বাংলা দেশের ইতিহাস- রমেশচন্দ্র মজুমদার বাংলা বই পিডিএফ - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Friday, September 27, 2019

বাংলা দেশের ইতিহাস- রমেশচন্দ্র মজুমদার বাংলা বই পিডিএফ


বাংলা দেশের ইতিহাস- রমেশচন্দ্র মজুমদার বাংলা বই পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- বাংলা দেশের ইতিহাস
লেখক- রমেশচন্দ্র মজুমদার
বইয়ের ধরন- গবেষণামুলক ইতিহাস
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ২৮৫
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ২২এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত

'বাংলা দেশের ইতিহাস' লেখকের মতামত-


প্রাচীন ভারতবাসীগণ সাহিত্যের নানা বিভাগে বহু গ্রন্থ প্রণয়ন করিয়াছেন, কিন্তু নিজেদের দেশের অতীত কাহিনী লিপিবদ্ধ করিবার জন্য তাহাদের কোন আগ্রহ বা উৎসাহ ছিল না। পণ্ডিতপ্রবর কহ্লণ রাজতরঙ্গিণী নামক গ্রন্থে কাশ্মীরের ধারাবাহিক ইতিহাস রচনা করিয়াছেন। কিন্তু এই শ্রেণীর আর কোন গ্রন্থ অদ্যাবধি ভারতবর্ষে আবিষ্কৃত হয় নাই। ইহার ফলে ভারতের প্রাচীন যুগের ইতিহাস একরকম বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছিল। উনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় পণ্ডিতগণ ভারতের প্রাচীন লিপি, মুদ্রা ও অন্যান্য ধংসাবশেষ আবিষ্কার করিয়া হিন্দুযুগের ইতিহাস উদ্ধারের সূচনা করেন। কালক্রমে অনেক ভারতবাসীও তাঁহাদের প্রবর্ত্তিত পথে অনুসন্ধান কার্যে অগ্রসর হইয়াছেন। ইহাদের সমবেত চেষ্টার ফলে যে সমুদয় তথ্য আবিষ্কৃত হইযাছে তাহাতে প্রাচীন যুগের ইতিহাসের কাঠামো রচনা করা সম্ভবপর হইয়াছে।
বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাস সম্বন্ধে আমাদের অজ্ঞতা যে কতদুর গভীর ছিল ১৮০৮ খৃষ্টাব্দে ফোর্ট উইলিযম কলেজের অধ্যাপক পণ্ডিত মৃত্যুঞ্জয় শৰ্ম্মা রচিত 'রাজতবঙ্গ' অথবা ‘রাজাবলী’ গ্রন্থ তাহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। বাংলার প্রাচীন ইতিহাস সম্বন্ধে বাঙ্গালী জাতির স্মৃতি ও জনশ্রুতি যে কতদূর বিকৃত হইয়াছিল, এবং পাঁচ ছয় শত বৎসরের মধ্যে বাঙ্গালী জাতির ঐতিহাসিক সূত্র কিরূপে সমূলে ছিন্ন হইয়া গিয়াছিল এই গ্রন্থখানি পডিলেই তাহা বেশ বোঝা যায়।
পরবর্ত্তী একশত বৎসরে পুরাতত্ত্ব আলোচনার ফলে বাংলার প্রাচীন ইতিহাস সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান যে কতখানি অগ্রসর হইযাছিল রমাপ্রসাদ চন্দ প্ৰণীত ৩ 'গৌড়রাজমালা' গ্রন্থখানি তাহার প্রমাণ স্বরূপ গ্রহণ করা যাইতে পারে। এদেশের অনেক বিশেষত প্রাচীনপন্থীগণ পুরাতত্ত্বকে ‘পাথুরে প্রমাণ’ বলিয়া উপহাস অথবা অবজ্ঞা করিয়া থাকেন। কিন্তু প্রাচীন ইতিহাসের উদ্ধারে ইহার মূল্য যে কত বেশী ‘রাজাবলী’র সহিত ‘গৌডরাজমালা’র তুলনা করিলেই তাহা বুঝা যাইবে।
‘গৌডরাজমালা’ আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে লিখিত প্রথম বাংলার ইতিহাস। ১৩১৯ সনে ইহা প্রকাশিত হয়। ইহার দুই বৎসর পরে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যাষ প্রণীত ‘বাঙ্গালার ইতিহাস' প্রকাশিত হয়। নামে ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’ হইলেও ইহা প্রকৃত পক্ষে বাংলা ও মগধের ইতিহাস।
