গ্রাম বাংলার গল্প - বিশিষ্ঠ লেখিকাগণের লেখা গল্পের সংগ্রহ পিডিএফ ফাইল
ডিজিটাল বইয়ের নাম- ‘গ্রাম বাংলার গল্প’
লেখক- বিভিন্ন বিশিষ্ঠ লেখিকাগণ
সম্পাদিত বই
সম্পাদনা- কমলেশ সেন
ধরন- ছোট গল্প
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৩৬৯
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ২০এমবি
জলছাপমুক্ত, ঝকঝকে প্রিন্ট
গ্রাম বাংলার গল্প বইয়ের গল্পগুলি যাঁহারা লিখেছেন, তাঁদের জীবনকাহিনী সংক্ষিপ্তকারে নীচে বর্নিত হইল।
রমেশচন্দ্র সেন দরদী গল্পকার, উপন্যাসিক। জন্ম অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল জেলায়। তথাকথিত উচ্চশিক্ষার কোনু ডিগ্রী তার ছিল না। প্রথম জীবনে পারিবারিক বৃত্তি কবিরাজী শুরু করলেও, বেশীদিন তিনি ঐ বৃত্তিতে নিজেকে নিয়ােজিত রাখেন নি। চলে আসেন সাহিত্যের জগতে। অত্যন্ত কাছ থেকে যে মানুষ এবং জগতকে তিনি দেখেছেন দরদী মন দিয়ে সাহিত্যে তাকে রূপ দেবার চেষ্টা করেছেন। উপন্যাস ‘কাজল’ এবং দাঙ্গার ওপর লেখা গল্প ‘সাদা ঘোড়া' তাঁকে খ্যাতির উচ্চসীমায় পৌছে দেয়। দেশ ভাগ এবং ছিন্নমূল মানুষদের নিয়ে লেখা 'পূর্ব থেকে পশ্চিমে' একটা অসাধারণ উপন্যাস। জীবনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল লেখক। এই গল্পটি ১৩৬২ সালের শারদীয় স্বাধীনতায় প্রকাশিত হয়।
সােমনাথ লাহিড়ি রাজনীতিক হিসাবে সমধিক পরিচিত হলেও, সাংবাদিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক এবং অনুবাদকরূপে সুপ্রতিষ্ঠিত। অবিভক্ত বাংলায় যারা কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ে তােলেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। শ্রমিক আন্দোলনকে সঙ্গবদ্ধ করার কাজে তিনি বহুকাল কলকাতা এবং তৎসংলগ্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে কাজ করেন। কলকাতা ট্রাম ওয়ার্কাস ইউনিয়নের
প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি একজন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র স্বাধীনতার একসময় সম্পাদক ছিলেন। তাঁর অনেক গল্প পরিচয় এবং অন্যান্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ছােট গল্প সংকলন ‘কলিযুগের গল্প’ সেই সময় ভীষণ সাড়া জাগিয়েছিল। এরেনবুর্গের ‘নবমতরঙ্গ' এবং 'ক্যাপিটাল' এর কিছু অংশের অনুবাদ বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। তিরিশের দশকে লেনিনের State & Revolution-এর অনুবাদ তিনি করেন। কিন্তু ‘রাষ্ট ও বিপ্লব’ নামকরণে বইটা বেআইনী হয়ে যাবার আশঙ্কায় 'রাষ্ট ও আবর্তন' নামে প্রকাশিত হয়।
স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য সাংবাদিক, গল্পকার, অনুবাদক। অধুনা বাংলাদেশে জন্ম। একাধিক পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ‘অগ্রনী’ পত্রিকা নতুন করে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। 'অনামী’ছদ্মনামে ‘অরণি' পত্রিকা তাঁর যে সব রচনা প্রকাশ করেছিল বিদগ্ধ পাঠক মহলে তা সমাদৃত হয়। প্রগতি লেখক ও শিল্পী সবের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন এবং বাংলার প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেন। তিনি মার্কসবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। এই বিশ্বাস তাঁর প্রতিটি লেখায় বিভিন্নভাবে মূর্ত হয়ে উঠেছে। তার গল্পগুলি জীবনধর্মী—জীবনকে তিনি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন, তাঁকে অনুভব করেছেন। এই অনুভব ছিল অত্যন্ত সতেজ এবং সাবলীল। তার গল্প সংকলন ‘ছােট বড় মাঝারি’-তে এর আশ্বাদ পাওয়া যায়।
মাণিক বন্দোপাধ্যায়ের জন্ম সাওতাল পরগণার দুমকা অঞ্চলে ১৯শে মে, ১৯০৮ সালে। পৈত্রিক বাড়ি বর্তমান বাঙলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের মালবাদিয়াতে। আসল নাম প্রবােধকুমার বন্দোপাধ্যায়। প্রথম গল্প ‘অতসী মাসী’ তিনি বাজি ধরে ‘বিচিত্রা' পত্রিকায় লেখেন। লেখকজীবন শুরু হওয়ার অল্পদিনের মধ্যে তিনি মার্কসবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যােগ দেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনেব ঝাণ্ডা তিনি যেভাবে উর্ধ্বে তুলে ধবেন তা উত্তবসূরী লেখকদের প্রেরণা জাগায় এবং পথনির্দেশ করে। রসিদ আলি দিবসের স্মৃতি নিয়ে লেখা 'চিহ্ন',
'খতিয়ান’ এবং 'আদায়ের ইতিহাস’ ঐতিহাসিক কারণে উল্লেখযােগ্য। তিনি অসংখ্য গল্প উপন্যাস লিখে গেছেন। উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি', ‘পুতুলনাচের ইতিকথা' এবং ছােট গল্প ‘ছােট বকুলপুরের যাত্রী', হারানো নাতজামাই’এর মধ্যে নিঃসন্দেহে উল্লেখযােগ্য। তঁার অনেক লেখা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
মনোরঞ্জন হাজরার লেখকজীবন থেকে অনেক বেশী মুখব—অনেক বেশী কর্মবহুল তার রাজনৈতিক জীবন। কর্মবহুল রাজনৈতিক জীবনের ফাঁকে ফাঁকে তিনি অনায়াসে কলম ধরেছেন। সংগ্রামের বাস্তবভূমি থেকে তুলে এনেছেন অনেক অলিখিত সংগ্রামী ঘটনা, অনেক জানা-অজানা মানুষ। শুধু শহর-গঞ্জের নয়, গ্রাম-বাংলার বিস্তৃত পটভূমিও তার লেখায় এসেছে। স্বাধীনতা এবং অন্যান্য পত্রপত্রিকায় একসময় তার অনেক গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ ‘কাইপার রােডে ঝড়', 'নােঙর। পশ্চিম বাংলা বিশেষ করে হুগলি জেলায় যারা কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ার পুরােভাগে ছিলেন, মনোরঞ্জন হাজরা তাদের মধ্যে অন্যতম। শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলনকে সঙ্গৰন্ধ করার কাজে তিনি আজীবন নিজেকে নিয়ােজিত বাখেন।
সুশীল জানার জন্ম মেদিনীপুর জেলায়। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে তার নাম অবিচ্ছন্নভাবে জড়িত। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে একটানা লিখছেন। বিস্তীর্ণ পটভূমির বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন
ও সংগ্রাম নিয়ে তিনি অনেক গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গে তাঁব নাড়ীর যােগ। সেই সব মানুষের প্রেম ও দুঃখ, সুখ ও সংগ্রাম এবং জীবন অতিক্রমনের সমস্যা ও জটিলতা
আর সেই সমস্যা জটিলতার ঘূর্ণাবর্ত থেকে উত্তরণের একক অথবা যৌথ প্রচেষ্টা তার কলমে আশ্চর্য মমতায় রূপায়িত হয়েছে। তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে লিখে গেছেন সেই একই ধারায়, সাধারণ মানুষদের নিয়ে, তাদের সংগ্রাম ও জীবন নিয়ে।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃকবাড়ী অধুনা বাঙালাদেশের বরিশাল জেলায়। তার শৈশব এবং কৈশোরের দিনগুলি কাটে বাঙলাদেশের উত্তরাঞ্চলে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙলা ভাষার অধ্যাপনা করে গিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগে তিনি অনায়াসে বিচরণ করেছেন। তিনি উপন্যাসিক, ছােট গল্পকার, রম্য রচনাকার, প্রাবন্ধিক এবং কিশাের সাহিত্যের অন্যতম সফল লেখক। তার প্রথমদিককার লেখা শিলালিপি’, ‘উপনিবেশ' আজও পাঠক মনকে উদ্বেলিত করে। ছােট গল্প ‘টোপ’ তাঁর একটি অসাধারণ রচনা। কিশােরদের জন্য সৃষ্ট ‘পটলডাঙায় টেনিদা' তার এক আশ্চর্য সৃষ্টি। লেখক জীবনের প্রথম থেকেই তিনি বামপন্থী সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ননী ভৌমিক বীরভূম জেলার মানুষ। লেখা পড়া করেন অধুনা বাংলাদেশে রঙপুর কারমাইকেল কলেজে। ঐখানেই তিনি ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। বাঙলা প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের তিনি ছিলেন অন্যতম কর্মী ও সংগঠক। এক সময় তিনি পরিচয়-এর অন্যতম সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেন। চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকে মার্কসবাদী এবং প্রগতিশীল পাঠক মহলে তার গল্পগুলি সাড়া জাগিয়েছিল। তার লেখা ‘ধূলােমাটি’, ‘ধানকানা” এবং “চৈত্রদিন’ আজও বাঙলা প্রগতি সাহিত্যের পাঠকদের কাছে অতি পরিচিত নাম। একসময় তিনি রাশিয়ায় ছিলেন। রুশ ভাষা থেকে তিনি একাধিক গ্রন্থ বাঙলায় অনুবাদ করেছেন।
সুধীর করণ গল্পকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি লোক সংস্কৃতি ও সমাজতত্বের গবেষক হিসাবে এখন বিশেষ পরিচিত। কিন্তু এককালে রাঢ়ভূমি নিয়ে অনেক গল্প এবং সমস্যাধর্মী প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং পরিচয় পত্রিকায় একসময় তিনি নিয়মিত লিখতেন। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম তার লেখার মূখ্য বিষয়। আর এই মানুষদের তিনি চিত্রিতও করেছেন অত্যন্ত দরদের সঙ্গে তার বিভিন্ন গল্প এবং রচনায়।
সলিল চৌধুরী এখন বৈচিত্রময় সুরসৃষ্টিকার এবং সঙ্গীতকার হিসাবে সর্বজনস্বীকৃত এবং জনপ্রিয়। কিন্তু এক সময় তিনি কবি এবং গণসঙ্গীতকার রূপে বিশেষ পরিচিত ছিলেন। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশক জুড়ে যে সব গণসংগ্রাম হয়, সেই সব সংগ্রামের কথা, সংগ্রামী মানুষেরবলিষ্ঠ জীবনাদর্শের কথা তিনি তুলে ধরেন তার কবিতা ও গানের মাধ্যমে। সারা বাংলাকে মাতিয়ে দেন গানের বৈপ্লবিক সুরমাধুর্যে, নতুন রূপকল্পে এবং বিচিত্র ঝংকারে। গান আর কবিতার ভাষায় তিনি এনে ছিলেন নতুনত্বের স্বাদ আর প্রাণচাঞ্চল্য। লিখেছেন অজস্র কবিতা আর গান। কাকদ্বীপের কৃষকদের সংগ্রামের ওপর লেখা.তার দীর্ঘ কবিতা ‘শপথ’ এবং অন্যান্য কবিতা আর গান সেই সময় হাজার হাজার কণ্ঠে ধ্বনিত হত গ্রাম-নগর মাঠ-পাথারে। গণনাট্য সংঘের তিনি ছিলেন সর্বক্ষণের কর্মী এবং সংগঠক। পঞ্চাশের দশকে প্রকাশিত হয় তাঁর গণসঙ্গীতের একটি অসাধারণ সংকলন ‘প্রান্তরের গান'। কবিতা ও গান রচনা এবং সুরসৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে কিছু অসাধারণ গল্পও তিনি লিখেছেন। 'ড্রেসিং টেবিল' এবং 'গুণময় গুঁই এর জীবন চরিত’তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য।
'গ্রাম বাংলার গল্প' বইয়ের প্রকাশিত গল্পগুলির নাম-
ভবানী সিংহের ফিসারী- রমেশচন্দ্র সেন.......৮
কামরু ও জোহরা- সোমনাথ লাহিড়ী...........২৩
মন্ত্রশক্তি- স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য....................৪৯
ছিনিয়ে খায়নি কেন- মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়...৬৯
ঠিকাদার- মনোরঞ্জন হাজরা.....................৮৩
বউ- সুশীল জানা.................................৯৭
বন্দুক- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়...................১১১
আগন্তুক- ননী ভৌমিক.........................১২৩
শপথ- সুধীর করণ..............................১৪৯
চাল চোর- সলিল চৌধুরী.......................১৬৩
লাখে না মিললে এক- গোলাম কুদ্দুস.........১৭৭
সাদাকুর্তা- উমানাথ ভট্টাচার্য....................২০৭
সুন্দরী- আলআউদ্দীন আল-আজাদ...........২১৯
দালাল- মিহির আচার্য...........................২৩৫
হাউব- মিহির সেন...............................২৪৭
হালাল- অরুণ চৌধুরী.......................... ২৬৩
জোঁক- আবু ইসহাক.............................২৮৩
সামনে চড়াই- ধর্মদাস মুখোপাধ্যায়...........২৯৫
অরণ্যের স্বপ্ন- সৌরী ঘটক......................৩০৭
খড়ম- মুনীর চৌধুরী.............................৩২৭
বাঁধ- জহির রায়হান.............................৩৩৭
বাঘের বাচ্চা- সরোজ দত্ত......................৩৪৭
বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
বাংলা লেখিকাদের লেখা ছোট গল্পের বইয়ের পিডিএফ 'গ্রাম বাংলার গল্প '
ডিজিটাল বইয়ের নাম- ‘গ্রাম বাংলার গল্প’
লেখক- বিভিন্ন বিশিষ্ঠ লেখিকাগণ
সম্পাদিত বই
সম্পাদনা- কমলেশ সেন
ধরন- ছোট গল্প
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৩৬৯
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ২০এমবি
জলছাপমুক্ত, ঝকঝকে প্রিন্ট
গ্রাম বাংলার গল্প বইয়ের গল্পগুলি যাঁহারা লিখেছেন, তাঁদের জীবনকাহিনী সংক্ষিপ্তকারে নীচে বর্নিত হইল।
রমেশচন্দ্র সেন দরদী গল্পকার, উপন্যাসিক। জন্ম অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল জেলায়। তথাকথিত উচ্চশিক্ষার কোনু ডিগ্রী তার ছিল না। প্রথম জীবনে পারিবারিক বৃত্তি কবিরাজী শুরু করলেও, বেশীদিন তিনি ঐ বৃত্তিতে নিজেকে নিয়ােজিত রাখেন নি। চলে আসেন সাহিত্যের জগতে। অত্যন্ত কাছ থেকে যে মানুষ এবং জগতকে তিনি দেখেছেন দরদী মন দিয়ে সাহিত্যে তাকে রূপ দেবার চেষ্টা করেছেন। উপন্যাস ‘কাজল’ এবং দাঙ্গার ওপর লেখা গল্প ‘সাদা ঘোড়া' তাঁকে খ্যাতির উচ্চসীমায় পৌছে দেয়। দেশ ভাগ এবং ছিন্নমূল মানুষদের নিয়ে লেখা 'পূর্ব থেকে পশ্চিমে' একটা অসাধারণ উপন্যাস। জীবনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল লেখক। এই গল্পটি ১৩৬২ সালের শারদীয় স্বাধীনতায় প্রকাশিত হয়।
সােমনাথ লাহিড়ি রাজনীতিক হিসাবে সমধিক পরিচিত হলেও, সাংবাদিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক এবং অনুবাদকরূপে সুপ্রতিষ্ঠিত। অবিভক্ত বাংলায় যারা কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ে তােলেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। শ্রমিক আন্দোলনকে সঙ্গবদ্ধ করার কাজে তিনি বহুকাল কলকাতা এবং তৎসংলগ্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে কাজ করেন। কলকাতা ট্রাম ওয়ার্কাস ইউনিয়নের
প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি একজন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র স্বাধীনতার একসময় সম্পাদক ছিলেন। তাঁর অনেক গল্প পরিচয় এবং অন্যান্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ছােট গল্প সংকলন ‘কলিযুগের গল্প’ সেই সময় ভীষণ সাড়া জাগিয়েছিল। এরেনবুর্গের ‘নবমতরঙ্গ' এবং 'ক্যাপিটাল' এর কিছু অংশের অনুবাদ বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। তিরিশের দশকে লেনিনের State & Revolution-এর অনুবাদ তিনি করেন। কিন্তু ‘রাষ্ট ও বিপ্লব’ নামকরণে বইটা বেআইনী হয়ে যাবার আশঙ্কায় 'রাষ্ট ও আবর্তন' নামে প্রকাশিত হয়।
স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য সাংবাদিক, গল্পকার, অনুবাদক। অধুনা বাংলাদেশে জন্ম। একাধিক পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ‘অগ্রনী’ পত্রিকা নতুন করে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। 'অনামী’ছদ্মনামে ‘অরণি' পত্রিকা তাঁর যে সব রচনা প্রকাশ করেছিল বিদগ্ধ পাঠক মহলে তা সমাদৃত হয়। প্রগতি লেখক ও শিল্পী সবের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন এবং বাংলার প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেন। তিনি মার্কসবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। এই বিশ্বাস তাঁর প্রতিটি লেখায় বিভিন্নভাবে মূর্ত হয়ে উঠেছে। তার গল্পগুলি জীবনধর্মী—জীবনকে তিনি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন, তাঁকে অনুভব করেছেন। এই অনুভব ছিল অত্যন্ত সতেজ এবং সাবলীল। তার গল্প সংকলন ‘ছােট বড় মাঝারি’-তে এর আশ্বাদ পাওয়া যায়।
মাণিক বন্দোপাধ্যায়ের জন্ম সাওতাল পরগণার দুমকা অঞ্চলে ১৯শে মে, ১৯০৮ সালে। পৈত্রিক বাড়ি বর্তমান বাঙলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের মালবাদিয়াতে। আসল নাম প্রবােধকুমার বন্দোপাধ্যায়। প্রথম গল্প ‘অতসী মাসী’ তিনি বাজি ধরে ‘বিচিত্রা' পত্রিকায় লেখেন। লেখকজীবন শুরু হওয়ার অল্পদিনের মধ্যে তিনি মার্কসবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যােগ দেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনেব ঝাণ্ডা তিনি যেভাবে উর্ধ্বে তুলে ধবেন তা উত্তবসূরী লেখকদের প্রেরণা জাগায় এবং পথনির্দেশ করে। রসিদ আলি দিবসের স্মৃতি নিয়ে লেখা 'চিহ্ন',
'খতিয়ান’ এবং 'আদায়ের ইতিহাস’ ঐতিহাসিক কারণে উল্লেখযােগ্য। তিনি অসংখ্য গল্প উপন্যাস লিখে গেছেন। উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি', ‘পুতুলনাচের ইতিকথা' এবং ছােট গল্প ‘ছােট বকুলপুরের যাত্রী', হারানো নাতজামাই’এর মধ্যে নিঃসন্দেহে উল্লেখযােগ্য। তঁার অনেক লেখা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
মনোরঞ্জন হাজরার লেখকজীবন থেকে অনেক বেশী মুখব—অনেক বেশী কর্মবহুল তার রাজনৈতিক জীবন। কর্মবহুল রাজনৈতিক জীবনের ফাঁকে ফাঁকে তিনি অনায়াসে কলম ধরেছেন। সংগ্রামের বাস্তবভূমি থেকে তুলে এনেছেন অনেক অলিখিত সংগ্রামী ঘটনা, অনেক জানা-অজানা মানুষ। শুধু শহর-গঞ্জের নয়, গ্রাম-বাংলার বিস্তৃত পটভূমিও তার লেখায় এসেছে। স্বাধীনতা এবং অন্যান্য পত্রপত্রিকায় একসময় তার অনেক গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ ‘কাইপার রােডে ঝড়', 'নােঙর। পশ্চিম বাংলা বিশেষ করে হুগলি জেলায় যারা কমিউনিস্ট আন্দোলন গড়ার পুরােভাগে ছিলেন, মনোরঞ্জন হাজরা তাদের মধ্যে অন্যতম। শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলনকে সঙ্গৰন্ধ করার কাজে তিনি আজীবন নিজেকে নিয়ােজিত বাখেন।
সুশীল জানার জন্ম মেদিনীপুর জেলায়। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে তার নাম অবিচ্ছন্নভাবে জড়িত। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে একটানা লিখছেন। বিস্তীর্ণ পটভূমির বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবন
ও সংগ্রাম নিয়ে তিনি অনেক গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গে তাঁব নাড়ীর যােগ। সেই সব মানুষের প্রেম ও দুঃখ, সুখ ও সংগ্রাম এবং জীবন অতিক্রমনের সমস্যা ও জটিলতা
আর সেই সমস্যা জটিলতার ঘূর্ণাবর্ত থেকে উত্তরণের একক অথবা যৌথ প্রচেষ্টা তার কলমে আশ্চর্য মমতায় রূপায়িত হয়েছে। তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে লিখে গেছেন সেই একই ধারায়, সাধারণ মানুষদের নিয়ে, তাদের সংগ্রাম ও জীবন নিয়ে।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃকবাড়ী অধুনা বাঙালাদেশের বরিশাল জেলায়। তার শৈশব এবং কৈশোরের দিনগুলি কাটে বাঙলাদেশের উত্তরাঞ্চলে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙলা ভাষার অধ্যাপনা করে গিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগে তিনি অনায়াসে বিচরণ করেছেন। তিনি উপন্যাসিক, ছােট গল্পকার, রম্য রচনাকার, প্রাবন্ধিক এবং কিশাের সাহিত্যের অন্যতম সফল লেখক। তার প্রথমদিককার লেখা শিলালিপি’, ‘উপনিবেশ' আজও পাঠক মনকে উদ্বেলিত করে। ছােট গল্প ‘টোপ’ তাঁর একটি অসাধারণ রচনা। কিশােরদের জন্য সৃষ্ট ‘পটলডাঙায় টেনিদা' তার এক আশ্চর্য সৃষ্টি। লেখক জীবনের প্রথম থেকেই তিনি বামপন্থী সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ননী ভৌমিক বীরভূম জেলার মানুষ। লেখা পড়া করেন অধুনা বাংলাদেশে রঙপুর কারমাইকেল কলেজে। ঐখানেই তিনি ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। বাঙলা প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের তিনি ছিলেন অন্যতম কর্মী ও সংগঠক। এক সময় তিনি পরিচয়-এর অন্যতম সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেন। চল্লিশ-পঞ্চাশ দশকে মার্কসবাদী এবং প্রগতিশীল পাঠক মহলে তার গল্পগুলি সাড়া জাগিয়েছিল। তার লেখা ‘ধূলােমাটি’, ‘ধানকানা” এবং “চৈত্রদিন’ আজও বাঙলা প্রগতি সাহিত্যের পাঠকদের কাছে অতি পরিচিত নাম। একসময় তিনি রাশিয়ায় ছিলেন। রুশ ভাষা থেকে তিনি একাধিক গ্রন্থ বাঙলায় অনুবাদ করেছেন।
সুধীর করণ গল্পকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি লোক সংস্কৃতি ও সমাজতত্বের গবেষক হিসাবে এখন বিশেষ পরিচিত। কিন্তু এককালে রাঢ়ভূমি নিয়ে অনেক গল্প এবং সমস্যাধর্মী প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রগতি সাহিত্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং পরিচয় পত্রিকায় একসময় তিনি নিয়মিত লিখতেন। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম তার লেখার মূখ্য বিষয়। আর এই মানুষদের তিনি চিত্রিতও করেছেন অত্যন্ত দরদের সঙ্গে তার বিভিন্ন গল্প এবং রচনায়।
সলিল চৌধুরী এখন বৈচিত্রময় সুরসৃষ্টিকার এবং সঙ্গীতকার হিসাবে সর্বজনস্বীকৃত এবং জনপ্রিয়। কিন্তু এক সময় তিনি কবি এবং গণসঙ্গীতকার রূপে বিশেষ পরিচিত ছিলেন। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশক জুড়ে যে সব গণসংগ্রাম হয়, সেই সব সংগ্রামের কথা, সংগ্রামী মানুষেরবলিষ্ঠ জীবনাদর্শের কথা তিনি তুলে ধরেন তার কবিতা ও গানের মাধ্যমে। সারা বাংলাকে মাতিয়ে দেন গানের বৈপ্লবিক সুরমাধুর্যে, নতুন রূপকল্পে এবং বিচিত্র ঝংকারে। গান আর কবিতার ভাষায় তিনি এনে ছিলেন নতুনত্বের স্বাদ আর প্রাণচাঞ্চল্য। লিখেছেন অজস্র কবিতা আর গান। কাকদ্বীপের কৃষকদের সংগ্রামের ওপর লেখা.তার দীর্ঘ কবিতা ‘শপথ’ এবং অন্যান্য কবিতা আর গান সেই সময় হাজার হাজার কণ্ঠে ধ্বনিত হত গ্রাম-নগর মাঠ-পাথারে। গণনাট্য সংঘের তিনি ছিলেন সর্বক্ষণের কর্মী এবং সংগঠক। পঞ্চাশের দশকে প্রকাশিত হয় তাঁর গণসঙ্গীতের একটি অসাধারণ সংকলন ‘প্রান্তরের গান'। কবিতা ও গান রচনা এবং সুরসৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে কিছু অসাধারণ গল্পও তিনি লিখেছেন। 'ড্রেসিং টেবিল' এবং 'গুণময় গুঁই এর জীবন চরিত’তার মধ্যে উল্লেখযােগ্য।
'গ্রাম বাংলার গল্প' বইয়ের প্রকাশিত গল্পগুলির নাম-
ভবানী সিংহের ফিসারী- রমেশচন্দ্র সেন.......৮
কামরু ও জোহরা- সোমনাথ লাহিড়ী...........২৩
মন্ত্রশক্তি- স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য....................৪৯
ছিনিয়ে খায়নি কেন- মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়...৬৯
ঠিকাদার- মনোরঞ্জন হাজরা.....................৮৩
বউ- সুশীল জানা.................................৯৭
বন্দুক- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়...................১১১
আগন্তুক- ননী ভৌমিক.........................১২৩
শপথ- সুধীর করণ..............................১৪৯
চাল চোর- সলিল চৌধুরী.......................১৬৩
লাখে না মিললে এক- গোলাম কুদ্দুস.........১৭৭
সাদাকুর্তা- উমানাথ ভট্টাচার্য....................২০৭
সুন্দরী- আলআউদ্দীন আল-আজাদ...........২১৯
দালাল- মিহির আচার্য...........................২৩৫
হাউব- মিহির সেন...............................২৪৭
হালাল- অরুণ চৌধুরী.......................... ২৬৩
জোঁক- আবু ইসহাক.............................২৮৩
সামনে চড়াই- ধর্মদাস মুখোপাধ্যায়...........২৯৫
অরণ্যের স্বপ্ন- সৌরী ঘটক......................৩০৭
খড়ম- মুনীর চৌধুরী.............................৩২৭
বাঁধ- জহির রায়হান.............................৩৩৭
বাঘের বাচ্চা- সরোজ দত্ত......................৩৪৭
বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
বাংলা লেখিকাদের লেখা ছোট গল্পের বইয়ের পিডিএফ 'গ্রাম বাংলার গল্প '
No comments:
Post a Comment