পোড়ারমুখী
কাঙালী-ভোজন
জয়া
হতভাগা
এই জীবনের পাওয়া
কৃষ্ণা
নারীমেধ
অসমাপ্ত
অতি ঘরস্তী না পায় ঘর
দুঃস্বপ্ন
জনম-ঋণী
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, সংগ্রহ করে নিন একটি গল্প সংগ্রহ বই- 'শ্রেষ্ঠগল্প - শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়' বাংলা বই পিডিএফ।
No comments:
Post a Comment