পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস-নিমাই ভট্টচার্য বাংলা প্রেমের উপন্যাস - বাংলা বই এর pdf ডাউনলোড-Bangla Digital Boi Pdf

Latest

Friday, July 27, 2018

পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস-নিমাই ভট্টচার্য বাংলা প্রেমের উপন্যাস


পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস-নিমাই ভট্টচার্য বাংলা প্রেমের উপন্যাস পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- 'পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস'
লেখক- নিমাই ভট্টচার্য
বইয়ের ধরন- প্রেমের গল্প
মোট পৃষ্টা আছে- ৪৬৪
পিডিএফ সাইজ- ১৩এমবি
জলছাপমুক্ত, ঝকঝকে প্রিন্ট
দক্ষ লেখক নিমাই ভট্টচার্যের যে অসাধারন পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস এই বইটিতে রয়েছে, সেগুলি হল-
এ-ডি-সি
ডিপ্লোম্যাট
সোনালী
প্রিয়বরেষু
ব্যাচেলার

গল্পের নমুনা-
এ-ডি-সি
বিরাট আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ব্যাক ব্রাশ করতে করতে ক্যাপ্টেন রায় গুনগুন করে সুর আওড়াচ্ছিলেন, এ মণিহার আমায় নাহি সাজে।'
কোন মণিহার? আমি অফিসার হয়ে এই এ-ডি-সি-র চাকরি? নাকি মণিকা?
বােধহয় মনে মনেই নিজেকে প্রশ্ন করেন ক্যাপ্টেন রায়। মুখে কিছু বলেন না, শুধু ঠোটের কোণায় মিষ্টি হাসির রেখা ফুটে ওঠে। সামনের আয়নায় দেখে চোখ দুটো কেমন যে রোমান্টিক হয়ে নীরব ভাষায় কত কথা বলে। ব্যাক ব্রাশ করতে করতেই একবার হাতের ঘড়ি দেখে নেন। না, ঠিক আছে। এখনও পঁচিশ মিনিট হাতে আছে।। মুখখানা একটু এদিক ওদিক ঘুরিয়ে দেখে নেন। ঠিক আছে তো? হ্যা, হ্যা, বেশ দেখাচ্ছে। সকাল বেলায় হট বাথ নেবার পর শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনটাও বেশ সতেজ হয়ে ওঠে। তারপর। ইউনিফর্ম পরলে বেশ লাগে। ব্রাশটা নামিয়ে রাখলেন। এবার একটু পিছিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেকে আবার ভালোভাবে দেখে নেন। 'ও-কে!' | আবার শুনগুন করে কি যেন একটা সুর আওড়াতে আওড়াতে ক্যাপ্টেন রায় ওপাশে একটু এগিয়ে গিয়ে একটা সেন্টার টেবিল থেকে আর্ম ব্যাচটা তুলে নিলেন। স্যাফরন কলারের ব্যাচের মাঝে ভুলে যাওয়া অতীত ভারতের অশোকস্তম্ভ। ওটা এখন ভারতের প্রতীক। আর্ম ব্যাচের ওই অশোক পিলারের প্রতিকৃতি দেখে মুচকি হাসেন ক্যাপ্টেন রায়। হাসবেন না? মনে মনে ভাবেন যদি কোনো মাস্টারমশাই ধরনের লোক জিজ্ঞাসা করেন, 'ওহে ছোকরা, বৈষ্ণবদের তিলক কাটার মতো সর্বাঙ্গে তো অশোকস্তম্ভের ছড়াছড়ি! বলতে পার সম্রাট অশোক কোথায় জন্মেছিলেন? কবে জন্মেছিলেন? এই অশোকস্তম্ভ কোথায় পাওয়া গিয়েছিল?
এসব কিছু জানে না সে। হয়তো স্বয়ং গভর্নরই...। চাকরি করতে কি জ্ঞান বুদ্ধির দরকার হয় ? তাহলে তো প্রায় কারুরই চাকরি বাকরি করা হতো না। ইউনিভার্সিটির একটা চোথা সার্টিফিকেট হলেই সরকারি চাকরি পাওয়া যায়। বিদ্বান, বুদ্ধিমান বা কর্তব্যপরায়ণ হলে চাকরিতে বিভ্রাট হয়।
এই সাত সকালে যত সব আজেবাজে চিন্তা! ক্যাপ্টেন রায় আর্ম ব্যাচটি তুলে হাতে পরেন। বেশ লাগে দেখতে।

গল্পের নমুনা-
ডিপ্লোম্যাট
হে দুর হইতে দূর, হে নিকটতম,
যেথায় নিকট তুমি সেথা তুমি মম ;
যেথায় সুদূরে তুমি সেথা আমি তব।
কর্মজীবন আর সংসারজীবনের দুটি গোলপোস্টের মাঝখানে দায়িত্ব কর্তব্যের ফুটবল পেটাতে। পেটাতেই অধিকাংশ মধ্যবিত্তের ভবলীলা সাঙ্গ হয়। কিছু মানুষের বিচরণক্ষেত্র আরো বিস্তৃত, আরো রঙিন। কিছুটা বিস্তৃত, কিছুটা রঙিন হওয়া সত্ত্বেও সমাজসংসারে এদের নোঙর বাঁধা। চৌরঙ্গির অলিতে-গলিতে ঘোরাঘুরি বা সন্ধ্যার অন্ধকারে মিউজিয়ামের পাশে লুকিয়ে রিকশা। চড়ে যৌবনের অলকানন্দা-অমরাবতী ভ্রমণের মেয়াদ কতটুকু, মীর্জাপুর বা রাসবিহারী। অ্যাভিন্যর ঘরবাড়ি ছেড়ে বোম্বে সেলস অফিসের মিস সোন্ধিকে নিয়ে মেরিন ড্রাইভ বা চার্চ গেটের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করারই বা স্থায়িত্ব কতক্ষণ?
দিনের আলো ফুরিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে লুকিয়ে-চুরিয়ে স্বাধীনতা উপভোগের পর্ব শেষ। হয়। সূর্যাস্তের পর সব পাখি ফিরে আসে ঘরে। শনি-মঙ্গল-রাহুর সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে। খেলতেই একদিন সব থেমে যায় প্রায় সবার। ডিপ্লোম্যাট-কুটনীতিবিদরা নিশ্চয়ই স্বতন্ত্র। মীর্জাপুর বা রাসবিহারী অ্যাভিনিউর ছেলে হয়েও সারা দুনিয়ায় তাদের বিচরণ, তাদের সংসার। বিশ্বসংসারের কত রঙ-বেরঙের নারী-পুরুষের সঙ্গে তাদের লেনদেন। দেশে-দেশে ছড়িয়ে থাকে এঁদের স্মৃতি, প্রাণের মানুষ, মনের টুকরো । টুকরো স্বপ্ন।

গল্পের নমুনা-
সোনালী
খোকন ওকে দেখেই থমকে দাঁড়িয়ে বলল, কী আশ্চর্য! তুই শাড়ি পরেছিস!
সোনালী ওকে প্রণাম করে সুটকেশটা হাতে নিয়ে বলল, তুমি কি ভেবেছ আমি চিরকালই ছোট থাকব?
খোকন ড্রইংরুম পার হয়ে ভিতরের দিকে যেতে যেতে বলল, না, না, তুই মস্ত বড় হয়েছিস। সোনালী সঙ্গে সঙ্গে খোকনের মার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল, আমি বড় হইনি বড়মা? খোকনের মা হাসতে হাসতে বললেন, হয়েছিস বৈকি! শুনলে তো থোকনা ?
এখন আমি এসে গেছি। এখন আর বড়মা বা জ্যাঠামণিকে তেল দিয়ে লাভ নেই। এখন আমাকেই তেল দে।
সোনালী ঘরের একপাশে সুটকেশটা রেখে রান্নাঘরের দিকে যেতে যেতে নির্বিকার হয়ে বলল, আমি কাউকে তেল দিই না।
বাজে ফড় ফড় না করে চা দে।
সোনালী রান্নাঘরে চলে যেতেই খোকন বলল, দেখো মা, যত দিন যাচ্ছে সোনালীকে দেখতে তত সুন্দর হচ্ছে।
ওকে দেখে তো কেউ ভাবতেই পারে না ও আমাদের মেয়ে না। খোকন হেসে বলল, তুমি ওকে যা সাজিয়ে-গুজিয়ে রাখো...
বাজে বকিস না। ওকে দেখতেই ভালো। একটা সাধারণ শাড়ি-ব্লাউজ পরলেও ওকে দেখতে ভালো লাগে।
খোকন মাকে জড়িয়ে ধরে বলল, তুমি যাই বলো মা, তুমি ওকে আদর দিয়ে দিয়েই... তুই বাড়িতে এসেই আমার পিছনে লাগবি না। সোনালী চা নিয়ে ঘরে ঢুকতে ঢুকতেই বলল, তোমার স্বভাব আর কোনোদিন বদলাবে খোকন। ঠাকুমা-দিদিমার মতন কথা বলবি তো এক থাপ্পড় খাবি। আমাকে থাপ্পড় মারলে তুমিও বড়মার কাছে থাপ্পড় খাবে।
খোকন চায়ের কাপ হাতে নিতে নিতে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল, সত্যি, বাবা-মা তোকে আদর দিয়ে দিয়ে এমন মাথায় চড়িয়েছেন যে এরপর তোকে সামলানোই দায় হবে।

গল্পের নমুনা-
প্রিয়বরেষু
..অনেক ভাবনা চিন্তা করেও কি নিয়ে উপন্যাস লিখব, তা কিছুতেই ঠিক করতে পারলাম না। একটা পুরনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে টেবিলের নীচের ড্রয়ারে অপ্রত্যাশিতভাবে আমার এক দিদির অনেকগুলো চিঠি পেলাম। চিঠিগুলো পড়তে পড়তে মনে হল, এই চিঠিগুলো ছাপিয়ে দিলেই একটা উপন্যাস হতে পারে। | আমার এই দিদির নাম কবিতা চৌধুরী। থাকেন নিউইয়র্কে। চাকরি করেন ইউনাইটেড নেশানস্-এ। ইউনাইটেড নেশানস্-এর স্পেশ্যাল কমিটির কাজে দিদিকে ঘুরতে হয় নানা দেশে। ইউনাইটেড নেশনস্-এর ক্যাফেটেরিয়ায় দিদির সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। তারপর আস্তে আস্তে দুজনে দুজনের কাছে এসেছি। খুব কাছে। আজ বোধহয় দিদি আমার চাইতে কাউকে বেশি ভালোবাসেন না। বিশ্বাসও করেন না। আমি দিদিকে শুধু শুধু ভালোবাসি না, শ্রদ্ধা করি। দিদি আমার সত্যিই অনন্যা। দিদি যখন যেখানেই থাকুন না কেন, আমাকে চিঠি লিখবেনই। কখনও ছোট। নিদেনপক্ষে পিকচার পোস্টকার্ডের পিছনে লিখবেন, ঘণ্টাখানেক সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে কাটিয়ে কলম্বো হয়ে কায়রো যাচ্ছি। এখানে পৌঁছে চিঠি দেব। দিদি বলেন, তোমাকে চিঠি লিখতে বসলেই মনে হয়, তুমি আমার সামনে বসে বসে অথবা আমার বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমার কথা শুনছ। তাই তোমাকে চিঠি না লিখে পারি না। আমি অবশ্য খুব কমই চিঠি লিখি। মাঝে মাঝে আমরা দু'ভাইবোনে ভারি মজা করি। দিদি ব্যস্ততার জন্য চিঠি লিখতে না পারলে কয়েকদিনের ডায়েরির কয়েকটা পাতা ছিড়ে দিদিকে পাঠিয়ে দিই। | যাই হোক দিদির জীবনটা বড়ই বিচিত্র। এ সংসারে সাধারণ মানুষ যা কিছু | কামনা করে, সেসব কিছুই দিদির আছে। দিদির বিদ্যা-বুদ্ধি-রূপ-যৌবন যে কোনো মানুষকে মুগ্ধ করবেই। অর্থ প্রতিপত্তির অভাব নেই। অভাব নেই আত্মীয়-বন্ধুর। এত কিছু পেয়েও দিদির অনেক জ্বালা, অনেক দুঃখ। এই পৃথিবীর বহু মানুষের বিরুদ্ধে দিদির অনেক অভিমান, অনেক অভিযোগ। দিদিকে হঠাৎ দেখলে, আলাপ করলে কিছু বুঝা যায় না ; জানা যায় না দিলি আমার একটা সুপ্ত আগ্নেয়গিরি।আর বেশি লিখতে চাই না। দিদির চিঠি আর ডায়েরির ছেড়া পাতাগুলো পড়লেই সবকিছু জানা যাবে। দিলিয় নাম ঠিকানা আর অন্যান্য পাত্র-মিত্রের নাম-ঠিকানা বদলে দিয়েছি। তা নয়তো আমাদের দেশের অনেক গুণী-জ্ঞানী ও সম্মানিত ব্যক্তিরা বড়ই বিপদে পড়বেন।...

গল্পের নমুনা-
ব্যাচেলার
অক্সফোর্ড স্ট্রিটে কিছু কেনাকাটা করে রাস্তা পার হয়ে বন্ড স্ট্রিট টিউব স্টেশনে ঢুকতে গিয়েই মুখোমুখি দেখা। দুজনেই প্রায় একসঙ্গে বললাম, 'আপনি?
দেবব্রত হাসতে হাসতে বললো, আমি তো বহুদিনই এখানে। আপনি কবে এলেন?' ‘প্রায় দু'সপ্তাহ হতে চললো। এবার তো ফেরার পালা। ‘সে কি? এত তাড়াতাড়ি কোথায় যাবেন?' ‘ফেরার পথে কয়েক জায়গায় স্টপওভার করব বলে পরশুই রওনা হচ্ছি।
অজস্র যাত্রী আসা-যাওয়া করছেন। দেবব্রত আমার হাত ধরে একটু পাশে সরে গিয়ে বললো, পরশু যাওয়া হচ্ছে না।' ‘একটু আগেই রিজার্ভেশন করে এলাম।
“দ্যাটস নাথিং। ক্যানসেল করে দিলেই হবে। তারপর হাসতে হাসতে বললো, 'এতকাল পরে দেখা হলো আর আমার হাতের রান্না না খাইয়েই ছাড়ব?’
আমি বললাম, “খেলে রঞ্জনার হাতের রান্নাই খাব।' রঞ্জনা তো এখানে আসেনি। ও দিল্লিতেই...' তাই নাকি? ‘হ্যা।'
আমার হাতে টুকিটাকি কয়েকটা প্যাকেট। তাছাড়া বন্ড স্ট্রিট-টিউব স্টেশনে দাঁড়িয়ে কথা বলাও অসম্ভব। দেবব্রত জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় যাচ্ছেন?'
‘হোটেলে। ‘কোনো হোটেলে? সেই স্ট্রান্ড...' ‘হ্যা, ঠিকই ধরেছেন। সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাসা করলাম, “হোটেলে আসবেন?” আপনি থাকবেন? ‘থাকব। আজ আর কোথাও বেরুচ্ছি না।'
দেবব্রত হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করল, ‘সেকি ? লন্ডনে এসে সন্ধেবেলা হোটেলে শুয়ে কাটাবেন?
‘কি করব? কদিন এত পরিশ্রম করতে হয়েছে যে আজ আর একটু রেস্ট না নিয়ে পারছি না। ‘কোনো পুরনো বন্ধুর বাড়ি নেমন্তন্ন নেই? ‘ছিল কিন্তু তাকে বললাম কাল যাব।

পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস-নিমাই ভট্টচার্য

উপরোক্ত বাংলা বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, এই পোষ্ট হইতে উপরোক্ত প্রেমের উপন্যাসগুলি - 'পাঁচটি রোমান্টিক উপন্যাস-নিমাই ভট্টচার্য' -এর পিডিএফ সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

No comments:

Post a Comment