স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু- তপনকুমার দাস মজাদার গল্প সংগ্রহ বই - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Tuesday, July 2, 2019

স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু- তপনকুমার দাস মজাদার গল্প সংগ্রহ বই


স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু- তপনকুমার দাস মজাদার গল্প সংগ্রহ বই
ডিজিটাল বইয়ের নাম- স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু
লেখক- তপনকুমার দাস
বইয়ের ধরন- সরস/মজাদার গল্প সংগ্রহ
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২০২
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৮এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত

গৌরচন্দ্রিকা-
সেই গল্পটা মনে আছে নিশ্চয়ই?
সেই যে সেই রাজার গল্প। রানীর ভয়ে ভীত রাজা দরবারে বসে জানতে চাইলেন, তার রাজ্যে কি এমন কোনও স্বামী আছে যে স্ত্রীকে ভয় পায় না? না মহারাজ, ঘাড়ে আমাদের অতো শক্ত মাথা নেই, উত্তরে জানিয়ে দেন সবাই। তবুও বিশ্বাস হয় না রাজার একজন প্রজাও কি পাওয়া যাবে না? নিশ্চয়ই যাবে। নিশ্চিত বিশ্বাসে রাজার পেয়াদা ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে জড়ো করলো রাজ্যের তাবৎ স্বামীদের রাজময়দান প্রাঙ্গণে। উদ্দেশ্য ঘোষণা করে দিলো ঘোষক উপস্থিত স্বামীদের মধ্যে যারা স্ত্রীকে ভয় পান তারা চলে যান ডানদিকে। যারা ভয় পান না বাদিকে থাকুন। ঘোষণা করতে দেরী হলেও ছুটতে দেরী হলো না স্বামীদের। হৈ হৈ শব্দে মাঠ উজার করে স্বামীরা ছুটলেন ডানদিকে। দেখে শুনে হঠাৎ হাততালি দিয়ে নেচে উঠলেন রাজা—দেখেছ, একজন স্বামী অন্ততঃ পাওয়া গেছে, যার স্ত্রী-তে ভয় ডর নেই। সত্যিই তাো! সবার চোখ ঠিকরে পড়ল। বাঁদিকে উপস্থিত একমাত্র স্বামীটির প্রতি। আদেশ দিলেন রাজা, বুলাও স্বামী-জীকে! ইনাম দেও স্বর্ণমুদ্রামে। অতএব আহ্বান গেল স্বামীটির কাছে। সত্যিই তুমি ধন্য হে! বললেন রাজা, আমার রাজ্যের মান সম্মান বাঁচালে। তা বাপু, তুমি কি সত্যিই ভয় পাও না স্ত্রীকে? রাজার প্রশ্ন শুনে ফ্যালফেলে মাছের চোখ মেলে রাখেন স্বামীটি। সবাই যখন ডানদিকে গেল, তুমিই একমাত্র বাঁদিক মুখো হলে, বুঝিয়ে বললেন রাজা। আমি তো স্যার অতশত বুঝিনি, হাত জোড় করে মুখ খোলেন স্বামী, এখানে আসার আগে বউ আমার পইপই করে বলে দিলো যে, ব্যাটা মিনসে, খবরদার! সবাই যে দিকে যাবে, সেদিকে কিন্তু পা-ও মাড়াবে না। তাই তো আমি বাঁদিকে।
দাম্পত্য জীবনে দম দেওয়া পতিকুলের যতো অধিবাসী সবাই আমার বাঁ-দিকে। দিগবিদিক শুন্য হয়ে কর্ষণহীন বেঁচেবর্তে থাকার চেয়ে বাঁদিকে থাকাই শ্রেয়। দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন মেনে চলতে হবে যে! দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন প্রণয়ন করেছেন স্বয়ং সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র। কারণ ‘স্ত্রীদিগের অবাধ্য স্বামী প্রভৃতির সুশাসন প্রয়োজন এবং এই আইন বিবাহিত পুরুষের উপর বিধান' খাটানোর জন্য। স্বামীর সংজ্ঞা কি? বঙ্কিম মতে ইংরাজীতে "A husband is a piece of moving and moveable property at the absolute disposal of a woman.'  