বিদেশী কথাসাহিত্যে সপ্ত কিশোরী - বাংলা অনুবাদ বই পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Monday, November 23, 2020

বিদেশী কথাসাহিত্যে সপ্ত কিশোরী - বাংলা অনুবাদ বই পিডিএফ


 বিদেশী কথাসাহিত্যে সপ্ত কিশোরী - বাংলা অনুবাদ বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'বিদেশী কথাসাহিত্যে সপ্ত কিশোরী'
লেখক- বিভিন্ন বিদেশী লেখকগণ
অনুবাদক- কাননবিহারী মুখোপাধ্যায়
বইয়ের ধরন- অনুবাদ গল্প সংগ্রহ বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২২৩
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ১৪এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত

বিদেশী কথাসাহিত্যে সপ্ত কিশোরী

অনুবাদক-কাননবিহারী মুখোপাধ্যায় যিনি বিশ্বভাবতীর বাংলা সাহিত্যের প্রাক্তন অধ্যাপক ও মহাজাতি সদনের প্রথম কর্মসচিব। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদর্শশালার প্রাক্তন অধ্যক্ষ। “মানুষ রবীন্দ্রনাথ” প্রভৃতি গ্রন্থের লেখক।

যেসকল অনুবাদ গল্পগুলি এই বইতে রয়েছে-
জন গলওয়ারদি-র লেখা: আপেল গাছটি
অ্যালফনস দদে এর লেখা : বারলিনের অবরোধ
হান্স ক্রিসটিয়ান অ্যানডারসন-এর লেখা: ছোট্ট জলকুমারী
“সাকি”-র লেখা : খোলা জানালা।
অনরা দ্য বালজাক-এর লেখা : মরুর দেশে মোহিনী মায়া
কনরাড বারকোভিচি-র লেখা : ভালুকশিকারীর মেয়ে
লিও নিকোলায়েভিচ টলসটয়-এর লেখা: ককেশাসের বন্দী


এই অনুবাদ বইটির সাত আটটি কাহিনীর বিষয়বস্তু সম্বন্ধে বেশ একটি মিল রয়েছে। সকল ক্ষেত্রেই বিষয়বস্তু ঘনীভূত হয়েছে এক-একজন কিশোরীকে কেন্দ্র করে। প্লট গুলির প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে কিশোর হৃদয়ে বিচিত্র রূপের রঙিন আলপনা। “আপেল গাছটি”, “ছোট্ট জলকুমারী”, “ভালুকশিকারীর মেয়ে” এবং “ককেশাসের বন্দী” এই চারটি গল্প ত প্রত্যক্ষভাবে কিশোরী-নারীর প্রথম প্রেমের কড়চা। কিশোরী চিত্তের আর-একটি ভিন্ন স্তরের রূপ হচ্ছে অমেয় ভক্তি এবং নিবিড় মমতা। এ কথা ত আমাদের অজানা নয় যে, যৌবনকাল থেকে শেষের দিন পর্যন্ত নারীজীবন প্রবাহিত হয় প্রধান দুটি আবেগকে আশ্রয় করে—প্রেম ও বাৎসল্য। নারীর প্রকৃত রূপ হচ্ছে সে একদিকে প্রিয়া আর একদিকে মা। স্বভাবতঃ কৈশোরই এই দুটি আবেগের উন্মেষ-ঋতু।
“বাবলিনের অবরোধ” গল্পটিকে বঙে-বসে সার্থক কবে তুলেছে বৃদ্ধ ঠাকুরদামশাই-এর প্রতি প্রণোজ্জ্বল একজন কিশশোরী কন্যার ভক্তিপূর্ণ মমতা। বৈষ্ণব সাহিত্যে মানব হৃদয়ের যে চরম আর্তিকে কৃষ্ণপ্রেম আখ্যা দেওয়া হয়েছে, সেই কষ্টিপাথরে বিচার করে এ ইঙ্গিত করা যেতে পাবে যে, এই ঠাকুরদামশাই এর নাতনীর হৃদয়ের স্বভাবজাত সুনিবিড় আকর্ষণ হচ্ছে প্রেমেরই আর-এক স্তরের রূপান্তর। আর “মরুর দেশে মোহিনী মায়া” কাহিনীর নায়িকা কিশোরীবাঘিনীর যে ছবি বালজাক এঁকেছেন, তা যে পুরোপুরি মানুষের প্রেমের সমগোত্রায়—এ কথা ত প্লটের অগ্রগতির নানা সুযোগে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কিন্তু ‘সাকী’র লেখা “খোলা জানালা”র নায়িকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সম্পূর্ণ আলাদা। এর মধ্যে প্রেম, ভক্তি, ভালবাসার কোন সম্পর্ক নেই। আছে কিশোর হৃদয়ের সম্পূর্ণ অন্যজাতের আর-এক আত্মপ্রকাশ। যে পদ্মকুঁড়িটির মধ্যে সবেমাত্র জীবনের পাপড়ি উন্মোচন আরম্ভ হয়েছে, নব-চেতনার বন্যায় উচ্ছল সেই সত্তার কৈশোর-লীলার এক অতি আকর্ষণীয় চটুলতার ছবি।
প্রধান চরিত্র হিসাবে যে চারজন কিশোরীকে আমরা পাই, তারা এক দেশের মেয়ে নয়—ইংল্যাণ্ড, ডেনমারক, পোলাও, রাশিয়া প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মেয়ে। তাদের চরিত্র আঁকা হয়েছে বিভিন্ন জাতির মহাশিল্পীদের তুলির সাহায্যে। তবু চরম বিশ্লেষণে মনে হয়, তারা যেন সকলে মূলতঃ একই ধরনের সত্তার অধিকারিণী । অবশ্য, পরস্পরের মধ্যে বয়সের কিছু তারতম্য আছে, ভালবাসা প্রকাশের ভঙ্গীতে এবং আচরণে বেশ কিছু জাতিগত এবং শ্রেণীগত স্বাতন্ত্রও রয়েছে। তবু এদের চরিত্রে ফুটে উঠেছে ভালবাসার আদিতম যে রূপ, তার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কিনা সন্দেহ।
বিশেষভাবে বিচার করলে বোঝা যায়, এই কিশোরী কন্যা গুলির হৃদয়ে আছে একটা সাংসারিকতাহীন সরলতা। সে সরলতা কিন্তু বোধশূন্য অবুঝের সারল্য নয়। বাস্তবের প্রতি এদের চেতনা বেশ তীক্ষ্ণ অথচ এরা নিজেদের
অজ্ঞাতে পরমের স্বপ্নে বিভোর। কৈশোরের আবির্ভাবে এদের জীবনের ভেতরে বাইরে ঘটল ঋতুবদল। এরা হয়ে পড়ল যেন “অকারণে চঞ্চল”। অবচেতন মনে এল স্বতঃস্ফুর্ত প্রেমের অনুভব। তেমনি এদের প্রথম প্রেম নিবেদনের মধ্যে নেই কোন প্রচ্ছন্ন কৃত্রিম ছলাকলার খেলা। দেখা যায়, পল্লীবাসিনী কিসান কন্যা মেগান, লণ্ডন শহরে প্রতিপালিত স্টেলা আর জিপসী-কিশোরী সাংস্কৃতিক সূক্ষ্মতাহীন, স্কুল-পরিবেশে লালিতা মার্গারিটার চরিত্রে কৈশোর রহস্যের এক মৌলিক রূপ প্রতিফলিত হয়েছে। প্রত্যেকেই নিঃশেষে নিজেকে দিতে চায় কিন্তু এদের নেবার আগ্রহে প্রখরতা নেই। এরা সকলেই ত্যাগে যত উদ্যত,
প্রাপ্তির জন্যে তত লালায়িত নয়। মেগানকে যখন অসহাবস্ট বললে, 'মেগান, আমি তোমাকে বিয়ে করব’, মেগান তখন যা উত্তর দিয়েছিল তার মর্ম হচ্ছে, সে শুধু অ্যাসহারস্টের কাছে থাকতে চায়, তার বেশি কিছু নয়। কাছে থাকতে না পেলে ও যে মারা যাবে ! এই ওর সবচেয়ে বড় ভয়।
জলকুমারীর রূপকে মানবসমাজের একজন কিশোরীর ভালবাসাই প্রচ্ছন্নভাবে আঁকা হয়েছে। অ্যানডারসনের জলকুমারীর সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ছিল সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর। সেই কণ্ঠস্বর সমূলে ডাইনীকে উপহার দিয়ে ও লাভ করেছিল মানুষের দুটি পা
যাতে ও রাজকুমারের সঙ্গলাভ করতে পারে। তারপর পায়ের দুঃসহ যন্ত্রণা সহ্য করেও রাজকুমারের সঙ্গলাভে যেটুকু চরম স্তরের পরিতৃপ্তি পেয়েছিল, তাতে নিজেকে ধন্য মনে করেছিল।
“ককেশাসের বন্দী” গল্পের নায়িকা তাতারী-কিশোরী দীনা ভালবাসার পাত্রকে কেবলই দিয়েছে। পরিস্থিতি, স্থান ও কালের কথা মনে রাখলে নিশ্চয়ই বলা যায় যে, তার ক্ষুদ্র হৃদয়ের সেই দানগুলো ক্ষুদ্র এবং সামান্য ছিল না। দীনা প্রেমাস্পদের কাছ থেকে কখনো কিছু চায় নি, হয়ত কিছু পাবার জন্যে দুঃসহ কোনো প্রত্যাশাও ওর হয় নি।
এই প্রসঙ্গে একটা কথা উল্লেখযোগ্য, এইসব কিশোরীদের মহিমা-ভরা-প্রেম কাহিনী পড়তে পড়তে আমার মনে জেগে উঠেছিল বাংলা সাহিতের চিরকিশোরী অভাগী রতনের কথা। বোধ হয়েছিল, অন্তরের অন্তস্থলে সে যে এদেরই সমগোত্রীয় । তার গভীর আকর্ষণে, তার পরম সারল্যে, অকুন্ঠিত সেবার মধ্যে দিয়ে তার বেহিসেবী আত্মনিবেদনের আগ্রহে। মেগানের মত সেও তার কলকাতায় ফিরতি-মুখী মনিব পোস্টমাস্টারকে জিজ্ঞাসা করেছিল, “দাদাবাবু, আমাকে তোমাদের বাড়ি নিয়ে যাবে?” তার এই প্রশ্নের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছিল এই কামনা যে, সে তার দাদাবাবুব কাছে থাকতে চায় তার সেবা করতে চায়। মাত্র এইটুকুই তার চাওয়া, এই চাওয়ার মধ্যে বেশি কিছু দুরাশা ছিল না।

এ বিষয়ে সন্দেহ নেই, যে কয়জন মহাশিল্পীর সেরা রচনা বইখানিতে সংকলিত হয়েছে, তাঁরা সাহিত্যরসিক বিশ্বমানুষের অন্তরের তৃষ্ণাকে পরম পরিতৃপ্তিতে ভরিয়ে দেবার উদ্দেশেই এই সৃষ্টি কাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।

এই বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে আপনারা একটি ভাষান্তরিত অনুরচন 'বিদেশী কথাসাহিত্যে সপ্ত কিশোরী' -এর বাংলা পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন

No comments:

Post a Comment