পাকা আমি ও কাঁচা আমি-বাবাঠাকুর, পিডিএফ
ডিজিটাল বইয়ের নাম- পাকা আমি ও কাঁচা আমি
লেখক- শ্রী শ্রীবাবাঠাকুর
বইয়ের ধরন- দর্শন, আধ্যাত্মিক বই
ফাইলের ধরন- পিডিএফ
এই বইতে মোট পৃষ্টা আছে- ৪৬৯
ডিজিটাল বইয়ের সাইজ- ৪০এমবি
প্রিন্ট খুব ভালো, জলছাপ মুক্ত
আমিতত্ত্বের সরলভাষ্য প্রজ্ঞানপুরুষ শ্ৰীশ্ৰীবাবাঠাকুরের গ্রন্থ পাকা আমি ও কাচা আমি। বস্তুত এটি নয়াদিল্লি চিত্তরঞ্জনপার্কের কালীবাড়িতে কয়েকটি সন্ধ্যায় প্রদত্ত প্রজ্ঞানপুরুষের ভাষণসার যোলটি অধ্যায়ে সংকলিত হয়েছে। যেহেতু আমিতত্ত্বের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার বিশ্লেষণ ও সমাধানের সংকলন ও সংগ্ৰন্থন এটি, তাই এই ষোলটি অধ্যায় ষোলটি বিচার হিসাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
আমিতত্ত্ব খুবইগভীরও তাৎপর্যপূর্ণ—বিশেষত সর্বসাধারণের কাছে এর স্বরূপ উদঘাটন করতে গেলে অনেক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে সরলভাবে এর অন্তর্নিহিত সত্যটি প্রকাশ করতে হয়। যুগে যুগে এই তত্ত্বের ওপর আলোচনা হয়েছে। ঋষি, দার্শনিক ও ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষদেরআলোচনা, বিচার, বিশ্লেষণঅবশ্যই নানাভঙ্গিমায় শাস্ত্রের পাতায় লিপিবদ্ধ আছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ঋষি-দৃষ্টিতে ‘আমিতত্ত্ব প্রতিভাত হয়েছে যার ফলশ্রুতি একাধিক কবিতায় ও প্রবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের কাছে এই তত্ত্ব কবিতা, প্রবন্ধ বা শাস্ত্রব্যাখ্যায় সুবোধ্য হয় না, এর জন্য চাই আত্মজ্ঞ পুরুষের সাবলীল ভাষণের শ্রবণ ও তার মনন। দিল্লির কালীবাড়িতে প্রদত্ত স্বানুভবদেব শ্রীশ্রীবাবাঠাকুরের এই ভাষণমালা শ্রবণ উপস্থিত শ্রোতৃবৃন্দের ছিল বিরল অভিজ্ঞতা। আপামর জনসাধারণের কাছে পৌছে দিতে যোলটি বিচারের মধ্য দিয়ে এই গ্রন্থের প্রকাশনা।
বোধসত্তা আমি নানারূপ বহিপ্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইন্দ্রিয় মন ও প্রাণের মাধ্যমে দেহবুদ্ধির ক্রিয়া নিম্পন্ন করায়। তখন বোধসত্তা চলে যায় পশ্চাতে কিন্তু এর উন্মোচন না হলে ‘আমি’-রস্বরূপ প্রকাশ হয় না, তাই এর বিশ্লেষণ প্রয়োজন—প্রথম বিচার’-এ এই বিজ্ঞানটি আলোচিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রজ্ঞানপুরুষ বলছেন—'প্রত্যেকের ভেতরে দুটি 'আমি’আছে, একটি স্কুল-বাস্তবকে নিয়ে মেতে আছে আর 'আমার আমার’করছে, অন্যটি শুদ্ধচিদানন্দস্বরূপ আত্মা।' দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বোধ, চৈতন্য, জ্ঞান। শ্ৰীশ্ৰীবাবাঠাকুর'এর সম্বন্ধে বলছেন, 'I exists eternally, I is the I of all other I's'. মানুষ সংসারজীবনে আমারবোধ দিয়ে একটা গণ্ডি বানিয়ে নেয়, কিন্তু আমি কথাটি হল আমিবোধ। আবার যখন আমার আর আমি-র পৃথক কোনও ব্যবহার নেই, তখনই তা পরমাত্মা।
বোধসত্তা আমি বা পাকা আমির সত্য পরিচয় জানতে তা উপলব্ধি করতে হবে-এর বিজ্ঞান উর্ধ্বতন মানসচেতনার বিজ্ঞানের প্রথম পর্যায়। এই বিজ্ঞান বলতে গিয়ে শ্ৰীশ্ৰীবাবাঠাকুর স্কুল সূক্ষ্ম, দেহ-প্ৰাণ ইত্যাদি অনেক তত্ত্বের অবতারণা করেছেন। সুন্দর করে বলেছেন, ‘জীবভাব হল self hypnotized আত্মা'। জীবভাবেই ক্রিয়াশীলতা থাকে। দেহ প্রাণের আশ্রয় আর প্রাণ ও বায়ু ক্রিয়াশীল হয় মনের নির্দেশে। বায়ু, বৃত্তি ইত্যাদি নানাবিধ তত্ত্বের তিনি সংক্ষিপ্ত পরিচ্ছন্ন আলোচনা করে স্কুলদেহও সুক্ষ্মদেহের কথা এনেছেন, বলেছেন কারণদেহের কথা—সর্বোপরি দেহোহপি দেহাতীত। জীবের জীবনের উত্তরণের সূত্রও দিয়েছেন—প্রথমে অজ্ঞান, তারপর জ্ঞানাভাস, তারপর বিজ্ঞান তার ওপরে প্রজ্ঞান। তিনি ঘঘাষণা করেছেন—তুমি দেশকাল কার্যকারণের অতীত, জন্ম-মৃত্যু জরা-ব্যাধির অতীত স্বমহিমায় বিরাজ করছ; রাজা হয়ে ভিখারি হয়ে ঘুরে বেড়াবে কেন।
তৃতীয় বিচার কেন্দ্রকে নিয়ে যা তুরীয়তে পৌছোবার আগের সোপান। শ্ৰীশ্ৰীবাবাঠাকুরের চারের সূত্রে এটি অবশ্যই তৃতীয়। এর বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি সংসারের কথা এনেছেন— তার মতে যা হচ্ছে স্বকৃত চিন্তা ও চর্চার সমষ্টিগত ফল। এই সংসারে থেকে বিষয়ভোগের মধ্যে কখনও অখণ্ড সুখ শান্তি ও অমৃত লাভ হয় না। 'পরমাত্মা পরমব্রহ্মসনাতন আমিময় বোধের কেন্দ্রে রয়েছেন-এই আমি আমি-র জন্যই শুদ্ধ-আমি সেই আত্মস্বরূপ'। এই আমি ছাড়া যাকিছু তৈরি করবে সবই imperfect। উঠে এসেছে অবিদ্যাশক্তি ও বিদ্যাশক্তির কথাও। বলছেন অবিদ্যা কল্পনাই—'ignorance is your imagination', আর বিদ্যাশক্তি সমতাপ্রধান তা কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত। পাকা আমি কী করে হয় বলতে গিয়ে বলেছেন স্বভাবের কাচা আমি স্ববোধের পাকা আমির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাকা আমি হয়ে ওঠে।
আলোচ্য গ্রন্থের বিষয়বস্তু হল ষোলো দিনের ভাষণের সংকলন। ২০০১ সালে ৫, ৬, ৭ নভেম্বর এবং ২৬, ২৭, ২৮, ২৯ নভেম্বর প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ভাষণ হয় নিউ দিল্লি চিত্তরঞ্জন পার্ক কালীমন্দির নেতাজি সুভাষ হলে। এই হলেই তৃতীয় পর্যায়ের ভাষণ হয় ১৯, ২০, ২১ ডিসেম্বর পর পর তিন দিন। চতুর্থ পর্যায়ের ভাষণ হয় ২৬, ২৭, ২৮ ডিসেম্বর ২০০১ পর পর তিন দিন এবং পঞ্চম পর্যায়ের ভাষণ হয় ১৬, ১৭, ১৮ জানুয়ারি ২০০২, পর পর তিন দিন। প্রথম পর্যায়ের পর পর তিন দিনের ভাষণ হল যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিচারের বিষয়বস্তু। দ্বিতীয় পর্যায়ের পর পর চার দিনের ভাষণ অনুরূপক্রমে চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম বিচারের বিষয়বস্তু। অনুরূপক্রমে তৃতীয় পর্যায়ের পর পর তিন দিনের ভাষণ হল অষ্টম, নবম ও দশম বিচারের বিষয়বস্তু। সেইমতো চতুর্থ পর্যায়ের পর পর তিন দিনের ভাষণ হল একাদশ, দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ বিচারের বিষয়বস্তু। তদনুরূপ পঞ্চম পর্যায়ের পর পর তিন দিনের ভাষণ হল চতুর্দশ, পঞ্চদশ ও ষোড়শ বিচারের বিষয়বস্তু। যোলোটি বিচারের মাধ্যমে ব্রহ্মত্ম পরমতত্ত্ব অদ্বয় অহংদেব পুরুষোত্তম পাকা আমি-র স্বানুভবসিদ্ধ বিজ্ঞান অভিনব ভঙ্গিমায় ব্যক্ত করা হয়েছে।
এই পোষ্ট হইতে আপনারা বাবাঠাকুর-এর অসাধারণ আধ্যাত্মিক জ্ঞান পরিপূর্ণ বইটির পিডিএফ সংগ্রহ করতে পারবেন।
বইটির পিডিএফ ফাইল সংগ্রহ করুন অথবা অনলাইনে পড়ুন
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা সংগ্রহ করতে পারেন- 'পাকা আমি ও কাঁচা আমি- শ্রী শ্রীবাবাঠাকুর' বাংলা বইয়ের পিডিএফ।
No comments:
Post a Comment