স্ত্রীলোকের সম্পূর্ণ অধীন যে অস্থাবর সম্পত্তি, তাহাকে স্বামী বলা যায়। দাম্পত্য দণ্ডবিধির 'আইনে ২(ক) ধারায় বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন বাক্স তোরঙ্গ প্রভৃতিকে স্বামী বলা যায় না, কেন না, যদিও সে সকল অস্থাবর সম্পত্তি বটে, তথাপি সচল নহে।' উক্ত আইনানুসারে ‘গোরু বাছুরও স্বামী নহে’ কারণ তাহাদের একটু স্বেচ্ছামতে কার্য করিবার ক্ষমতা আছে।”
পদকর্তা জ্ঞানদাস আক্ষেপ করেছেন, 'সুখের লাগিয়া এ ঘর বান্দিলু/অনলে পুড়িয়া গেল/অমিয়া সাগরে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল।' না বাপু, ছত্রে ছত্রে অতো আক্ষেপ না করে ছত্রপতি হয়ে স্ত্রী-র ছত্রছায়ায় সুবোধ ছাত্র হয়ে থাকতে ক্ষতি কি? আইনের সংসারে অসীম ক্ষমতা যারা অধিকার করে আছেন সেই অধিকারিনীদের অধিকারের উত্তরাধিকার অগ্রাহ্য করে জ্যান্ত শহীদ হয়ে বেঁচে থাকার কি কোনও মানে হয় না। শহীদ বেদীতে তবুও বছরে কেউ না কেউ একবার মালা দেয় (সারা বছর কাকপক্ষী 'আঁ' করলেও)। ভালোবাসার দিনটির, ক্ষণটির জন্যে, আপক্ষা করতে হয়--আক্ষেপ দুরে নিক্ষেপ করে। স্ত্রীদের ভূমিকা অগ্রণী। তা হোক না, ঈর্যা করে লাভ কি? গুণের গুণ-নিধি ওঁরা। চাণক্য শ্লোকে তার প্রমাণ লিপিবদ্ধ—“আহারো দ্বিগুণঃ স্ত্রীণাং বুদ্ধিস্তাসাং চত্বগুণ।/যড়গুণো ব্যবসায়শ্ব কামাশ্চাষ্ট শুণঃ স্মৃতঃ।। স্ত্রীরা আহারে দ্বিগুণ, বুদ্ধিতে চতুগুণ, কর্মে ছয় ও ভোগবাসনায় (পুরুষের চেয়ে) আটগুণ বেশি ক্ষমতার ধারক। সুতরাং ক্ষমতাবানের (স্ত্রীর) কৃপা ধন্য হয়ে জীবনধন্য করলে লাভ ছাড়া ক্ষতি তো কিছু নেই। ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি...।
যতীন্দ্রকুমার সেন যতোই বলুন না কেন—'পত্নী ও পেত্নী শুধু ‘এ’ কারেতে ভিন্ন/তবে পেত্নী কিছু রসিকা, পত্নী সদা খিন্ন!'-স্ত্রীর ভূমিকা কিন্তু অনস্বীকার্য। ভাবকের ভূমিকা, অভিভাবকের ভূমিকা তাঁর। চোখে চোখে নজরদারির কেউ একজন না থাকলে স্বামীর বাউন্ডুলে হাতে কতোক্ষণ? মনুষ্য জীবনে স্ত্রী রত্নের বিকল্প ধারণ যোগ্য রত্ন নেই। 'স্বামী ও স্ত্রী' রতনে রতন। শুধু চিনে নিতে জানতে হয়। বুঝে নিতে বুঝতে হয়। নইলে ঠক্কর। আর ঠক্করের চক্করের মতো অমন রসালো কালমেঘ-রস কি আর পাওয়া যায় ? চাণক্য শ্লোকেই বলা আছে-“সর্ব্বেষামেব রত্নানাং স্ত্রীরতং অনুত্তমম্।/তস্মাত্তদর্থনিরতস্তয়া ত্যক্তঃ ধনেন কিম্।।"—স্ত্রী রত্নই প্রধান, সুতরাং সেই রত্ন লাভে ব্রতী থাকা উচিত। স্ত্রীধন বিনা সব ধনই বিফল।
সংসারের যাবতীয় 'সার' স্ত্রী-র ভাণ্ডারে। সেই সার সঠিক পরিমাণে টবে (সং-এ) প্রয়োগ করলে তবেই না জীবনের গোলাপ প্রস্ফুটিত হবে। পদ্মপাতায় জলের বিন্দু। পাটি হচ্ছেন স্ত্রী। তার বুকে জল বিন্দু-স্বামী টলমল টালমাটাল থাকবেন এটাই নিয়ম। দাম্পত্যের 'দাম' চুকাবেন পতিরা আর উপভোগ-এ অধিকার থাকবে পত্নীদের। প্রবাদ বাক্য তাই তো ধ্রুব—'সংসার সুন্দর হয় রমণীর গুণে'। আর শুণীজনেরা সর্বত্র পুজ্য (পূজ্যা) এবং গ্রাহা (গ্রাহ্যা?)। দাম্পত্য কলহ থাকলেও কোলাহল থাকে অনেক অনেক বেশি। কোলাহল মানেই তো আনন্দ, সুখ, উচ্ছাস, আহ্বাদ। দাম্পত্যে জীবন সমর্পণ নিত্য-বৈচিত্রময়। যে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করতে হয় রোজ। সকাল থেকে সন্ধে, সন্ধে থেকে সকাল পর্যন্ত। Gabriel Garcia Marquez বলেছেন, "The probler with marriage is that, it ends every night after making love, and it must be rebult every morning before breakfast."
দাম্পত্য জীবন ঘিরে টানাপোড়েন, চল দোলাচলের মহিমায় স্ত্রীর প্রভুত্ব বজায় রাখার বাসনা চিরন্তন। মুখ্য স্ত্রীর কাছে স্বামী গৌণ। স্বামীত্ব বজায় রাখার চেষ্টায় স্বামীরা কিঞ্চিৎ প্রভু (স্ত্রী) ভক্ত হয়ে সংসারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করলে ক্ষতি কি? স্ত্রী ভক্ত এই লেখাকে পথ বাতলেছিলেন আর এক ভীরু (স্ত্রী-ভয়ে!) সম্পাদক—শেখর আহমেদ। জায়গা দিয়েছিলেন তার পত্রপাঠ'-এ (বিদায়
নেওয়ার নিমিত্তে)। এই বইয়ের প্রায় সব কয়টি লেখাই প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তাকে বইটি উৎসর্গ করতে পেরে কৃতার্থ হয়েছি। নান্দনিকের সঞ্জয় ভদ্র বইটি প্রকাশ করেছিলেন ২০০৬-এ। নবকলেবরে বর্ধিত সংস্করণ প্রকাশে আমার ইচ্ছাপূরণ কৰেছেন ভ্রাতৃপ্রতিম সন্দীপ নায়ক। তার সঙ্গে আমার 'ধন্যবাদ' বিনিময়ের সম্পর্ক নেই, তিনি তাঁর কর্ম করেছেন, ফলেও আমার অধিকার নেই।
বইটির প্রতি নানান আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আমার গুণী বন্ধুমহল। দেবাশীষ দেব, অনুপ রায় বইটিকে অলংকৃত করেছেন চিত্র বিচিত্র বৈচিত্রে ভরিয়েছেন, প্রচ্ছদের পট এঁকেছেন। তাদের প্রতি ঝণ মনের ভাণ্ডারে তোলা আছে। আমার দু-একজন পাঠক-পাঠিকা, যারা আমাকে উৎসাহিত করেন, প্ররোচিত করেন, তর্জনী তুলে সমালোচনা করেন, আরও ভালো লিখতে আদেশ দেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর এই সুযোগ কলম ছাড়া করতে চাই না।।
বইটি উদ্দেশ্য দাম্পত্য জীবনে রসের আস্বাদন সংগ্রহ করার চেষ্টা। হয়তো কোনও চরিত্রের সঙ্গে বাস্তব মিশে গেছে-বাস্তবিক তার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। কাউকে আঘাত দেওয়া নয় বরং অনাবিল আনন্দে সেই আঘাতের প্রলেপ খোঁজাই বইটিতে প্রকাশিত গল্পগুলি ও প্রবন্ধটির উদ্দেশ্য। মিলনান্তক মিলে মিলমিশ করিয়ে দেওয়া। সে উদ্দেশ্য সফল হলে ধনবাদ না জানালেও ক্ষতি নেই কিন্তু অপারগতায় প্রাণ খুলে গালি দেবেন না প্লিজ।

স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু- তপনকুমার দাস

ভীষণ মজার যে গল্পগুলি এই বইতে রয়েছে-
কলুর বলদ
শখ আহ্লাদ
শাস্তি
দম্-পত্য
কর্মফল
বশে অবশে
স্বাধীনতা দিবস
হেনস্থা
বিশ্বাস অবিশ্বাস
চাঁদের উদয়
সং-সার
স্বাধীনতাহীনতায়
ভালোবাসা যারে কয়
গন্ধ
চাঁন্দুর মা চাঁন্দুর বাপ
কদমফুলের কদম ছাঁট
বই-বাহকের বই-তরণী
তুষের আগুন
ঘর পর জঙ্গল
পাটকেল
স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু


উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক তপনকুমার দাসের সরস/মজাদার গল্প সংগ্রহ- 'স্বামী একটি গৃহপালিত জন্তু' বই-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment