শ্রীচৈতন্যের দিব্যজীবন ও অজ্ঞাত তিরোধান পর্ব । বাংলা বইয়ের পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Wednesday, August 19, 2020

শ্রীচৈতন্যের দিব্যজীবন ও অজ্ঞাত তিরোধান পর্ব । বাংলা বইয়ের পিডিএফ


শ্রীচৈতন্যের দিব্যজীবন ও অজ্ঞাত তিরোধান পর্ব । বাংলা বইয়ের পিডিএফ
আলোচনা, বিশ্লেষণ ও অনুবাদ- শ্রীবিষ্ণুপদ পান্ডা
বইয়ের ধরন- অনুসন্ধানমুলক বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ১১৭
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৮এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত

শ্রীচৈতন্যের দিব্যজীবন ও অজ্ঞাত তিরোধান পর্ব


নিবেদন-
জ্ঞানের রাজ্যে শেষ কথা বলে কিছু নেই। সেখানে পুরনো ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন আর নতুন জ্ঞানের সংযোজন চলেছে অহরহ। আমার জীবনের সাত দশকের কিছু বেশি কালসীমার মধ্যে এর বহ, প্রমাণ আমিই পেয়েছি। তাই যে ঘটনাকে গতকাল অভ্রান্ত বলে গ্রহণ করেছিলাম আজ তাকে বর্জন করতে আমার একটুও বাধে না। জঙ্গম মননশীলতার এইটিই ধর্ম। স্থাবর হয়ে পড়লেই সে তার স্বচ্ছতা আর বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।
শ্রীচৈতন্যের জীবনকাহিনী নিয়ে আজও আমাদের উৎসাহের অন্ত নেই। কিন্তু নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক তথ্যের অপ্রতুলতা আর অন্যদিকে ভক্তিবাদী রচনাগুলির অন্তর্গত অলৌকিক কাহিনীর বহুলতা, আমাদের পথে চিরদিনই বাধা হয়ে থেকেছে। তব, এসবের ভেতর থেকেই ঐ দেবোপম যুগ-পরুষটির জীবন সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ আর নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সেগুলির মূল্যায়ন আজও অব্যাহত আছে।...

ভূমিকা-
ডক্টর শ্রীযুক্ত বিষ্ণুপদ পাণ্ডা বাংলা গবেষণাসাহিত্যে অতি সুপরিচিত, তাঁর পরিশ্রম ও পাণ্ডিত্য উড়িষ্যার গবেষক ও বিদগ্ধ পণ্ডিতরাও বিশেষভাবে প্রশংসা করে থাকেন। ড. পাণ্ডা দীর্ঘকাল ভুবনেশবরে বাস করে ওড়িয়া ভাষা প্রায় মাতৃভাষার মতো আয়ত্ত করেছেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হল ওড়িয়া হরফে লেখা বাংলা কাব্য, যেগুলি ভুবনেশ্বর প্রদর্শশালা থেকে পাওয়া গেছে। একদা উড়িষ্যা ও বাংলাদেশ একই শাখায় দুটি ফুলের মতো বিকশিত হয়েছিল। শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনের শেষার্ধ পুরীধামে অতিবাহিত হয়েছে। উড়িষ্যার ধনী অভিজাত, রাজা ও দীনদরিদ্র সকলেই তাঁকে দেবতার মতো ভক্তি করতেন। উড়িষ্যা ও বাংলার ভ্রাতৃত্ববন্ধন তাঁর দ্বারাই দৃঢ়ত্ব লাভ করেছিল। শ্রীজগন্নাথের পুণ্যভূমি নীলাচল বাঙালির শ্রেষ্ঠ তীর্থ। সুতরাং বাংলার সঙ্গে উড়িষ্যার সম্পর্ক অনেক প্রাচীন। অনেক বাঙালি তীর্থদশনে গিয়ে উড়িষ্যায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন, কেউ বা কর্মব্যপদেশে বাস্তু বেধেছেন। অনেক বাঙালি উড়িষ্যায় বসবাস করে ওড়িয়া ভাষাকে মাতৃভাষারপে গ্রহণ করেছেন, কেউ কেউ ওড়িয়া ভাষায় কাব্য রচনা করে ওড়িয়া সাহিত্যকে ঐশ্বর্যশালী করেছেন। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শ্রীযুক্ত অন্নদাশঙ্কর রায় পর্যন্ত বহু বাঙালি ওড়িয়া সাহিত্যের বিকাশে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। রঙ্গলাল উড়িষ্যায় প্রথম সাময়িক পত্র প্রকাশ করেন। 'বিবিধার্থ সংগ্রহে' তিনি ওড়িয়া ভাষা ও সাহিত্য সম্পকে একাধিক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তাঁর 'কাঞ্চীকাবেরী’ প্রাচীন ওড়িয়া কবি মাগুনি দাসের প্রেম-ভক্তি ও ঐতিহাসিক কাব্য অবলম্বনে রচিত। সুতরাং বাংলা ও উড়িষ্যা শুধু প্রতিবেশী নয়, একের সঙ্গে অপরের গভীর আত্মীয়তার সম্পর্ক। ড. শ্রীযুক্ত বিষ্ণপদ পাণ্ডা সেই আত্মীয়তার সূত্রে আরো কয়েকটি সূত্র সংযোজনা করে উভয় ভাষার নৈকট্য সাধন করেছেন।
বক্ষ্যমান পুস্তিকাটিতে ড. পাণ্ডা শ্রীচৈতন্যদেব ও নীলাচলভক্তসম্প্রদায় সম্বন্ধে যে তথ্য উপস্থাপিত করেছেন তার ফলে সমগ্র চৈতন্যজীবনকথাকে নতুন দষ্টিকোণ থেকে দেখা প্রয়োজন। একালে যাকে জীবনী বলা হয়, অর্থাৎ ব্যক্তিবিশেষের বাস্তব জীবনকথা—প্রাচীন ও মধ্যযুগে তাকে বলা হত জীবনচরিত, অর্থাৎ কোনো মহাপুরুষের দিব্যজীবনকথা। বাস্তব জীবন ও দিব্যজীবনের মধ্যে 'বহুত অন্তর'। সুতরাং hagiography থেকে biography-র নিরেট বাস্তব সত্য আশা করা যায় না। তাই মধ্যযুগে বাংলাদেশে সংস্কৃত ও বাংলায় যে সমস্ত চৈতন্য চরিতকাব্য লেখা হয়েছে তাতে প্রতিদিনের বাস্তব ঘটনার বাহুল্য নেই। শ্রীচৈতন্যের ভাবমতি ফোটাতেই গৌড়ীয় ভক্তেরা বেশি উদগ্রীব ছিলেন। নীলাচলে মহাপ্রভুর জীবনের শেষার্ধে অতিবাহিত হয়েছে। উড়িষ্যার সব শ্রেণীর মানুষ তাঁকে ঈশ্বরজ্ঞানে ভক্তি করতেন, শ্রীচৈতন্যদেবও তাঁর ওড়িয়া ভক্তদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। ফলে তাঁর গৌড়ীয় ভক্তেরা অভিমানে পুরীধাম ত্যাগ করে গৌড়ে প্রত্যাবর্তন করেন। এসব কৌতূহলজনক ব্যাপার একালের গবেষকদের তীক্ষ্ম দৃষ্টি তীক্ষ্মতর করে তুলবে। পুরীর ওড়িয়া ভক্ত এবং গৌড়ীয় ভক্তদের সম্পর্ক, বিবাদ, মনোমালিন্যের কারণ ইত্যাদি নিয়ে আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন। সেই আলোচনার দ্বার উন্মোচন করলেন ড. পাণ্ডা।
শ্রীচৈতন্যের সমসাময়িক মাধব পট্টনায়ক নামে চৈতন্যভক্ত ওড়িয়া কৰি মহাপ্রভুকে অতান্ত নিকট থেকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তাঁর সম্পর্কে মাধব দুখানি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, 'চৈতন্যবিলাস’ (১৫১৬ খ্রীঃ অঃ) এবং ‘বৈষ্ণবলীলামৃত (১৫৩৫ খ্রীঃ অঃ)। শ্রীচৈতন্য সম্পর্কিত তথ্যবিচায়, তত্ত্বনির্ণয় ও শ্রীচৈতন্য প্রচারিত সাধ্যসাধনতত্ত্ব সম্পর্কে অবহিত হতে গেলে এই দুখানি ওড়িয়া কাব্য বিশেষ প্রয়োজন। গৌড়ীয় গ্রন্থে যেখানে ফাঁক আছে, এই দুই ওড়িয়া গ্রন্থ অবলম্বন করে সে শুন্যতা পুরিয়ে দেওয়া চলে। তার প্রধানতম আলোচ্য বিষয় হচ্ছে মহাপ্রভুর তিরোধান। বঙ্গীয় প্রামাণিক চৈতন্যজীবনকাব্যে এ-বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। তাঁর মত্যকায়া ত্যাগের ঘটনাটিকে জয়ানন্দ বাস্তব ও স্বাভাবিক ভাবেই বর্ণনা করেছেন, তাই কোনো কোনো ভক্ত জয়ানন্দ-পরিবেশিত তথ্যকে প্রামাণিক বলে মানতে চান না। কিন্তু এই ঘটনাকে ওড়িয়া ভক্তকবি মাধব পট্টনায়ক যেভাবে বর্ণনা করেছেন তাতে শ্রীচৈতন্যের তিরোধানের ঘটনাকে আবার নতুনভাবে পর্যালোচনা প্রয়োজন। এই আলোচনায় ড. পাণ্ডা সমস্ত তথ্য প্রমাণ উপস্থিত করে সমস্যার যুক্তিপূর্ণর সমাধান করতে চেয়েছেন। বলাই বাহুল্য এসব ধর্মীয় ব্যাপারে কখনো ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয় না। কিন্তু যুক্তিকে যদি ভক্তির চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়, তাহলে বিষ্ণবাবুর অভিমত যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখা উচিত। আমাদের বিশ্বাস, তাঁর আলোচনা পণ্ডিত, গবেষক ও ভক্তদের নানা দিক থেকে সচেতন করে তুলবে। সত্যনির্ধারণ গবেষণার মূল উদ্দেশ্য। সেদিক থেকে শ্রীচৈতন্যদেবের শেষজীবন সম্বন্ধে ড. পাণ্ডা কয়েকটি নতুন সমস্যা ও তার সমাধানের সব নির্দেশ করেছেন। বাংলা ও উড়িষ্যার বিদ্বজ্জন এ-বিষয়ে যথেষ্ট কৌতহলী হবেন তাতে সন্দেহ নেই। গ্রন্থটির বহুল প্রচার একান্ত কাম্য।

বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা সংগ্রহ করতে পারেন মহাপ্রভু চৈতন্যের তিরোধান অথবা অন্তর্ধান রহস্যের অনুসন্ধানমুলক বই- 'শ্রীচৈতন্যের দিব্যজীবন ও অজ্ঞাত তিরোধান পর্ব' বাংলা বইয়ের পিডিএফ।

No comments:

Post a Comment