পরশুরাম গল্পসমগ্র- রাজশেখর বসু বাংলা গল্প সংকলন বই পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Friday, September 13, 2019

পরশুরাম গল্পসমগ্র- রাজশেখর বসু বাংলা গল্প সংকলন বই পিডিএফ


পরশুরাম গল্পসমগ্র- রাজশেখর বসু বাংলা গল্প সংকলন বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- পরশুরাম গল্পসমগ্র
সংগ্রহকারী ও লেখক- রাজশেখর বসু (পরশুরাম)
বইয়ের ধরন- গল্প সংকলন বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৮২১
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৪১এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত

লেখক রাজশেখর বসু (পরশুরাম) ও তাঁহার সাহিত্য সম্পর্কে কিছু কথা

পুরাকালে পরশুরাম এসেছিলেন মানুষ মারতে, আমাদের কালে পরশুরামের সে রকম কোন মারাত্মক উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি মানুষকে হাসিয়ে গিয়েছেন। এই হাসির প্রকৃতি কি তা না-হয় পরে বিচার করা যাবে, তবে আপাতত নির্বিচারে বলা যায় যে পরশুরাম হাসির গল্প লিখে গিয়েছেন, সে সব গল্পে অন্য উপাদান থাকলেও, হাসিটাই মূল উপাদান। হাসির গল্পলেখক মাত্রেই হাসিখুশি থাকবে, আমদে হবে এরকম ধারণা অনেকের আছে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে হাসির রচনা যাঁরা লিখে গিরেছেন তাঁরা সকলেই গম্ভীর প্রকৃতির লোক। ত্রৈলোক্যনাথ, প্রভাতকুমার, পরশুরাম সকলেরই প্রকৃতি গম্ভীর। প্রাচীনদের মধ্যে মুকুন্দরাম ও ভারতচন্দ্র গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন বলেই বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয়, কারণ তাদের দু’জনেরই দুঃখের জীবন। এত দুঃখের মধ্যে এত হাসিকে কেমন করে তাঁরা রক্ষা করেছেন সে এক বিস্ময়। শমীবৃক্ষ আপন অভ্যন্তরে অগ্নিকে কিভাবে রক্ষা করে? ব্যতিক্রম বোধ করি দীনবন্ধু। দীনবন্ধু আমোদপ্রিয় মজলিসী ব্যক্তি ছিলেন। আবার তিনিও ব্যতিক্রম কিনা সন্দেহ করবার কারণ আছে, যেহেতু খুব সম্ভব একই সঙ্গে দুটি বিপরীত ব্যক্তিত্বকে অন্তরে তিনি পোষণ করতেন। একজন সামাজিক ব্যক্তি, অপরজন সাহিত্যিক। তবু না হয় স্বীকার করা গেল তিনি ব্যতিক্রম।
প্রকৃত হাস্যরসের মধ্যে একটা গাম্ভীর্য আছে, প্রকৃত হাস্যরস আর যাই হোক তরল নয়। কালিদাস যে কৈলাস পর্বতকে ত্র্যম্বকের অট্টহাসির সঙ্গে তুলনা করেছেন সে এই জন্যে। প্রকৃত হাস্যরস করুণার রপান্তর বলেই তা গহন গম্ভীর। এ কথাই সবাই বোঝে না বোলেই হাসির গল্পের লেখককে দেখতে গিয়ে আমদে লোককে প্রত্যাশা করে। পরশুরামকে দেখতে গিয়ে অনেকেরই সন্দেহ হয়েছে এ কেমন ধারা হলো, ইনি যে গম্ভীর রাশভারী লোক।
অনুরূপা দেবীর এইরকম আশাভঙ্গ হয়েছিল। “আমার বিশ্বাস ছিল ‘পরশুরাম'  আমার পরম স্নেহাস্পদ ‘বিশু’র স্বামী, তাঁর লেখার মতই খুব হাসিখুশিতে ভরা অত্যন্ত সামাজিক, চালাক, চটপটে একটি আমদে লোক হবেন। কিন্তু ওকে দেখে মনে মনে ভাবলাম -ইনি কি করে ওই সব অপূর্ব হাস্যরসের আধার হলেন? এ যেন ‘সরষার মধ্যে ত্যাল'।
রাজশেখরবাবু নিজে খ্যাতি সম্বন্ধে উদাসীন ছিলেন, স্মৃতিকথা, জীবনচরিত বা কোনরকম খসড়া লিখবার কথা ভাবেন নি। অধিকাংশ লেখক খ্যাতির প্রদীপের শিখাটিকে নিজেই উস্কে দেয়, কেউ বা প্রত্যক্ষে কেউ বা গোপনে, রাজশেখরবাবু কিছুই করেন নি। তবে সৌভাগ্যবশতঃ তার স্বজন ও অনুরাগীগণ কিছু করেছেন বটে। এখানে আমরা সেই সব রচনার সুযোগ গ্রহণ করলাম।
রাজশেখর বসুর গ্রন্থাবলী তার দুটি নামে পরিচিত, রাজশেখর বসু ও পরশুরাম। এই দই নামের স্বাতন্ত্র্য তিনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বজায় রেখেছেন, এমন আর কোন লেখক রাখতে পেরেছেন কিনা সন্দেহ। দুটি এমন সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র্য ব্যক্তিত্ব। একই ব্যক্তির দুটি ভিন্ন ব্যক্তিত্ব আলাদা কোঠায় রাখা যে খুব কঠিন এ কথা সহজেই বুঝতে পারা যাবে। তাঁর পক্ষে এ কাজ কিভাবে সম্ভব হয়েছিল**
রাজশেখর বসু নামে পরিচিত গ্রন্থাবলীতে মনীষার পরিচয়, অবশ্য শিল্পীর পরিকল্পনা গৌণভাবে আছে। আর পরশুরামের নামে পরিচিত জনবল্লব গল্পের বইগুলির শিল্পীর রচনা, যদিচ গৌণভাবে মনীষার দেখা পাওয়া যাবে।

**আপনারা এই লেখকের আরো বই সংগ্রহ করতে পারবেন-

সম্পদকের বক্তব্য-

গল্প-সমগ্র বা সংগ্রহ, যে লেখকেরই হোক, হাতে পেলে প্রায় কোনো পাঠকই তার ভূমিকা পড়ায় আগ্রহী হন না, অনর্থক ‘বিদ্যে-জাহির’ মনে করেন। এটাই স্বাভাবিক। আর 'পরশুরাম’-এর গল্প বারবার পড়েও ত তা প্রায় অনাদি অনন্ত। 'ভূমিকা' কি হবে।
তবু বারবার পড়ার ফাঁকে শ্রীপ্রমথনাথ বিশীর অপূর্ব ভূমিকাটি পড়লে এই অনাদি অনন্তের একটি চমৎকার দিশা পাওয়া যাবে।
কিন্তু অনন্ত সম্বন্ধে তারপরও অনন্ত কথা বাকী থাকে। আমি তার যৎকিঞ্চিৎ বলেছি এই গ্রন্থের শেষে, 'উপসংহার’-এ।
আপাততঃ আমি কেবল পরশুরাম/রাজশেখর বসুর সমগ্র রচনা ও তার প্রকাশ সম্বন্ধে কয়েকটি কথা লিখছি।
রাজশেখর বসুর জীবৎকালে তাঁর স্বনামে প্রকাশিত হয়েছিল দশটি গ্রন্থ—চলন্তিকা (অভিধান), রামায়ণ, মহাভারত (সারানুবাদ), কুটিরশিল্প, ভারতের খনিজ, কালিদাসের মেঘদূত, হিতোপদেশের গল্প (ছোটদের) ও তিনটি প্রবন্ধ-সংকলন-লঘুগুরু, বিচিন্তা, চলচ্চিন্তা।
পরশুরাম নামে প্রকাশিত হয় মোট সাতানব্বইটি গল্প নিয়ে নখানি গ্রন্থ।
কয়েকটি কবিতা নিয়ে 'পরশুরামের কবিত’ ও ‘শ্ৰীমদভগবদগীতা’ মরনোত্তর প্রকাশন।
আরও পরে (১৯৬৯) এই নখানি গল্পগ্রন্থ, তিনটি প্রবন্ধ সংকলন ও একটি কবিতার বই নিয়ে তিন খণ্ডে পরশুরাম গ্রন্থাবলীর প্রকাশ, যাতে সংযোজিত হয়েছিল
তাঁর লেখা শেষ গল্প 'জামাইষষ্ঠী' (১৫, ৬, ১৯৫৯-এ লেখা আরম্ভ কিন্তু অসমাপ্ত) ও তাঁর জীবনের সর্বশেষ রচনা 'রবীন্দ্রকাব্যবিচার'। এর কথা পরে বলছি।
এরও পরে খুঁজে পাওয়া গেল আর দুটি গল্প ‘আমের পরিণাম' ও 'আনন্দ মিস্ত্রী'। প্রথমটি তাঁর নিজস্ব ভাষা-শৈলীতে কথিত হলেও ও 'সচিত্র ভারত' পত্রিকায় একবার প্রকাশ করলেও সম্ভবত একটি প্রচলিত উপকথা হওয়ার জন্যই তাঁর কোনো গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করেন নি। দ্বিতীয়টি ১৩৬১'র (১৯৫৪) শারদ গলপ-ভারতীতে প্রকাশিত কিন্তু কোনো গ্রন্থে প্রকাশ না করার কারণ অজ্ঞাত। রাজশেখর একবার বলেছিলেন, “আমি সাধারণ লোকসমাজে বেশী মিশনি, তার চেয়ে ঢের মিশেছি মিস্ত্রীদের সঙ্গে, কারখানায় কাজের সময়। 'ভূষণ পাল’ গল্পের সূত্র অনেকটা সত্যি, সেখান থেকেই পাওয়া। আরও একটা গল্প এবিষয়ে লিখেছি, কিন্তু ছাপিনি; কারণ তাদের সংসার সম্বন্ধে আমি কিছুই জানি না।”
আনন্দ-মিস্ত্রী এই ‘মিস্ত্রীদের সংসার’ নিয়েই গল্প। এটাই কি তার সেই না-ছাপা রহস্যময় গল্প? হয়তো উপেন গাঙ্গুলিমশায়ের নির্বন্ধাতিসয় একবার গল্প-ভারতীতে দিয়ে ছিলেন। জানি না।
এখন রাজশেখর বসুর মৃত্যুর বত্রিশ বছর পরে পূর্বোক্ত নখানি গল্প-গ্রন্থের সাতানব্বইটি গল্প ও শেষ অসমাপ্ত গল্পসহ আরও তিনটি—এই একশটি গল্পের অখণ্ড ও সম্পূর্ণ পরিমার্জিত সংস্করণ প্রকাশিত হল।
অবশ্য গল্পসমগ্র নাম, সত্ত্বেও এতে তার প্রায় সমগ্র কবিতাও অন্তর্ভুক্ত হল। এতে নামের 'ব্যাকরণ-ভুল' হলেও কারণ প্রাঞ্জল। শুধু 'পরশুরাম-সমগ্র' নাম হলে অসংখ্যজন কৈফিয়ৎ চাইতেন, এতে রামায়ণ-মহাভারত নেই কেন?’ (কেউ কেউ আরও জানতে চাইতেন আচ্ছা এতে চলন্তিকাটাও থাকছে ত?)।
এর উত্তর রাজশেখর বসুর স্বনামে রচিত সব গ্রন্থ বাদ দিয়ে শুধু 'পরশুরাম' নামে লেখা যাবতীয় রচনা নিয়েই—যা শুধুই গল্প—এই ‘সমগ্র'। (আমার শৈশবে অনেকবার বলতে শুনেছি-‘আমি যখন ঠাট্টা করে কিছু লিখি তখন ‘পরশুরাম' বলে লিখি ; আর যখন গম্ভীর হয়ে লিখি তখন নিজের নামে লিখি।”)
কিন্তু তাহলে কবিতা কোথায় যাবে? সেতো সবই স্বনামে লেখা। তবে ‘প্রবন্ধসংগ্রহ' বা রামায়ণ-মহাভারত, এমনকি 'চলন্তিকা'-র সঙ্গেও কবিতা দেওয়া যায় না। বরং কবিতা গল্পেরই সমগোত্রীয়। তাই গল্প-সমগ্রেই স্থান পেল কবিতা।
গুরত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম একমাত্র 'রবীন্দ্রকাব্যবিচার' প্রবন্ধ। রবীন্দ্রজীবনের শেষ সতের বছর (১৯২৪-৪১) তাঁর একান্ত স্নেহধন্য রাজশেখরের জীবনের এটি সর্বশেষ রচনা। এ এক অদ্ভুত সমাপন। রবীন্দ্র-শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই প্রবন্ধ লেখার আরম্ভ ১৭-৪-৬০। অসুস্থ রাজশেখর এট শেষ করেন ২৬-৪-৬০এ। পরদিন বুধবার, ২৭-৪ সকালে একটি অসমাপ্ত 'ফেআর কপি'ও করে রাখেন। তার কয়েকঘণ্টা পরেই নিঃশব্দ মত্যু। মত্যুর কিছু আগে এই শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলির সংযোজনগুরুত্ব প্রশ্নাতীত। রাজশেখর বসুর প্রবাদ হয়ে যাওয়া হস্তাক্ষর, জীবনের শেষ দিনে-যতই খারাপ হয়ে যাক।
শেষে সম্পাদকের 'কৃতজ্ঞতা-জ্ঞাপন’ দস্তুুর। কিন্তু আমি নিরুপায়, আমি কার কাছে কোনো সাহায্য পাইনি, বাধাও পাইনি—তাই কৃতজ্ঞতা বা হিংসা প্রকাশের কোনো অবকাশ নেই; স্তুতি বা নিন্দা দুটোইে আমার সমান অধিকার। ব্যতিক্রম অবশ্য একমাত্র শ্রীপ্রিয় সরকার। তাঁর নিরন্তর তাগিদের ফলেই এই বিশাল কাজ সম্ভব হল।
এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের কথা এই সূত্রে বারবার মনে পড়ছে। সৈয়দ মুজতবা আলী। যিনি পরশুরামকে বলেছিলেন আপনার সমস্ত পাণ্ডুলিপি যদি হারিয়ে যায় আমাকে বলবেন, আমি স্মৃতি থেকে সমস্ত লিখে দোব।' পরশুরামের মৃত্যুর পরই আমাকে লিখেছিলেন—'হঠাৎ যেন চোখের সামনে একটা বিরাট সমুদ্র শুকিয়ে গেল।' এই দিয়ে আরম্ভ চিঠিটির শেষ-'আমি পৃথিবীর কোনো সাহিত্য আমার পড়া থেকে বড় একটা বাদ দিইনি। রাজশেখরবাবু যে কোনো সাহিত্যে পদার্পণ করলে সে সাহিত্য ধন্য হত। একথা বলার অধিকার আমার আছে।'
এবং আরও পরে মুজতবা আলী বলেছিলেন, 'রাজশেখর বাবুর গ্রন্থাবলী প্রকাশ হলে যেন আমি ছাড়া আর কেউ তা সম্পাদনা না করে।'
হয়ত তা দুই জ্যোতিষ্কের মহাকাশ সম্মিলন হত। আজ তাঁরা কতদরে। সত্যি সত্যিই ‘উজল মহাকাশের বিপুল পরিসীমায়’ নক্ষত্রে নক্ষত্রে মহাসম্মিলনে ব্যস্ত।
তাঁদের সকলের ইচ্ছা পূর্ণ হোক।- দীপংকর বসু

পরশুরাম গল্পসমগ্র- রাজশেখর বসু

পরশুরাম গল্পসমগ্র এই বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এই পোষ্ট হইতে বাংলা গল্প-সংকলন বই- 'পরশুরাম গল্পসমগ্র- রাজশেখর বসু'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment