বিদ্যুতের রূপকথা - অজয় চক্রবর্তী, বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'বিদ্যুতের রূপকথা'
লেখক- অজয় চক্রবর্তী
বইয়ের ধরন- বিজ্ঞান / আবিষ্কারের গল্প
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১১৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৪এমবি
অরিজিনাল আপলোডার- বিদ্যা নস্কর
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত,
রূপকথার রাজ্যে অনেক অসম্ভবই ঘটে যায়। রাক্ষস-খোক্ষস, দৈত্যি-দানারা পলকে অবিশ্বাস্য সব কাণ্ড বাধায়, সোনার কাঠির ছোয়ায় অচেতন রাজকুমারীর চেতনা ফেরে ; ব্যাঙ, মাছ, শেয়ালের মতো প্রাণীরাও রাজকুমারকে সাহায্য করে অসম্ভব সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজকন্যা আর রাজত্ব লাভ করতে। বিজ্ঞানের ইতিহাসেও এমন সব আশ্চর্য ঘটনা আছে। বিজ্ঞানের রাজ্যেও অনেক অসম্ভব সম্ভব হয়েছে, অনেক কষ্টকল্পনাই সেখানে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাই বিজ্ঞানের ইতিহাসেও আছে রূপকথার উপাদান। সত্য অনেক সময়ই কল্পনাকে ছাপিয়ে যায়। তাই বাস্তবের কথা অনেক ক্ষেত্রে রূপকথার চেয়েও বিস্ময়কর মনে হয়। বিজ্ঞানের যে-কোন বিষয়ের ক্রমবিকাশের ইতিহাস অনুসরণ করলেই এ কথার সত্যতা ধরা পড়ে। বর্তমান গ্রন্থের আলোচ্য হলো তড়িৎ-বিজ্ঞানের ক্রমবিকাশের কথা। কাজেই, এর নাম দেওয়া হয়েছে বিদ্যুতের রূপকথা। রূপকথায় সোনার কাঠির ছোয়ায় যেমন রাজকুমারী জেগে উঠেছিল, বিদ্যুতের রূপকথায় তেমনি আছে এক হতাশ বুক-বাইণ্ডারের কথা, একজন বিজ্ঞানীর মেহম্পর্শে যার ঘুমন্ত প্রতিভা জেগে উঠেছিল। রূপকথায় এক ব্যাঙের কথা পড়েছিলাম যে-ব্যাঙ সমুদ্রের অতল থেকে কী একটা খুঁজে এনে দিয়ে রাজকুমারকে একটি কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সাহায্য করেছিল। বিদ্যুতের রূপকথাতেও আছে এক ছাল-ছাড়ানো ব্যাঙের কথা যে-ব্যাঙ বিজ্ঞানী গ্যালভানিকে দুর্লভ সম্মান এনে দিয়েছিল যার দাম রাজত্ব আর রাজকন্যের চেয়ে কম নয়। রূপকথায় এক জাদুকরের কথা পড়েছিলাম যে-জাদুকর তার জাদুবাক্সের সাহায্যে দূর থেকে কথাবার্তা চালাতে পারতো তার সাকরেদদের সঙ্গে। বিদ্যুতের রূপকথায় এমনি জাদুকর মোর্স, এমনি জাদুকর আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু এবং বিজ্ঞানী মার্কনি ।
বিজ্ঞানের ইতিহাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে বিজ্ঞানীদের কাছে, বিজ্ঞানের ছাত্রদের কাছে এবং বিজ্ঞানানুরাগীদের কাছে। পাঠ্যবইতে বিজ্ঞান আসে কিছু সূত্র আর তত্ত্বের রূপ ধরে। কিন্তু কেমন করে সে-সব সুত্র আর তত্ত্বের আবির্ভাব ঘটেছে সে-সব কথা সেখানে অনুচ্চারিত থেকে যায়। ফলে বিজ্ঞানের ছাত্ররা এবং খণ্ডিত দৃষ্টিসম্পন্ন বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানকে দেখে বিচ্ছিন্ন কতকগুলো চিত্রের মতো। সমগ্র বিজ্ঞান যে আসলে একটিই দৃশ্যপট তা তাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। দৃষ্টির এই সামগ্রিকতা গড়ে তুলতে হলে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় থাকা দরকার। বিজ্ঞানের কোন সূত্ৰই আকাশ থেকে পড়ে না। গাছ থেকে একটা আপেল পড়লো আর তা দেখে নিউটন মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করে ফেললেন এ ধরনের কিংবদন্তী এবং বিশ্বাস চালু থাকলেও বিজ্ঞানের ইতিহাসে কোন আবিষ্কারই এভাবে ঘটে না। সমস্ত আবিষ্কারের জন্যই পটভূমি রচিত হওয়া চাই, ক্ষেত্র প্রস্তুত হওয়া চাই। ডেনমার্কের জ্যোতির্বিজ্ঞানী টাইকো ব্রাহের গবেষণা, তার ছাত্র কেপলারের গবেষণা এবং গ্যালিলিওর নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং সিদ্ধান্তের পটভূমিতেই মহাকর্ষ সূত্রের আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েছিল। গ্যালভানির প্রাণী-বিদ্যুৎ মতবাদের পটভূমিতেই ভোল্টা তড়িৎ-কোষ উদ্ভাবনের সূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন। তবু অনেকে বিশ্বাস করেন যে, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার নিছক দৈব ঘটনা। অনেক বিজ্ঞানীও এ বিশ্বাসে অটল যে, দৈব যোগাযোগ ছাড়া বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্ভবপর নয়। তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন যে, সৌভাগ্যক্রমে আপেল পড়তে দেখেছিলেন বলেই নিউটন মহাকর্ষ সূত্রটির হদিশ পেয়েছিলেন। সবিনয়ে বলছি, এরূপ বিশ্বাসের মূলে আছে বিজ্ঞানের ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞতা।
কোন কথাকে আমরা সত্য বলে মানব ? এ সম্পর্কে দার্শনিকেরা নানান প্রমাণের কথা বলেন। তার মধ্যে একটি হলো, বিশ্বস্ত ব্যক্তির সাক্ষ্য। কাজেই কোন বিশ্বস্ত ব্যক্তি যদি বলেন যে, পড়ন্ত আপেলই নিউটনকে মহাকর্ষ সূত্রের সন্ধান দিয়েছে তাহলে আর সেকথা অবিশ্বাস করবে কেমন করে ? কেন না, বিশ্বস্ত ব্যক্তির সাক্ষ্যও তত ‘প্রমাণ'। বিখ্যাত ফরাসী সাহিত্যিক ভোন্টেয়ার লিখেছেন, পড়ন্ত আপেল দেখেই নিউটন মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন। ভোল্টেয়ারের সাক্ষ্য কখনো মিথ্যে হতে পারে ? ...
মানুষ আজ আগুন ছাড়াই ধাতু গলাতে পারে, জ্বালানি ছাড়াই আলো জ্বালাতে পারে, পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে অন্য প্রান্তের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে। যার সাহায্যে এসব ইন্দ্রজাল আজ আয়ত্তে এসেছে তার নাম ‘বিদ্যুৎ'। বিদ্যুৎকে বোধ করি আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের সঙ্গে তুলনা করা চলে। আলাদিনের আজ্ঞাবহ দৈত্যটি যেমন পলকে অসাধ্য সাধন করতো, বিদ্যুৎও আজ তেমনি অসম্ভবকে বাস্তবায়িত করছে। কেবল একটা সুইচ, টিপলেই অন্ধকারের বুকে চোখ-ধাঁধানো আলো ফুটে ওঠে। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে বার্তা পাঠাতে হবে? বিদ্যুতের সাহায্যে আজ মুহূর্তের মধ্যেই তা সম্ভব হচ্ছে। আরব্য উপন্যাসের জীন-দৈত্যরাও বোধ করি এত দ্রুত সে সংবাদ পৌছে দিতে পারতো না। হাজার আরবী ঘোড়া এক সঙ্গে বেঁধে দিয়েও সে দ্রুততার সঞ্চার করা যায় না, বিদ্যুতের টানে রেলগাড়ি, ট্রামগাড়িতে সহজেই সে দ্রুততা সঞ্চারিত হচ্ছে।
মানুষ কী ভাবে এ অসম্ভবকে সম্ভব করলো, এক শতাব্দী আগেও যা ছিল কষ্ট-কল্পনার বিষয়, কী করে আজ তা বাস্তবায়িত হলো—সে ইতিহাস রূপকথার চেয়ে ও উপভোগ্য এবং রোমাঞ্চকর। সে ইতিহাস মানুষের অপরিসীম অনুসন্ধিৎসার ইতিহাস, অসীম ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং তিতিক্ষার ইতিহাস। মানুষ কেমন করে বিদ্যুৎ-শক্তিকে নিজের কাজে লাগাতে শিখলো সে ইতিহাস, সে রূপকথা সুদীর্ঘ। - লেখক
বইটি সংগ্রহ করুন আর জানুন সেই অজানা রূপকথা।
এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা আবিষ্কারের পিছনে যে রূপকথার ইতিহাস সেই গল্প বিজ্ঞান ভিত্তিক গল্পের বই 'বিদ্যুতের রূপকথা - অজয় চক্রবর্তী' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন
No comments:
Post a Comment