উল্লিখিত দুইখানি গ্রন্থেই কেবলমাত্র রাজনৈতিক ইতিহাস আলোচিত হইয়াছে। বাংলার একখানি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস লিখিবার কল্পনা অনেকবার হইয়াছে। ১৯১২ খৃষ্টাব্দে বাংলার গভর্ণর লর্ড কারমাইকেল ইহার সূত্রপাত করেন, এবং পরবর্তী ত্রিশ বৎসরে আরও দুই একজন এইরূপ চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু ইহা ফলবতী হয় নাই। দীনেশচন্দ্র সেন এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ‘বৃহৎ বঙ্গ’ নামে দুই খণ্ডে সম্পূর্ণ একখানি বৃহৎ গ্রন্থ প্রণয়ন করেন (১৩৪১ সন)। কিন্তু অনেক মূল্যবান তথ্য থাকিলেও এই গ্রন্থ বাংলার ঐতিহাসিক বিবরণ হিসাবে বিদ্বজ্জনের নিকট সমাদর লাভ করে নাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হইতেই সর্বপ্রথমে বাংলার একখানি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস প্রকাশিত হয়। আমার সম্পাদনায় তিন বৎসর হইল ইহার প্রথম খণ্ড বাহির হইয়াছে। ইহাতে হিন্দুযুগের শেষ পর্যন্ত বাংলার ইতিহাস আলোচিত হইয়াছে। এই গ্রন্থ ইংরেজীতে লিখিত। যখন ইহার প্রথম পরিকল্পনা হয় তখন আমার ইচ্ছা ছিল যে ইংরেজী গ্রন্থ বাহির হইবার পরই ইহার একখানি বাংলা অনুবাদ প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এই গ্রন্থ রচনায় বহু বিলম্ব হওয়ার ফলে ইহার প্রকাশের পূর্বেই আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে অবসর গ্রহণ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তৃপক্ষগণ যে সত্বর ইহার বঙ্গানুবাদের কোন ব্যবস্থা করিবেন তাহার কোন সম্ভাবনা দেখা যাইতেছে না। সুতরাং বাংলা ভাষায় বাংলার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাস এবং বাঙ্গালীর ধর্ম, শিল্প ও জীবনযাত্রার অন্যান্য বিভাগের মোটামুটি বিবরণ সম্বলিত একখানি ক্ষুদ্র গ্রন্থের বিশেষ প্রয়োজন অনুভব করিয়া এই ইতিহাস লিখিতে প্রবৃত্ত হই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে প্রকাশিত বাংলার ইতিহাস যে এই গ্রন্থের আদর্শ ও প্রধান উপাদান তাহা বলাই বাহুল্য।
এই গ্রন্থ সাধারণ বাঙ্গালী পাঠকের জন্য, সুতরাং ইহাতে যুক্তি তর্ক দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন মতের নিরাস ও প্রমাণপঞ্জী-যুক্ত পাদটীকা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করিয়াছি। যাহারা এই সমুদয় জানিতে চাহেন তাহারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে প্রকাশিত ইংরেজী গ্রন্থখানি পাঠ করিতে পারেন। ইংরেজী ভাষায় অনভিজ্ঞ পাঠকের পক্ষে এই সমুদয় অনাবশ্যক, কারণ এ সম্বন্ধে প্রবন্ধ ও গ্রন্থগুলি প্রায় সবই ইংরেজী ভাষায় লিখিত।
হিন্দুযুগের বাংলাদেশ সম্বন্ধে যে সমুদয় তথ্য এ যাবৎ আবিস্কৃত হইয়াছে তাহারই সারমৰ্ম্ম সংক্ষিপ্ত আকারে বাঙ্গালী পাঠকের নিকট উপস্থিত করিতেছি যাহারা ইংরেজী ইতিহাসখানি পাঠ করিয়াছেন বা করিবে তাহাদের পক্ষে এই গ্রন্থ সম্পূর্ণ অনাবশ্যক। কিন্তু যাহাদের ঐ গ্রন্থ পাঠের সুযোগ সুবিধা অথবা সময় নাই, তাহারা ইহা পাঠ করিলে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধে কতকটা ধারণা করিতে পারিবেন। অবশ্য এই ইতিহাসের অতি সামান্যই আমরা জানি। কিন্তু এই গ্রন্থ পাঠে যদি বাঙ্গালীর মনে দেশের প্রাচীন গৌরব সম্বন্ধে ক্ষীণ ধারণাও জন্মে এবং বাঙ্গালী জাতির অতীত ইতিহাস জানিবার জন্য কৌতুহল ও আগ্রহ বৃদ্ধি পায় তাহা হইলেই আমার শ্রম সার্থক মনে করিব।- শ্রীরমেশচন্দ্র মজুমদার

বাংলা দেশের ইতিহাস- রমেশচন্দ্র মজুমদার

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এই পোষ্ট হইতে একটি গবেষণামুলক ইতিহাস বই- 'বাংলা দেশের ইতিহাস- রমেশচন্দ্র মজুমদার'-এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment