রূপদর্শীর নকশা-গৌরকিশোর ঘোষ বাংলা রম্যরচনা পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- রূপদর্শীর নকশা
লেখক- গৌরকিশোর ঘোষ
বইয়ের ধরণ- রম্যরচনা
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১৮৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১১এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
আপন কথা
রূপদর্শীর নকশাগুলোর যেটুকু ছি ছি সেটুকু আমার প্রাপ্য। কারণ আমি লেখক। আরো ভালো লিখতে পারলে আরো বেশি তারিফ পেতাম। কিন্তু এই রচনাগুলোর যেটুকু বাহ বাহ, তা পাওনা সাগরময় ঘোষের, কারণ তিনি সম্পাদক। তিনি তাগিদ দিয়ে না লেখালে এগুলো কোনোদিনই বেরুতে। না, রূপদর্শীর জন্মই হত না।
তা হলে বিত্তান্তটা বলি।
এক বন্ধু, প্রতাপকুমার রায়, এখন দিল্লীতে, ‘টাইম্স্ অব ইণ্ডিয়া’র ম্যানেজারি করছেন। যখন কলকাতায় ছিলেন, তাঁর অধীনে চাকরি জুটেছিল।
সেইখানেই আলাপ অহির সঙ্গে। অহি অর্থ ‘অ’, অহিভূষণ মল্লিক, যিনি ছবিগুলো একেছেন। আলাপের সুতো শেষ পর্যন্ত বন্ধুত্বের কাটিমে জড়িয়ে বসল। আছি আছি, বেশ আছি। খাচ্ছি দাচ্ছি চাকরি করছি। হঠাৎ একদিন না বল না কওয়া মনিববন্ধু বদলি হলেন। এলেন এক নতুন ‘বস'। আগের মুনিব যাদের ভালো দেখেছিলেন ইনি তাঁদের কালো দেখলেন। ফলে আমার আর অহির চাকরিটি ‘নট’ হল। জিন্দগীর ন'টে গাছটি এখানেই মুড়োতো আর আমার গল্পও ফুরোতো, কিন্তু না, খেল কিছু বাকি ছিল, তাই ফয়শালা চট করে হল না। দেখা হল সাগরময় ঘোষের সঙ্গে। দেখা করতে বললেন, ‘দেশ’ অফিসে। ফরমায়েস দিলেন লেখার, পরামর্শ দিলেন বিষয়ের। বললেন, জীবনের কিছু তাজা ছবি আমায় এনে দাও। নাম দিলেন রূপদর্শী। রূপদর্শীর জন্ম হল। কয়েক কদম এগিয়ে যেতেই দেখা পেলাম আরেক চওড়া হৃদয়ের, কানাইলাল সরকারের। পাকা-পোক্ত আশ্রয় মিলল।
ব্যস্। তারপর কলম চলল ফুল ফোসে। সৈয়দ মুজতবা আলী দিলেন নাচিয়ে। বললেন, বা বেটা, লঢ় যাও। তো লড়ে গেলাম। প্যালা দিলেন অহিভূষণ। রূপদর্শীর নক্শা অহিভূষণ না থাকলে কানা হয়ে যেত। অশেষ ধৈর্য, অনেক যত্ন আর অপরিসীম শ্রম নিয়ে উনি লেখাগুলোকে খোলতাই করেছেন। আমি যদি জীবনকে লেখায় ফুটিয়ে থাকি (সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে) তো অহিভূষণ লেখাকে জীবন্ত করে তুলেছেন। ওঁর কলম আমার থেকে জোরদার, প্রতি বার উনি আমাকে মেরে বেরিয়ে গেছেন।
তারপর আসেন আমার বড়দা', গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, মিত্রালয়ের মালিক। বললেন, দে, তোর নক্শা ছাপি। ছাপবে তত ছাপ। ব্যস্, ছাপা হয়ে গেল।
কিন্তু এ সব কিছুই হত না, যদি দুঃসময়ে একজন অকাতরে না রেস্ত জুগিয়ে যেত। লেখক হবার বারোটা তখনই বেজে গিয়েছিল অভাবের তাড়নায় যখন গাংটকের কাছ বরাবর কাঠ চেরাই কলে কাজ নিয়ে চলে যাবার ব্যবস্থা করে ফেলেছিলাম। যেতে দিলেন ‘চন্দু'। লিখে পাঠালে, এখানে এসো না, তোমার জায়গা কলকাতা, সেখানেই তোমার সিদ্ধি। যতদিন তোমার কিছু না হয়, ভয় কি, আমি তো আছি। আর বরাবর সে তার কথা রেখে গেছে।
এই নকশা যখন সে একখানা হাতে পাবে, আপনারা কেউ তো জানেন না, পার্শেলটা যখন খুলবে, দেখবে আমার বই, সামনে নেই তবু তো ওর মুখ দেখতে পাচ্ছি, আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে তার মুখ। ধার-করা গাম্ভীর্য খসে পড়বে তার। ছেলেমানুষী উৎসাহে বইটার গন্ধ শুকবে, টেবিলে বসবে চিঠি লিখতে । লিখবে, বইটা তাহলে সত্যিই বেরুল! ‘চন্দু’কে খুশি করতে পেয়েছি, তাতেই আমার পাওনা মিলে গেছে।
এবার ‘দেশ' অফিসের আর দুটি লোকের কথা—সাগরবাবুর সহকারী জ্যোতিষবাবু আর অমর—এরা দুজনে যে সাহায্য করেছেন তার মাপ হয় না। এদের সাহায্য ছাড়া নক্শা বেরই হতে পারত না। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে যদি এঁরা খাটো না হয়ে যান তো তা করছি।
আর আমার বহুৎ কৃতজ্ঞতা আনন্দবাজার পত্রিকা লিমিটেডের কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। তারা যে দেশ পত্রিকার ব্লকগুলো ব্যবহার করতে দিয়েছেন সে জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আর আছেন শ্রদ্ধেয় কৃষ্ণদয়াল বসু। অশেষ স্নেহবশত ক্লেশ স্বীকার করে। ইনি প্রুফ দেখে দিয়েছেন। সব ঋণ শোধ করা যায়, কিন্তু স্নেহের ঋণ কি শোধ হয় ? না করা যায় ? তাই তাঁর ঋণ স্মরণের খতেনে জমা রাখলাম। অলমিতি।
রূপদর্শীর নকশা নামে এক নতুন ও ভিন্ন ধরনের রম্যরচনা শুরু করলেন লেখক গৌরকিশোর ঘোষ, এটি ১৯৫২ সালের ঘটনা। রূপদর্শী এনারই ছদ্মনাম। প্রথম সংখ্যাতেই সকল পাঠকের মন জয় করে নিলেছিলেন তিনি। রূপদর্শী । সঙ্গে চমৎকার কার্টুন ছবি অহিভূষণ মালিকের
প্রিয় বাংলা বইয়ের পাঠকগণ, গৌরকিশোর ঘোষের রম্যরচনা 'রূপদর্শীর নকশা' এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
ডিজিটাল বইয়ের নাম- রূপদর্শীর নকশা
লেখক- গৌরকিশোর ঘোষ
বইয়ের ধরণ- রম্যরচনা
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১৮৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১১এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত
আপন কথা
রূপদর্শীর নকশাগুলোর যেটুকু ছি ছি সেটুকু আমার প্রাপ্য। কারণ আমি লেখক। আরো ভালো লিখতে পারলে আরো বেশি তারিফ পেতাম। কিন্তু এই রচনাগুলোর যেটুকু বাহ বাহ, তা পাওনা সাগরময় ঘোষের, কারণ তিনি সম্পাদক। তিনি তাগিদ দিয়ে না লেখালে এগুলো কোনোদিনই বেরুতে। না, রূপদর্শীর জন্মই হত না।
তা হলে বিত্তান্তটা বলি।
এক বন্ধু, প্রতাপকুমার রায়, এখন দিল্লীতে, ‘টাইম্স্ অব ইণ্ডিয়া’র ম্যানেজারি করছেন। যখন কলকাতায় ছিলেন, তাঁর অধীনে চাকরি জুটেছিল।
সেইখানেই আলাপ অহির সঙ্গে। অহি অর্থ ‘অ’, অহিভূষণ মল্লিক, যিনি ছবিগুলো একেছেন। আলাপের সুতো শেষ পর্যন্ত বন্ধুত্বের কাটিমে জড়িয়ে বসল। আছি আছি, বেশ আছি। খাচ্ছি দাচ্ছি চাকরি করছি। হঠাৎ একদিন না বল না কওয়া মনিববন্ধু বদলি হলেন। এলেন এক নতুন ‘বস'। আগের মুনিব যাদের ভালো দেখেছিলেন ইনি তাঁদের কালো দেখলেন। ফলে আমার আর অহির চাকরিটি ‘নট’ হল। জিন্দগীর ন'টে গাছটি এখানেই মুড়োতো আর আমার গল্পও ফুরোতো, কিন্তু না, খেল কিছু বাকি ছিল, তাই ফয়শালা চট করে হল না। দেখা হল সাগরময় ঘোষের সঙ্গে। দেখা করতে বললেন, ‘দেশ’ অফিসে। ফরমায়েস দিলেন লেখার, পরামর্শ দিলেন বিষয়ের। বললেন, জীবনের কিছু তাজা ছবি আমায় এনে দাও। নাম দিলেন রূপদর্শী। রূপদর্শীর জন্ম হল। কয়েক কদম এগিয়ে যেতেই দেখা পেলাম আরেক চওড়া হৃদয়ের, কানাইলাল সরকারের। পাকা-পোক্ত আশ্রয় মিলল।
ব্যস্। তারপর কলম চলল ফুল ফোসে। সৈয়দ মুজতবা আলী দিলেন নাচিয়ে। বললেন, বা বেটা, লঢ় যাও। তো লড়ে গেলাম। প্যালা দিলেন অহিভূষণ। রূপদর্শীর নক্শা অহিভূষণ না থাকলে কানা হয়ে যেত। অশেষ ধৈর্য, অনেক যত্ন আর অপরিসীম শ্রম নিয়ে উনি লেখাগুলোকে খোলতাই করেছেন। আমি যদি জীবনকে লেখায় ফুটিয়ে থাকি (সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে) তো অহিভূষণ লেখাকে জীবন্ত করে তুলেছেন। ওঁর কলম আমার থেকে জোরদার, প্রতি বার উনি আমাকে মেরে বেরিয়ে গেছেন।
তারপর আসেন আমার বড়দা', গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, মিত্রালয়ের মালিক। বললেন, দে, তোর নক্শা ছাপি। ছাপবে তত ছাপ। ব্যস্, ছাপা হয়ে গেল।
কিন্তু এ সব কিছুই হত না, যদি দুঃসময়ে একজন অকাতরে না রেস্ত জুগিয়ে যেত। লেখক হবার বারোটা তখনই বেজে গিয়েছিল অভাবের তাড়নায় যখন গাংটকের কাছ বরাবর কাঠ চেরাই কলে কাজ নিয়ে চলে যাবার ব্যবস্থা করে ফেলেছিলাম। যেতে দিলেন ‘চন্দু'। লিখে পাঠালে, এখানে এসো না, তোমার জায়গা কলকাতা, সেখানেই তোমার সিদ্ধি। যতদিন তোমার কিছু না হয়, ভয় কি, আমি তো আছি। আর বরাবর সে তার কথা রেখে গেছে।
এই নকশা যখন সে একখানা হাতে পাবে, আপনারা কেউ তো জানেন না, পার্শেলটা যখন খুলবে, দেখবে আমার বই, সামনে নেই তবু তো ওর মুখ দেখতে পাচ্ছি, আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে তার মুখ। ধার-করা গাম্ভীর্য খসে পড়বে তার। ছেলেমানুষী উৎসাহে বইটার গন্ধ শুকবে, টেবিলে বসবে চিঠি লিখতে । লিখবে, বইটা তাহলে সত্যিই বেরুল! ‘চন্দু’কে খুশি করতে পেয়েছি, তাতেই আমার পাওনা মিলে গেছে।
এবার ‘দেশ' অফিসের আর দুটি লোকের কথা—সাগরবাবুর সহকারী জ্যোতিষবাবু আর অমর—এরা দুজনে যে সাহায্য করেছেন তার মাপ হয় না। এদের সাহায্য ছাড়া নক্শা বেরই হতে পারত না। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে যদি এঁরা খাটো না হয়ে যান তো তা করছি।
আর আমার বহুৎ কৃতজ্ঞতা আনন্দবাজার পত্রিকা লিমিটেডের কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। তারা যে দেশ পত্রিকার ব্লকগুলো ব্যবহার করতে দিয়েছেন সে জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আর আছেন শ্রদ্ধেয় কৃষ্ণদয়াল বসু। অশেষ স্নেহবশত ক্লেশ স্বীকার করে। ইনি প্রুফ দেখে দিয়েছেন। সব ঋণ শোধ করা যায়, কিন্তু স্নেহের ঋণ কি শোধ হয় ? না করা যায় ? তাই তাঁর ঋণ স্মরণের খতেনে জমা রাখলাম। অলমিতি।
রূপদর্শীর নকশা নামে এক নতুন ও ভিন্ন ধরনের রম্যরচনা শুরু করলেন লেখক গৌরকিশোর ঘোষ, এটি ১৯৫২ সালের ঘটনা। রূপদর্শী এনারই ছদ্মনাম। প্রথম সংখ্যাতেই সকল পাঠকের মন জয় করে নিলেছিলেন তিনি। রূপদর্শী । সঙ্গে চমৎকার কার্টুন ছবি অহিভূষণ মালিকের
প্রিয় বাংলা বইয়ের পাঠকগণ, গৌরকিশোর ঘোষের রম্যরচনা 'রূপদর্শীর নকশা' এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।
উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
No comments:
Post a Comment