শরৎ-সাহিত্যে নারী সম্পাদিত পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Thursday, December 9, 2021

শরৎ-সাহিত্যে নারী সম্পাদিত পিডিএফ


শরৎ-সাহিত্যে নারী, সম্পাদিত বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'শরৎ-সাহিত্যে নারী'
সম্পাদনা- ক্ষীরোদ কুমার দত্ত
বইয়ের ধরন- প্রবন্ধ বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২২৬
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১৪এমবি
প্রিন্ট ভালো, জলছাপ মুক্ত

শরৎ-সাহিত্যে নারী

সাহিত্যসৃষ্টি যে মানুষের পরিবর্তনশীল মানসলকের উপর নির্ভর করে, একথা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। মানব-মনের এই ব্যাপক পরিবর্তন কখনও ধীর মন্থর গতিতে, কখনও দ্রুত উন্মত্ত গতিতে ঘটে। যখন সমাজমনের গতি ধীরে ধীরে কোনও এক অবস্থা হইতে অবস্থান্তরে পরিণতি লাভ করে, তখন মানবসমাজের অবচেতনা তাহাকে কোনও রূপে মানাইয়া লয়। আর যখন এই পরিবর্তন দ্রুত সংঘটিত হয়, তখন সমাজ তাহাকে 'বিপ্লব' আখ্যা দিয়া দূরে ঠেলিয়া রাখিতে চায়। সমাজে রক্ষণশীলতা একটি স্বাভাবিক আত্মরক্ষার উপায়। যে সমাজে রক্ষণশীলতা যত বেশী সে সমাজে বিপ্লবী সংস্কার তত বেগলাভ করে। ইহাই নিয়ম।
সাহিত্যে এই নিয়ম সর্বত্র প্রতিফলিত দেখা যায়। বঙ্কিমবাবুর উপন্যাসে যখন রোহিণী কুন্দনন্দিনীর আবির্ভাব হইল, তখন বঙ্গদেশের সমাজজীবন অনেকখানি আগাইয়া গিয়াছে, মহাশ্বেতার যুগ বহু পশ্চাতে পড়িয়া রহিয়াছে, হীরামালিনীর নির্লজ্জ চাতুরীও অচল হইয়া পড়িয়াছে। তারপরে রবীন্দ্রনাথের ‘চোখের বালির ‘বিনোদিনী' আমাদের বুঝাইয়া দিল যে ‘ভ্রমর'ও এখন অচল হইয়া পড়িয়াছে। বস্তুত, যে ভ্রমর-চরিত্রের সমালোচনায় রক্ষণশীল সমাজ একদিন শতমুখ হইয়া উঠিয়াছিল, আধুনিক তরুণ সমালোচকের দল দেখিলেন, সে-ভ্রমরের যুগ বহুদিন অতীত হইয়াছে, এখন সে চরিত্র সৃষ্টির মধ্যে সত্যের স্পন্দন আর তেমন অনুভূত হয় না।
শরৎ-সাহিত্যে নারী-চরিত্র সৃষ্টি যে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করিয়াছে সেম্বন্ধে সন্দেহ নাই। বর্তমান জগতের আবহাওয়ায় যে নারী-চরিত্র আমাদের চতুষ্পার্শ্বে আবির্ভুত হইতেছে, তাহারই প্রতিচ্ছবি শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে স্থান পাইয়াছে বলিয়া তাহার কাব্যপ্রতিভা বাঙ্গালীর মনকে এমন ভাবে মুগ্ধ করিতে পারিয়াছে। সত্যের আলোক সহিতে না পারিলে চলিবে কেন? কল্পনার শিল্পোদ্যান ( Hot-house) হইতে তিনি তাহার পুষ্পসম্ভার সংগ্রহ করেন নাই। বাঙ্গালীর ঘরের পাশে কেতকী কেতসের কুঞ্জে যে সকল চারুচিত্র ফুল নিত্য ফুটিয়া থাকে, তাহারই দুই-চারিটি তিনি আমাদের জন্য সযত্নে অহরণ করিয়াছেন। শরৎচন্দ্রের রাজলক্ষ্মী, সাবিত্রী, রমা, পার্বতী, কিরণময়ী, অচলা প্রভৃতি সেই শ্রেণীর চরিত্র, যাহারা বর্তমান সমাজের আবহাওয়ায় প্রাণের স্পর্শ লাভ করিয়া সত্য হইয়া উঠিয়াছে, এই সকল চরিত্রসৃষ্টির মূলে যে সত্যকার অনুভূতি বেদনা মূর্ত হইয়া উঠিয়াছে, তাহাই ইহাদের জীবনকে পরম রমণীয় করিয়া তুলিয়ছে। বর্তমান সমাজের জটিল সমস্যাগুলি কিরূপে এই নারী চরিত্রকে অবলম্বন করিয়া দেখা দিয়াছে তাহাই ক্ষীরোদ কুমার নিপুণ ভাবে একান্ত সহানুভূতির সহিত বিশ্লেষণ করিয়া দেখাইয়াছেন।
সাধারণভাবে শরৎচন্দ্রের সমস্ত নারীচরিত্র সম্বন্ধে আলোচনা করে বেছে বেছে কয়েকটি চরিত্রকেই স্থান দেওয়া হয়েছে এই পুস্তকে।

সাহিত্যিক তাহার রচিত সাহিত্যে নরনারীর চিত্র অঙ্কন করেন, পাঠক-পাঠিকার মুখ চাহিয়া। উপন্যাসের সকল নরনারীকেই ঔপন্যাসিকের হুকুম তামিল করিতে হয়। ইহাদের অস্তিত্ব এবং গতিবিধি সমস্তই উপন্যাসের ঘটনাস্রোতের উপর নির্ভর করে। ঘটনার বিকাশে চরিত্রের বিকাশ, আবার চরিত্রের বিকাশেই ঘটনার বিকাশ। সুতরাং শরৎ-সাহিত্যই হউক, বঙ্কিম-সাহিত্যই হউক অথবা রবীন্দ্র-সাহিত্যই হউক, কাহারও রচনায় নারীর বিশেষ একটা স্থানের কথা বলিলে এবং এ সম্পর্কে একটু বিবেচনা করিলে তাহার কোন অর্থ হয় না। যে সাহিত্যে আমরা সীতাকে দেখি, তাহার পাশেই দেখি মন্থরাকে, দেখি শূর্পনখাকে। যে কবি কৌশল্যা এবং সুমিত্রার চিত্র অঙ্কিত করিয়াছেন, তাহারই হাতে আঁকা আমরা কৈকেয়ী ও মন্থরাকেও দেখিতে পাই। সাহিত্যে যেমন ডেসডেমন আছে, তেমনি লেডী ম্যাকবেথও আছে ; যেমন ভ্রমর আছে, তেমনি রোহিণীও আছে ; যেখানে সূর্যমুখী কুন্দনন্দিনীর স্থান, তাহার পাশেই হীরার স্থান। এই দুই শ্রেণীর বিপরীতমুখী চিত্ৰ আপনআপন চলার পথে যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে তাহারই বিকাশে সাহিত্যের বিকাশ। সুতরাং সাহিত্যক্ষেত্রে এই দুই বিপরীত শ্রেণীর চিত্র বিকাশ। সুতরাং সাহিত্যক্ষেত্রে এই দুই বিপরীত শ্রেণীর চিত্র অতীতে যেমন ছিল, আজও তেমনি আছে এবং ভবিষ্যতেও ইহাদের প্রয়োজন এইরূপই থাকিবে।

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে একটি প্রবন্ধ বই- 'শরৎ-সাহিত্যে নারী'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment